Advertisement
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

গোলপোস্টের পুজো দিয়ে শুরু দগ্ধ ক্লাবের নববর্ষ

গত পয়লা এপ্রিল ভোরে উয়াড়ি ক্লাবে আগুন লাগে। ওই ঘটনায় অফিসঘর, জিমন্যাসিয়াম থেকে শুরু করে ফুটবল ও ক্রিকেটের সরঞ্জাম-সহ সব কিছু ভস্মীভূত হয়ে যায়।

পুজোর আগে তোড়জোড় উয়াড়ি ক্লাবে। সোমবার, ময়দানে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

পুজোর আগে তোড়জোড় উয়াড়ি ক্লাবে। সোমবার, ময়দানে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৫০
Share: Save:

আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া শতাব্দীপ্রাচীন উয়াড়ি ক্লাবে প্রথা মেনেই বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পুজো হল গোলপোস্টে। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে নববর্ষের দিন গোলপোস্ট এবং ক্রিকেট ও ফুটবলের বিভিন্ন সরঞ্জামের পুজো হয়। গত পয়লা এপ্রিল আগুন লেগে পুরো ক্লাব ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল। গোলপোস্টে পুজোর ঐতিহ্য এ বছর ধরে রাখতে পারব কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু সকলের আন্তরিক চেষ্টায় তা করা গেল।’’

গত পয়লা এপ্রিল ভোরে উয়াড়ি ক্লাবে আগুন লাগে। ওই ঘটনায় অফিসঘর, জিমন্যাসিয়াম থেকে শুরু করে ফুটবল ও ক্রিকেটের সরঞ্জাম-সহ সব কিছু ভস্মীভূত হয়ে যায়। ক্লাবঘরে যেখানে আগুন লাগে, সেখানেই শুয়ে ছিলেন কেয়ারটেকার-সহ তিন জন। তাঁরা কোনও মতে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে যান।

প্রবীরবাবু জানান, পুড়ে যাওয়া ক্লাবঘরটি পুরো ভেঙে দিয়ে তা নতুন করে তৈরি করা হবে। জায়গাটা যে হেতু সেনাবাহিনীর, তাই তাদের অনুমতি নিয়েই সব করা হবে। প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে আমাদের কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। ওঁরা নতুন ক্লাবঘরের নকশা জমা দিতে বলেছেন। আমরা সেই নকশা তৈরি করে দ্রুত জমা দেব।’’ ক্লাবের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, পোড়া ক্লাবঘর ভেঙে নতুন ক্লাবঘর তৈরির কাজ শুরু করতে করতে জুন মাস হয়ে যাবে। তাঁদের আশা, ছ’মাসের মধ্যেই নতুন ঘর তৈরি হয়ে যাবে। সেই ঘর তৈরি হওয়া পর্যন্ত পাশের একটি ক্লাবে সদস্যেরা বসবেন। সেখানেই খেলার সরঞ্জাম রাখা হবে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ক্লাব সদস্যেরা জানাচ্ছেন, ঠেকে শিখে এ বার তাঁরা অগ্নি-নির্বাপণের সব ধরনের ব্যবস্থা রাখবেন। প্রবীরবাবু জানান, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। দমকল যা নির্দেশ দেবে, সেই মতো ব্যবস্থা রাখা হবে।

আগুন লাগার পরে দেখা গিয়েছিল, উয়াড়ি ক্লাবে অগ্নি-নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, শুধু ওই ক্লাব নয়, ময়দানের অধিকাংশ ক্লাবেই অগ্নি-নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ, বেশির ভাগ ক্লাবেই আগুন জ্বালিয়ে রান্না হয়। দমকলের এক কর্তা বলেন, ‘‘আগুন নেভানোর সরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে ক্লাবকর্তাদের বলা হয়েছে।’’ এ দিন উয়াড়ি ক্লাবের পুজোয় এসেছিলেন ময়দানের অন্যান্য বেশ কিছু ক্লাবের কর্তারা। উয়াড়ি ক্লাবের আগুন থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার তাঁরাও নিজেদের ক্লাবে অগ্নি-নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখবেন বলে জানান।

উয়াড়ি ক্লাবের সদস্যেরা জানান, তাঁদের ক্লাব ফুটবল, ক্রিকেট, হকি— এই তিনটে খেলাতেই প্রথম ডিভিশনে খেলে। অগ্নিকাণ্ডের পরে কোনও খেলাই কিন্তু বন্ধ থাকেনি। ইন্দ্রনাথ পাল নামে এক সদস্য জানান, গত ৫ এপ্রিল তাঁদের ক্লাবের একটি ক্রিকেট ম্যাচ ছিল। সেই খেলাও হয়েছে। খেলোয়াড়দের জন্য তাঁরা অন্য ক্লাব থেকে ক্রিকেটের কিট জোগাড় করে এনেছেন। প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘এক-একটি ক্রিকেট কিটের দাম কয়েক হাজার টাকা। আমরা ক্লাবের ক্রিকেটারদের বলেছি, কোনও চিন্তা নেই। সবাইকে নতুন কিট দেওয়া হবে।’’

খেলার সরঞ্জামের পাশাপাশি পয়লা এপ্রিলের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছে ক্লাবে রাখা প্রচুর দুষ্প্রাপ্য ছবিও। সেই সব ছবির কপি যদি কোনও সদস্যের কাছে থাকে, তা হলে ক্লাবকে তা দিতে অনুরোধ করেছেন কর্তারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Football Kolkata club
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy