কলকাতা পুরসভাকে পার্কিং ফি বাড়ানোর অনুমতি দিল না নবান্ন। — ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে না জানিয়ে পার্কিং ফি বাড়িয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এ বারও পার্কিং ফি বাড়ানোয় সায় দিল না নবান্ন। তাই কলকাতার শহরের পার্কিং ফি অপরিবর্তিতই রাখছে কলকাতা পুরসভা। গত অগস্ট মাসে পার্কিং লটের দায়িত্ব বণ্টনের জন্য টেন্ডার ডেকেছিল পুরসভা। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। এ বার নতুন সংস্থা বা এজেন্সির হাতে দায়িত্ব ভাগ করে দেবে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার একটি সূত্র জানিয়েছিল, তারা পুরনো হারেই পার্কিং ফি নেবে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে সেই খবরে সিলমোহর দিয়েছেন স্বয়ং মেয়র। তবে নবান্ন যে পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয়নি, তা অবশ্য মানতে চাননি তিনি। ফিরহাদ বলেন, ‘‘পার্কিং ফি নিয়ে নবান্ন থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি। সেই কারণে আমরা পুরনো পার্কিং ফি বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সম্প্রতি পুরনো পার্কিং ফি-র রেট অব্যাহত রেখেই টেন্ডার করা হয়েছে।’’
চলতি বছর এপ্রিল মাসে পার্কিং ফি বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু ঘোষণার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি না নিয়ে মেয়র ফিরহাদ পুরসভা এলাকায় পার্কিং ফি বৃদ্ধি করেছেন বলে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানান তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। মেয়রকে ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হবে বলে ঘোষণাও করে দেন কুণাল। সঙ্গে সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফে টুইট (বর্তমানে এক্স) করে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য কলকাতা পুরসভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাকিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পুরসভা। এ সবের মধ্যেই ফিরহাদ বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বললে পার্কিং ফি বাড়ানোর নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেব। তবে এটা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে প্রকাশ্যে না বলে দলের ভিতরে বললেও হত।’’ পুরসভার বিরুদ্ধে পার্কিং ফি ৩ গুণ করার অভিযোগ করা হয়েছিল।
পার্কিং ফি প্রত্যাহার করার পর মেয়র ফিরহাদ জানিয়েছিলেন, সংশোধিত প্রস্তাব নবান্নে পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, নতুন প্রস্তাবে পার্কিং ফি দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে দেশের অন্যান্য ‘মেট্রোপলিটন সিটি’ যেমন দিল্লি, মুম্বই-সহ চারটি শহরের পার্কিং ফি-র একটি তালিকাও ফাইলের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয় নবান্ন। গত অগস্ট মাসেই পুরসভাকে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন। তাই নতুন করে শহরের ১৪ হাজার গাড়ি রাখার জন্য ২৪০টির বেশি পার্কিং লটের দায়িত্ব বণ্টন করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি সেই সংক্রান্ত বিষয়ে টেন্ডার ডেকে যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
তবে কলকাতা পুরসভার একাংশের মতে, পার্কিং ফি কিছুটা বাড়ানো জরুরি ছিল। কারণ, গত ১০-১২ বছরে শহরের পার্কিং ফি বাড়েনি। পুরসভার আধিকারিকদের একাংশের কথায়, পাকিং ফি বৃদ্ধি পেলে শহরের রাস্তায় ব্যক্তিগত মালিকানাধীন গাড়ি কম বেরোবে। ফলে, কলকাতায় দূষণের পরিমাণও কম হবে। এই ভাবে শহরের দূষণ কমানোই ছিল কলকাতা পুরসভার কৌশল। পার্কিং ফি বেশি হলে মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে কম বার হবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পার্কং ফি বাড়ছে না। এর ফলে বেআইনি এবং অতিরিক্ত পার্কিং ফি নেওয়ার যে অভিযোগ গত কয়েক বছরে মাথাচাড়া দিয়েছিল, তা থেকেই যাবে বলে মনে করছে কলকাতা পুর প্রশাসনের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy