Advertisement
E-Paper

তড়িদাহত মা, বাঁচাতে এসে মৃত্যু ছেলেরও

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই লোহার তারটিতে দীর্ঘদিন ধরেই ভিজে কাপড় মেলতেন পুষ্পা। সেটির এক প্রান্ত ঘরের ভিতরে সিলিং ফ্যান ঝোলানোর লোহার আঁকশির সঙ্গে বাঁধা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:২৪
মনোজিৎ সামন্ত ও পুষ্পা সামন্ত

মনোজিৎ সামন্ত ও পুষ্পা সামন্ত

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল মা ও ছেলের। রবিবার, হরিদেবপুরের শরৎচন্দ্র রোডের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম পুষ্পা সামন্ত (৪০) এবং মনোজিৎ সামন্ত (১৬)। এ দিন দুপুর সওয়া দু’টো নাগাদ পুষ্পাদেবী বাড়ির একটি লোহার তারে ভিজে কাপ়ড় মেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে একই ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ছোট ছেলে মনোজিৎ। পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে দু’জনকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল?

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই লোহার তারটিতে দীর্ঘদিন ধরেই ভিজে কাপড় মেলতেন পুষ্পা। সেটির এক প্রান্ত ঘরের ভিতরে সিলিং ফ্যান ঝোলানোর লোহার আঁকশির সঙ্গে বাঁধা ছিল। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, ওই সিলিং ফ্যান থেকে কোনও ভাবে লোহার রডটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটেছিল। তা থেকেই এই দুর্ঘটনা। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ছোট মাপের ঘর। বছর দশেক ধরে স্বামী লঙ্কেশ্বর এবং সন্তানদের নিয়ে সেখানেই ভাড়া থাকতেন পুষ্পা। ওই বাড়িতে আরও কয়েক ঘর ভাড়াটে আছেন।

লঙ্কেশ্বর জানান, তিনি এ দিন দুপুরে নীলগঞ্জে মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। মাঝপথেই দুঃসংবাদ পেয়ে তড়িঘড়ি ফিরে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানিয়েছেন, পুষ্পা ও লঙ্কেশ্বরের বড় ছেলে মনোজ কাছেই একটি কারখানায় কাজ করেন। তিনিও বাড়ি ছিলেন না। ঘরে খেতে বসেছিল মনোজিৎ। স্নান সেরে কাপড় মেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন পুষ্পা। মাটিতে পড়ে যান তিনি। সেই শব্দ পেয়ে খাওয়া ফেলে ছুটে আসে মনোজিৎ। আগুপিছু না ভেবে মাকে ছুঁতেই সে-ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।

আশপাশের লোকেরা তা দেখতে পেয়ে চিৎকার জুড়ে দেন। ঘটনাচক্রে সে সময় বাড়ি ফেরেন মনোজ। তার পরেই খবর যায় হরিদেবপুর থানায়। পুলিশ এসে দু’জনকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে আসেন সিইএসসি-র কর্মীরাও।

এ দিন বিকেলে বাড়িতে বসে কপাল চাপড়াচ্ছিলেন লঙ্কেশ্বর। বলছিলেন, ‘‘ওই তারেই তো বছরের পর বছর ধরে কাপড় মেলত। এমন বিপদ হবে ভাবিনি।’’ মা ও ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে চলে এসেছিলেন মেয়ে মধুমিতাও। তাঁরও আক্ষেপ, ‘‘কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝতে পারছি না।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়িওয়ালার ঘর থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় ভাড়াটেদের। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে বিদ্যুতের তারের জালও নজরে এসেছে। বেশ কিছু তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছিল। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল এবং ওই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া আদৌ বৈধ কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন বাড়িওয়ালাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

Death Accident Electrocuted পুষ্পা সামন্ত মনোজিৎ সামন্ত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy