অভিযোগ এই গাছের সঙ্গেই বেঁধে মারা হয় ওই যুবককে, এখনও পড়ে রয়েছে দড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
দমদমের পর এবার খাস কলকাতার বুকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারার অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে কালীঘাট থানা এলাকার গুরুপদ হালদার রোড এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রোডের সংযোগস্থলে একটি মলের সামনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল বেলা পথচলতি মানুষ এক যুবকের নিথর দেহ দেখতে পান ফুটপাথে একটি গাছের নীচে। তাঁদের কাছ থেকেই খবর পেয়ে এ দিন সকালে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কালীঘাট থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম শঙ্কর মণ্ডল। ২৫ বছর বয়সী ওই যুবকের বাড়ি কালীঘাট থানা এলাকার মসজিদপাড়া বস্তিতে। পুলিশের দাবি, ওই যুবক মাদকাসক্ত। এ দিন দুপুরে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ দাবি করেছিল, ওই যুবকের দেহে কোনও মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তদন্তকারীরা স্বীকার করেন, যুবকের হাতে একটি দড়ির টুকরো বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। তবে গনপিটুনিতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারেননি তদন্তকারীরা।
তবে ওই এলাকার স্থানীয়রা এ দিন অন্য কথা বলেন। তাঁরা দাবি করেন, ভোর চারটে নাগাদ ওই যুবককে গাছে বেঁধে মারধর করছিলেন কয়েকজন যুবক। যাঁরা মারধর করছিলেন, সেই যুবকদের কথা থেকে স্থানীয়রা জানতে পারেন, কোনও একটি মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্দেহ করা হয় ওই যুবককে। তারপরই গাছে বেঁধে মারধর শুরু করা হয়। শপিং মলের এক নিরাপত্তা কর্মীও ওই ঘটনার সাক্ষী। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, যাঁরা মারধর করছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাবু নামে এক ব্যক্তি, যিনি স্থানীয় কালীঘাট হকার্স মার্কেটের নেতা। অভিযোগ,তাঁর সঙ্গীরাও ছিলেন ওই সময়।
রবিবার দুপুরে ফের ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: আমার ছেলেটাকে মৃত্যুর মুখে দিও না, হত কিশোরের মায়ের আর্তি কানেও তোলেনি ২ লস্কর জঙ্গি
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে দুই বোনকে অপহরণ করে ধর্মান্তর! জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ
প্রথমে মাদকাসক্ত যুবকের স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মনে করলেও, পরবর্তীতে এ দিন দুপুরে বেলা আড়াইটে নাগাদ ফের কালীঘাট থানার তদন্তকারীদের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে তাঁরা ফের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন, যাঁরা অভিযোগ করেছেন ওই যুবককে পিটিয়ে মারা হয়েছে চোর সন্দেহে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, “আমরা সকালে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করেছি। আমরা গনপিটুনির অভিযোগও খতিয়ে দেখছি।”
কয়েকদিন আগে দমদমে ঠিক একই ভাবে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি দমদম থানার পুলিশ। দমদম বসাক বাগানের বাসিন্দাদের একাংশ এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন কারণ, সেদিন যাঁরা ওই যুবককে পিটিয়ে মেরেছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁরা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy