Advertisement
E-Paper

বেকসুর মেট্রো, রিপোর্টে ক্ষুব্ধ সজলের পরিবার

রেলওয়ে সেফটি কমিশনার ওই দুর্ঘটনায় মেট্রোর দোষ খুঁজে না পেলেও তাঁর কিছু কিছু সুপারিশকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদাদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৭
মেট্রোর দরজায় সজলবাবুর আটকে থাকার সেই সিসিটিভি ফুটেজ।

মেট্রোর দরজায় সজলবাবুর আটকে থাকার সেই সিসিটিভি ফুটেজ।

মাস দু’য়েক আগে পার্ক স্ট্রিট স্টেশনে ট্রেনের দরজায় হাত আটকে সজল কাঞ্জিলালের মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু সেই ঘটনায় মেট্রো দায়ী নয় বলেই তদন্ত রিপোর্টে জানিয়েছেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার জনককুমার গর্গ। যে রিপোর্টকে একতরফা বলে দাবি করেছেন সজলবাবুর পরিবার। এমনকি, ওই রিপোর্ট নিয়ে তাঁরা আদালত এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হতে চান।

রেলওয়ে সেফটি কমিশনার ওই দুর্ঘটনায় মেট্রোর দোষ খুঁজে না পেলেও তাঁর কিছু কিছু সুপারিশকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কমিশনার তাঁর রিপোর্টে মেট্রোর দরজার সেন্সর বা রিলের সক্রিয় হওয়ার পরিসর ১৫ মিলিমিটার থেকে প্রথমে ১০ মিলিমিটার এবং পরে তা ধাপে ধাপে ৫ মিলিমিটারের মধ্যে নামিয়ে আনতে বলেছেন। যাতে দরজা বন্ধের সময়ে সহজেই কোনও বস্তু সেন্সরের নজরে চলে আসে।

সূত্রের খবর, চেন্নাই থেকে আসা নতুন এসি রেকে দরজা বন্ধের সময়ে যাত্রীদের আঘাত লাগা ঠেকাতে দরজায় রবারের আস্তরণ মোটা করা হয়েছিল। সেন্সরের সক্রিয় হওয়ার পরিসরও ১৫ মিলিমিটার থেকে বাড়িয়ে ১৯ মিলিমিটার করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ১৯ মিলিমিটারের কম পুরু কোনও বস্তু দরজায় আটকালে তা সেন্সরে ধরা পড়বে না। নতুন এসি রেকটি ছাড়া অন্যান্য এসি রেকে ওই পরিসর ১৫ মিলিমিটারের। তা কমিয়ে ৫ মিলিমিটারের মধ্যে নামানোর সুপারিশ করা হয়েছে। যাতে সরু কোনও জিনিস আটকালেও মেট্রোর দরজা খুলে যায়।

এ ছাড়াও কমিশনারের সুপারিশে মেট্রোর দরজা বন্ধের সময়ে অ্যালার্মের শব্দের তীব্রতা বাড়ানো, স্টেশনে যাত্রীদের ওঠানামার উপরে নজরদারি, এমনকি প্রয়োজনে গার্ড যাতে ব্রেক কষে ট্রেন থামাতে পারেন— সে সবের বিষয়েও উল্লেখ করা আছে।

পাশাপাশি মেট্রোর কামরার দু’দিকে বসানো থার্ড রেল কারেন্ট কালেক্টরে (টিআরসিসি) বৈদ্যুতিক আইসোলেটর বসানোর সুপারিশ করা হয়েছে। যাতে এক দিকের টিআরসিসি সক্রিয় থাকলে অন্য দিকের টিআরসিসির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা যায়। পার্ক স্ট্রিটে এসি মেট্রোর টিআরসিসির উপরে পড়ে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান সজলবাবু।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, দরজা বন্ধ হওয়ার পরে হাতের আঙুল দিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করেন ৬৬ বছরের সজলবাবু। দরজা খুলতে না পারায় তিনি মেট্রোর পাদানিতে উঠে পড়েন। পরে সেখান থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের তদন্তে মোট ২১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তার মধ্যে ২০ জন রেলেরই কর্মী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কোনও যাত্রী বার বার আবেদন জানানো সত্ত্বেও সাক্ষ্য দিতে আসেননি দাবি মেট্রোর। সজলবাবুর বোনের স্বামী সুব্রতকুমার দাস রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের রিপোর্টকে একতরফা বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই রিপোর্ট ন্যায্য নয়। চালক, মোটরম্যান এবং আরপিএফ কর্মীদের চোখ এড়িয়ে মেট্রো ছুটল কী করে? আমরা পুরো রিপোর্ট দেখে প্রয়োজনে আদালতে যাব। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাব।’’

মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য রিপোর্ট নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।

Death Kolkata Metro Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy