Advertisement
E-Paper

প্রেমে পড়েই ‘ভুল’, বাড়ি পাঠানো হল কিশোরকে

ফেসবুকের আলাপ গাঢ় হলে এক দিন ছেলেটি ট্রেন ধরে সোজা চলে আসে কলকাতায়। ডেকে পাঠায় কিশোরীটিকে। দু’জনে দেখা করে।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ১০:০০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। আর সেই প্রেমকে পরিণতি দিতে কিছু না বুঝেই কিশোরী বান্ধবীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল এক কিশোর। ধরা পড়ার পরে তাকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করানো হলে বোর্ড বুঝতে পারে, অসৎ কোনও উদ্দেশ্য ছিল না ওই কিশোরের। আইন না জানায় ভুল করে মেয়েটিকে নিয়ে সে চলে গিয়েছিল নিজের বাড়িতে। সব দিক বিবেচনা করার পরে ওই কিশোরের বিচার হলেও শাস্তি দেওয়ার বদলে কাউন্সেলিং করিয়ে তাকে বাড়িতে ফেরত পাঠাল বোর্ড। আর বোর্ডের এই রায়ের ফলে বাড়ি ফিরে গিয়ে দশম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় বসল কিশোরটি।

কী ঘটেছিল?

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর জেলার বাসিন্দা, বছর পনেরোর এক কিশোরের সঙ্গে দেড় বছর আগে ফেসবুকে আলাপ হয় এ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের এক কিশোরীর। তার বয়সও পনেরো। ফেসবুকের আলাপ গাঢ় হলে এক দিন ছেলেটি ট্রেন ধরে সোজা চলে আসে কলকাতায়। ডেকে পাঠায় কিশোরীটিকে। দু’জনে দেখা করে। তার পরে দু’জনে চলে যায় মন্দসৌরে, ছেলেটির বাড়িতে।

এ দিকে, মেয়ে বাড়ি না ফেরায় গত ২২ জানুয়ারি কিশোরীর পরিবার জয়নগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। মেয়েটির ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পুলিশ মধ্যপ্রদেশের ওই কিশোরের নাম জানতে পারে। এর পরে গত ২ ফেব্রুয়ারি মন্দসৌর থেকে উদ্ধার করে আনা হয় মেয়েটিকে। তাকে অপহরণের অভিযোগে আটক করা হয় মন্দসৌরের কিশোরকে। হাজির করানো হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে। জানা যায়, ছেলেটি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের। বাবার সামান্য জমি-জমা রয়েছে। তাতে চাষবাস করেই সংসার চলে। কষ্টেসৃষ্টে সংসার চললেও কিশোরের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে তার পরিবার। সে দশম শ্রেণিতে পড়ে। এ বছরই বোর্ডের ফাইনাল পরীক্ষা। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড আরও জানতে পারে, জয়নগরের কিশোরীরও এই বছরই মাধ্যমিক।

বাড়ি ফিরে এসে কিশোরী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসলেও ছেলেটির পরীক্ষায় বসা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড ঠিক করে, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বিচারপর্ব শেষ করেই তাকে বাড়ি পাঠানো হবে। কারণ, ৩ মার্চ থেকে তার পরীক্ষা। ফলে দেরি হলে ছেলেটি পরীক্ষায় বসতে পারবে না। সেই মতো ২৩ দিনের মধ্যে ছেলেটির বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে বোর্ড। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সদস্য কবিতা বেরা জানিয়েছেন, ওই কিশোর বা কিশোরী— কেউই আইন জানে না। বন্ধুত্ব গভীর হতেই দু’জনে মিলে ঠিক করে, তারা পালিয়ে বিয়ে করবে। সেই মতো মেয়েটি ছেলেটির সঙ্গে চলে যায়। মধ্যপ্রদেশে গিয়ে সে ওই কিশোরের বাড়িতেই ছিল। ওই কিশোর যে মেয়েটিকে পাচারের জন্য নিয়ে যায়নি, তদন্তে তা পরিষ্কার হয়ে যায়। সেই কারণেই কিশোরের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তাকে ফেরত পাঠানো হয়। কবিতা বলেন, ‘‘মন্দসৌর জেলার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই কিশোরকে বলা হয়েছে, ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত মাঝে মাঝে গিয়ে সেখানকার বোর্ডের সামনে হাজিরা দিতে।’’

Teenage Marriage Juvenile Board
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy