ক্ষোভ: প্রিজন ভ্যানে উত্তেজিত দমদম জেলের বিচারাধীন বন্দিরা। মঙ্গলবার, বারাসত আদালত চত্বরে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
বন্দি-সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বুঝেও কর্তব্যরত কারারক্ষীরা ঠিক সময়ে ‘বিপদঘণ্টি’ বাজাতে পারেননি। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে না পারায় সময় মতো তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি দমদম জেলের দু’নম্বর বাড়ির ওয়ার্ডেন। কারা দফতরের প্রাথমিক তদন্তে, এমন তথ্যই উঠে এসেছে। কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওখানে কর্তব্যরত ওয়ার্ডেন ও কারারক্ষীদের গাফিলতি যে আছে, তা তদন্তে স্পষ্ট। তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’
দমদম জেলের সংঘর্ষ কী কারণে ঘটল, তা কারা দফতরের কাছে সবিস্তারে জানতে চাইল নবান্ন। মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলেছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। কারা দফতর সূত্রে খবর, রিপোর্টে ঘটনার দায় চাপানো হচ্ছে কর্তব্যরত কারারক্ষী ও ওয়ার্ডেনদের উপরে। পাশাপাশি, কোন কোন বন্দির মোবাইল উদ্ধারকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের সূত্রপাত, তা-ও চিহ্নিত করছে কারা দফতর।
মঙ্গলবার দমদম জেলে বিচারাধীন বন্দিদের থেকে সাজাপ্রাপ্ত কয়েক জন বন্দি মোবাইল উদ্ধার করতে গেলে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিচারাধীন বন্দিদের সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের প্রথমে বচসা, পরে মারপিট শুরু হয়। প্রায় শ’তিনেক বন্দির মধ্যে জখম হন অন্তত ১২ জন। কারা দফতর সূত্রের খবর, এক জন ছাড়া বাকি সব বন্দিই এখন ভাল আছেন। এক জন বন্দির অবস্থা এখনও গুরুতর। তাঁর বুকে-পিঠে চোট রয়েছে।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলির একাংশের অভিযোগ, বিচারাধীন বন্দিরা সময় মতো বিচারের দাবিতে যে অনশন শুরু করেছিলেন, তা ভাঙতেই পরিকল্পিত ভাবে এটা করা হয়েছে। খাবারের মান নিয়ে বিচারাধীন বন্দিরা যে অভিযোগ করছেন, তা-ও কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ। এ দিন রাজ্যের মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর প্রতিনিধিরা জেলে গেলেও বন্দিদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সংগঠনের পক্ষে রণজিৎ শূর বলেন, ‘‘জেলের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। অনশনও চলছে। জেলের খাবার খাওয়ার মতো নয়। জলও কিনে খেতে হয়।’’ মঙ্গলবার অনেক বন্দি মাথায় চোট পেলেও তা কর্তৃপক্ষ চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন রণজিৎবাবু। জেল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy