Advertisement
E-Paper

যাদবপুরের ‘নিগৃহীত’ ছাত্রকে ছাড়া হল হাসপাতাল থেকে, বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেল পরিবার

যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ‘ছাত্র নিগ্রহের’ অভিযোগ উঠেছে। চুরি সন্দেহে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক পড়ুয়াকে ‘হেনস্থা’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৯:৪০

—প্রতীকী চিত্র।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিগৃহীত’ ছাত্রকে। হাসপাতাল থেকে তাঁকে নিয়ে গিয়েছে তাঁর পরিবারের লোকেরা।

যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ‘ছাত্র নিগ্রহের’ অভিযোগ উঠেছে। চুরি সন্দেহে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক পড়ুয়াকে ‘হেনস্থা’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, বুধবার রাতের ওই ঘটনার পর ‘নিগৃহীত’ পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। রাতেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ তাঁকে ছাড়া হয় হাসপাতাল থেকে। ‘নিগ্রহের’ ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই কলকাতায় এসেছিলেন পড়ুয়ার বাবা-মা। তাঁরা হাসপাতালেই ছিলেন। ‘নিগৃহীত’ পড়ুয়াকে তাঁরাই নিয়ে যান।

হাসপাতালে ওই পড়ুয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই পড়ুয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে। ও কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এখনও করেনি। পরিবারের লোকেরা ওকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ‘নিগৃহীত’ পড়ুয়া কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেন যাদবপুরে। স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র তিনি। বাড়ি পুরুলিয়ায়। ওই পড়ুয়ার বিরুদ্ধে ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে তাঁকে হস্টেলের ঘরে ঘিরে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন অনেকে মিলে। অভিযোগ, ওই পড়ুয়াকে মানসিক ভাবে এতটাই চাপ দেওয়া হয় যে, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন হস্টেলের সুপার। গিয়েছিলেন মেডিক্যাল সুপার মিতালি দেবও। তাঁর দাবি, হস্টেলে তাঁকে বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল। পরে তিনিই পড়ুয়াকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। মিতালি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমরা খবর পাওয়া মাত্রই হস্টেলে যাই। ৫০ জনেরও বেশি ছাত্র ওকে (ওই পড়ুয়াকে) ঘিরে ছিল। অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ওই পড়ুয়া। আমরা ওকে উদ্ধার করার সময় কিছু ছাত্র বাধা সৃষ্টি করেছিল। পরে আমরা নিগৃহীত পড়ুয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করাই। এখন সে সুস্থই আছে। চিকিৎসাধীন।’’

মেডিক্যাল সুপারকে হস্টেলে বাধা দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে (ভিডিয়োটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি)। ভিডিয়োটিতে এক যুবককে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘যাঁরা নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা এটা লিখিত দিয়ে যান যে, সম্পূর্ণ দায়িত্বে আমরা নিয়ে যাচ্ছি। বাইরে গিয়ে যদি কিছু করে, তা হলে সেটা আমাদের হস্টেলের দায়িত্ব নয়। আপনাদের তিন জনের দায়িত্ব।’’ দাবি, ওই যুবক যাদবপুরেরই ছাত্র। হস্টেলের আবাসিক। তাঁর কথার জবাবে মহিলাকণ্ঠে শোনা যায়, ‘‘আমি ইউনিভার্সিটির ডাক্তার। আমার রেজিস্ট্রেশন নম্বর রয়েছে। এটা আমার দায়িত্ব। প্রত্যেকটা স্টুডেন্টের জন্য। তোমার কিছু হলে, সেটাও আমার দায়িত্ব। ওই জন্য আমাকে লিখতে হবে।’’ দাবি, মহিলাকণ্ঠটি মেডিক্যাল সুপার মিতালির। নিগৃহীত পড়ুয়াকে উদ্ধার করতে গিয়ে হস্টেলের অন্য পড়ুয়াদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। ভিডিয়োটিতে দেখা যায়, এর পরেই ওই যুবক ও তাঁর সঙ্গীরা ‘লিখিত’ চাইছেন। তাঁরা বলছেন, ‘‘আমাদের ভয় লাগছে! কালকে আমরা ফেঁসে যেতে পারি।’’ মহিলাও স্পষ্ট বলেন, ‘‘লিখিত দেওয়ার কাজ আমার। তোমরা ওর অভিভাবক নও। ওর অভিভাবক ওর বাবা আর যা বোঝার ইউনিভার্সিটি বুঝবে।’’

প্রসঙ্গত, গত বছর যাদবপুরের মেন হস্টেলে তিন তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার। সেই ঘটনায় র‌্যাগিংয়ের অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। গ্রেফতারও হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েক জন পড়ুয়া ও প্রাক্তন ছাত্র। সেই সময় যাদবপুরের হস্টেলে ‘পড়ুয়া নিগ্রহের’ অভিযোগ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। ফের সেই অভিযোগ উঠল।

Jadavpur University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy