Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Road Construction

পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগে ধাক্কা গোড়াতেই 

প্রথমে স্থির হয়েছিল, দেশপ্রাণ শাসমল রোড ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের প্রায় আড়াই কিলোমিটার অংশ মেরামতির ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ০১:৫৬
Share: Save:

প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছিল, আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা সারাইয়ে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে। কিন্তু পরিদর্শনে ধরা পড়ে, নানা কারণে ওই রাস্তায় এখনই ওই কাজ করা সম্ভব নয়। ফলে পরিবেশবান্ধব রাস্তা সারাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই হোঁচট খেল কলকাতা পুরসভা। এক ধাক্কায় আড়াই কিলোমিটারের পরিবর্তে অন্য রাস্তার মাত্র আধ কিলোমিটার অংশে ওই প্রযুক্তি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হটমিক্স মামলায় পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে রাস্তা সারানোর বিষয়টি কত দূর এগিয়েছে, তা জানিয়ে সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালতে হলফনামা জমা দিয়েছে পুরসভা।

প্রথমে স্থির হয়েছিল, দেশপ্রাণ শাসমল রোড ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের প্রায় আড়াই কিলোমিটার অংশ মেরামতির ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে। ওই প্রযুক্তি প্রয়োগে পুরসভাকে সাহায্য করছে ‘সেন্ট্রাল রোড রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (সিআরআরআই) নামে একটি সংস্থা। ওই সংস্থার আধিকারিকেরা গত মাসে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে জানান, অন্যতম ব্যস্ত রাস্তায় অতটা জায়গা জুড়ে ওই প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্ভব নয়। কারণ, ওই রাস্তা দিয়ে প্রতি দিন যে সংখ্যক যানবাহন চলাচল করে, তা বন্ধ রাখলে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে ওই রাস্তার তলা দিয়েই গিয়েছে পানীয় জল এবং নিকাশির পাইপলাইন-সহ অন্যান্য পরিষেবা। সেই লাইনগুলি অন্যত্র সরানো মুশকিল। ফলে আড়াই কিলোমিটারের পরিবর্তে মাত্র আধ কিলোমিটার রাস্তায় ওই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে পরিবেশ আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় জানিয়েছে পুরসভা।

পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি নিয়ে খড়্গপুর আইআইটি-র সাহায্যও চেয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। গত মাসে এ নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্টে শরৎ বসু রোডকে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত বলে সুপারিশ করে আইআইটি। তার পরেই সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, শরৎ বসু রোডে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ করে সিমেন্টের রাস্তা তৈরি করা হবে। পুরসভার আইনজীবী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব দিক ভেবেই শরৎ বসু রোডকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ প্রকল্পের জন্য যানবাহন চলাচল যাতে ব্যাহত না হয়, তা-ও মাথায় রাখা জরুরি।’’

যদিও হটমিক্স মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা সময় নষ্ট করার জন্য এ সব করছে। হটমিক্স নিয়ে অনেক দিন আগেই নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেখানে পুরসভা এখনও কাজই শুরু করতে পারেনি। পূর্ত দফতর কিন্তু পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগে কাজ শুরু করে দিয়েছে।’’

পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, গড়াগাছায় পুরসভার যে হটমিক্স প্লান্ট রয়েছে, পরিবেশ আদালতের নির্দেশমতো সেটিকে পরিবেশবান্ধব ব্যাচ মিক্স প্লান্টে পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এমন প্লান্টগুলিকে দূষণমুক্ত করতে যে যে সুপারিশগুলি করেছে, সেগুলিও মেনে চলা হচ্ছে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘একটি পদ্ধতির পরিবর্তে আর একটি পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য কিছুটা সময় তো দরকার। তবু যত কম সময়ে সে কাজ করা যায়, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Construction KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE