কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ সামলাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কলকাতায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় শনিবার পুরসভার সমস্ত দফতরের বিভাগীয় আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর কমিশনার ধবল জৈন। বৈঠকে ১৬টি বরোর এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারেরাও ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজির ছিলেন।
ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির জেরে গাছ ভেঙে পড়লে তা দ্রুত সরাতে প্রতিটি বরোর জন্য বিশেষ দল গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বছর তিনেক আগে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে বাতিস্তম্ভে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, কমিশনার এ দিনের বৈঠকে আধিকারিকদের জানিয়েছেন, আগামী ১ জুন, কলকাতায় লোকসভা নির্বাচন। তার আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাধারণ মানুষের কারও যাতে ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শহরে প্রায় তিন লক্ষ বাতিস্তম্ভ রয়েছে। এ দিন আলো দফতরের ডিজি-কে কমিশনার নির্দেশ দিয়ে বলেন, শহরের প্রতিটি বাতিস্তম্ভ যেন যথাযথ ভাবে পরীক্ষা করা হয়। খোলা ফিডার বক্সে অবিলম্বে ঢাকনা দিতে হবে। বৃষ্টি হলে বাতিস্তম্ভে হাত লেগে দুর্ঘটনা ঠেকাতে যথাসম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনেক বিপজ্জনক হোর্ডিং রয়েছে এ শহরে। সেগুলি দ্রুত সরিয়ে ফেলতে গত সোমবারই মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিজ্ঞাপন বিভাগের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। শনিবার মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘বিপজ্জনক হোর্ডিং চিহ্নিত করে সেগুলি সরানোর কাজ চলছে। সেই সঙ্গে কোথাও গাছ ভেঙে পড়লে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলতে সদর দফতরের পাশাপাশি প্রতিটি বরোয় নির্দিষ্ট দল মজুত থাকবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক গাছ কাটার করাতও মজুত থাকছে।’’ পুরসভার কন্ট্রোল রুমে শীর্ষ আধিকারিকেরাও উপস্থিত থাকবেন ২৪ ঘণ্টা। বিপর্যয় মোকাবিলায় সিইএসসি-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা ভেবে নিকাশি দফতর যাতে বাড়তি সতর্ক থাকে, তার জন্য এ দিন কমিশনার ওই দফতরের ডিজি-কে নির্দেশ দেন। রাস্তায় জল জমলে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় পোর্টেবল পাম্প মজুত রাখতে নির্দেশ দেন কমিশনার। পুরসভার নিকাশি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকায় ৭৬টি নিকাশি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে। সেই সব পাম্পিং স্টেশন মিলিয়ে মোট ৪০৮টি পাম্প রয়েছে। যার মধ্যে ৩৯৪টি পাম্প বর্তমানে ঠিক আছে। ১৪টি পাম্পের রক্ষণাবেক্ষণ চলছে।
শহরের বিভিন্ন গালিপিটে যাতে আবর্জনা জমে না থাকে, সেই বিষয়েও জঞ্জাল অপসারণ দফতরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দুর্গত বাসিন্দাদের সরাতে পুরসভার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাবি এ দিনই বিভিন্ন বরোর এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের (সিভিল) হাতে দেওয়া হয়। এক পুর শীর্ষ কর্তা দাবি করেন, ‘‘দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সব দিক দিয়ে প্রস্তুত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy