Advertisement
E-Paper

‘বছরে ক’বার রাস্তা ভাঙবে, সেটাও আগাম জানতে হবে?’

আগামী পাঁচ বছরে কত বার রাস্তা খোঁড়া হবে, তার হিসেব করতে হবে আগেভাগেই। সেই হিসেব সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্টে (ডিপিআর) উল্লেখও করতে হবে! সম্প্রতি জারি হওয়া এমনই এক সরকারি নির্দেশিকায় ধন্দে পড়েছেন কলকাতা পুরকর্তাদের একাংশ।

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৮
খন্দ: রুবি মোড়ে উঠে গিয়েছে পিচের আস্তরণ। নিজস্ব চিত্র

খন্দ: রুবি মোড়ে উঠে গিয়েছে পিচের আস্তরণ। নিজস্ব চিত্র

আগামী পাঁচ বছরে কত বার রাস্তা খোঁড়া হবে, তার হিসেব করতে হবে আগেভাগেই। সেই হিসেব সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্টে (ডিপিআর) উল্লেখও করতে হবে! সম্প্রতি জারি হওয়া এমনই এক সরকারি নির্দেশিকায় ধন্দে পড়েছেন কলকাতা পুরকর্তাদের একাংশ। কারণ রাস্তা খোঁড়ার আগাম হিসেব কী ভাবে বার করা সম্ভব, কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা! বিশেষত কলকাতার মতো এমন একটি শহরের ক্ষেত্রে, যেখানে মাটির নীচ দিয়ে সমস্ত পরিষেবা সংক্রান্ত পাইপলাইন বা কেব‌্ল গিয়েছে।

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে কলকাতা পুরসভা-সহ অন্য উন্নয়ন পর্ষদগুলিতে পাঠানো এক নির্দেশে বলা হয়েছে, তৈরির পরে বিটুমিনাস রাস্তার ক্ষেত্রে পাঁচ বছর ও কংক্রিট রাস্তার ক্ষেত্রে দশ বছরের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ আগাম হিসেব করে ডিপিআর-এ উল্লেখ করতে হবে। সেই মতো রাস্তা সারাইয়ের খরচ ধরা হবে। ওই নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতা পুরসভা গত সপ্তাহেই এক নির্দেশিকা জারি করেছে।

তার পরেই ধন্দে পড়েছেন পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। তাঁরা ভেবে পাচ্ছেন না, কী ভাবে পাঁচ বা দশ বছরের রাস্তা সারাইয়ের খরচ আগাম বলা সম্ভব! কারণ, সেই খরচ ধরতে গেলে ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিভিন্ন কাজের জন্য কত বার রাস্তা খোঁড়া হবে, সেটাও আগে অনুমান করতে হবে। এ দিকে শহরের মাটির তলা দিয়ে ‘পাবলিক ইউটিলিটি সার্ভিস’ গিয়েছে। পুরসভার পানীয় জল ও নিকাশির পাইপ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে অন্য সংস্থার বিভিন্ন

পরিষেবার লাইন ও কেব‌্‌ল সংযোগের তারও রয়েছে। ফলে এই সবের

জন্য প্রায় রোজই রাস্তা খুঁড়তে হয়। অনেক সময়ে খোঁড়ার পরে সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা মেরামতি করা হয় না। খোঁড়া জায়গায় ইট ফেলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়।

রাস্তা খোঁড়ার আগাম হিসেব কী ভাবে বলা সম্ভব, সে বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে। তাঁর জবাব, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগে কথা বলে নিই। তার পরে উত্তর দিতে পারব!’’ যখন-তখন শহরের রাস্তা খোঁড়ার কাজ কেন হচ্ছে, সে বিষয়েও মুখে কুলুপ এঁটেছেন মেয়র পারিষদ।

পুরসভা সূত্রের খবর, পানীয় জল ও নিকাশির পাইপলাইন নতুন ভাবে বসানো বা মেরামতির জন্য এক থেকে ষোলো নম্বর বরোর অধীনস্থ কোন কোন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা শুরু হয়েছে। বরো-ভিত্তিক রাস্তা চিহ্নিত করে সেগুলি সারাই করা

হবে। পুর আধিকারিকদের একাংশ এ-ও জানাচ্ছেন, দক্ষিণ কলকাতার অনেক রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। ওখানে জলের বেশ কিছু পাইপলাইন বহু পুরনো। ফলে সেগুলি মেরামতির জন্য প্রতিদিনই নতুন করে রাস্তা খুঁড়তে হয়। ফলে এমন ক্ষেত্রে আগাম হিসেব করা কঠিন। তা ছাড়া এখন রাস্তা সারাইয়ের যা খরচ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়বে। কখনওই কমবে না অথবা এক থাকবে না। ফলে এ সমস্ত ক্ষেত্রে মূল রাস্তা তৈরির যা খরচ, তার একটা শতাংশ হিসেব করে রক্ষণাবেক্ষণের খরচে উল্লেখ করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা।

এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বছরে ক’বার রাস্তা ভাঙবে, সেটাও আমাদের আগাম জানতে হবে? পাইপলাইনে ছিদ্র হয়ে জল বেরোচ্ছে বহু জায়গায়। ফলে সে সব জায়গায় মাটি সরে রাস্তা বসে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলছে মেট্রোর কাজ। ফলে আগামী পাঁচ বা দশ বছরের হিসেব আগেভাগে বলা খুবই মুশকিল। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।’’

Repairing Road KMDA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy