কলকাতা পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ারকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হল ওয়াটগঞ্জ থানায়। অভিযোগের তির স্থানীয় একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরসভার নয় নম্বর বরোর ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে। বরো চেয়ারম্যান রতন মালাকার অবশ্য দাবি করেছেন, মারধর নয়, একটু ঝামেলা হয়েছিল। তাঁর দাবি, এলাকায় জল জমার সমস্যা মেটানোর ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগে সংশ্লিষ্ট এক সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে গোলমাল বেধেছিল। পরে তা মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পুলিশে অভিযোগ তো দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে। আইন আইনের পথেই চলবে।’’
ঠিক কী হয়েছিল?
পুরসভা সূত্রের খবর, ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ডালপট্টিতে নিকাশির জল দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে অভিযোগ ছিল। সেখানে শীতলা পুজোর অনুষ্ঠান হবে বলে আগে থেকেই স্থানীয় কিছু বাসিন্দা নিকাশি সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, কাজ না হওয়ায় শনিবার সকালে স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা ওই ইঞ্জিনিয়ারের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করতে যান। পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে ওই ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, আচমকাই তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁর চোট লাগে। রক্তপাতও হয়। পরে হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে চিকিৎসা করাতে হয়। সেই সংক্রান্ত কাগজপত্রও পুলিশের কাছে দিয়েছেন তিনি। তাঁর মূল অভিযোগ স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে, যিনি আবার গত পুরভোটে ওই ওয়ার্ডেই দলীয় প্রার্থী ছিলেন। প্রসঙ্গত, ওই ওয়ার্ডে জিতেছেন বাম প্রার্থী বিলকিস বেগম। পাল্টা অভিযোগে তৃণমূলের বক্তব্য, বেশ কয়েক বার ওই ইঞ্জিনিয়ারকে জল জমে থাকার স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি। বলে দেন, কাউন্সিলর বললে তবেই তিনি করবেন। তাতেই বাদানুবাদ শুরু হয়। স্থানীয় এক কর্মী জানান, এর পরেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
পুরো বিষয়টি শনিবার হওয়ায় ধর্মতলার সদর দফতরে তার আঁচ পড়ে সোমবার দুপুরে। ওই ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল পুরসভার ডিজি (সিভিল) পি কে দুয়ার কাছে প্রতিবাদ জানায়। তাঁদের বক্তব্য, এ ভাবে হেনস্থা করা হলে কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ইঞ্জিনিয়ার যা বলছেন, তা কতটা সত্য, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। একই সঙ্গে মারধরের ঘটনার অভিযোগে কারা যুক্ত ছিলেন, তার খোঁজখবর নেওয়াও শুরু হয়েছে। যদিও শাসক দলের নেতার-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ আদৌ ব্যবস্থা নেবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy