Advertisement
E-Paper

ম্যানহোলে মৃত্যুর ঘটনায় রিপোর্ট আগামী সপ্তাহেই

তবে এই ঘটনায় এখনও কেন দোষীদের শাস্তি হল না, সেই দাবিতে এ দিন কলকাতা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখায় একটি মানবাধিকার সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২১ ০৫:৪৯
অব্যবস্থা: নিয়ম থাকলেও নেই তার প্রয়োগ। বিনা সুরক্ষায় ম্যানহোলে নেমে কাজ করছেন এক সাফাইকর্মী।

অব্যবস্থা: নিয়ম থাকলেও নেই তার প্রয়োগ। বিনা সুরক্ষায় ম্যানহোলে নেমে কাজ করছেন এক সাফাইকর্মী। সল্টলেকে। ফাইল চিত্র

সপ্তাহ দুয়েক আগে দক্ষিণ কলকাতার কুঁদঘাটে ম্যানহোলে নেমে চার শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনায় পুরসভার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আগামী সপ্তাহেই পুর কমিশনারের কাছে জমা পড়তে চলেছে। প্রাথমিক ভাবে ওই রিপোর্টে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার গাফিলতির কথাই উল্লেখ করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। ওই ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকাভূক্ত করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘ম্যানহোলে কাজ করতে গিয়ে একসঙ্গে চার জনের মৃত্যুর এই ঘটনার পিছনে গাফিলতি তো রয়েছেই। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যেই পুর কমিশনারের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।’’


তবে এই ঘটনায় এখনও কেন দোষীদের শাস্তি হল না, সেই দাবিতে এ দিন কলকাতা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখায় একটি মানবাধিকার সংগঠন। সংগঠনের তরফে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়। যদিও কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার এ দিন বলেছেন, ‘‘আশা করছি, সামনের সপ্তাহেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাব। তাতে গাফিলতির উল্লেখ থাকলে নিশ্চয়ই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’


গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার কুঁদঘাটের ইটখোলা এলাকায় নিকাশি পাম্পিং স্টেশনের ম্যানহোলে কাজ করতে নেমে তলিয়ে যান সাত শ্রমিক। পরে তাঁদের মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরে কলকাতা পুরসভার তরফে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়। পাশাপাশি রিজেন্ট পার্ক থানা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে। তবে অভিযোগ, পুলিশ গাফিলতিতে মৃত্যুর ধারায় মামলা দায়ের করলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেনি। পুলিশের তরফে অবশ্য বলা হয়েছে, ‘‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলছে। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’


মৃত চার শ্রমিকের মধ্যে ছিলেন মুর্শিদাবাদের হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা তিন ভাই। পেশায় দিনমজুর তোরাব আলি এবং রোজিনা বিবির তিন ছেলেই সে দিন কুঁদঘাটের ওই ম্যানহোলে তলিয়ে গিয়ে মারা যান। মুর্শিদাবাদ থেকে ফোনে রোজিনা বিবি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘সোলেমান বলে যে ছেলেটি পরে ম্যানহোলে নেমেছিল সে আমায় জানিয়েছে, কোনও রকম সুরক্ষা ছাড়াই আমার ১৮ বছরের ছোট ছেলে সাবিরকে প্রথমে ওই নিকাশি নালায় নামানো হয়েছিল। পরে বাকিদের নামানো হয়। ওদের কোমরে দড়ি বেঁধে নামিয়ে উপর থেকে কেউ নজরদারি করলে এই ঘটনা এড়ানো যেত।’’ তিন ছেলেকে হারিয়ে এখনও শোকে পাথর বৃদ্ধ তোরাব। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘আমার বয়স বেড়েছে। সংসারে রোজগেরে বলতে ছিল ওরাই। তিন ছেলেই চলে গেল। আমরা কী ভাবে বাঁচব?’’

KMC kolkata municipal corporation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy