কেউ ব্যস্ত ট্রেড ইউনিয়নের কাজে। কেউ ছুটিতে বাইরে গিয়েছিলেন। কেউ বলছেন, এপ্রিলের শেষ থেকে পুরোদমে প্রচার শুরু করবেন। কেউ আবার অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় সময় করে উঠতে পারেননি। মোদ্দা কথা এ বছরের গোড়া থেকেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া দমনে সচেতনতার অভিযানে নামার যে নির্দেশ নবান্ন দিয়েছিল কলকাতা পুরসভায় কাউন্সিলরদের বড় একটা অংশই তাতে সাড়া দেননি। এপ্রিলে বেশ কয়েক দিন বৃষ্টির পরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশার জ্বালায় বাসিন্দারা বিপন্ন।
কাউন্সিলরদের একটা বড় অংশ ডেঙ্গি-প্রচারে অংশগ্রহণ করছেন না বলে গত বছরই অভিযোগ তুলেছিল পুর স্বাস্থ্য দফতর। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ সেই সময়ে জানিয়েছিলেন, ডেঙ্গি-প্রচারে কাউন্সিলরদের একাংশের অনীহা রয়েছে। এলাকায় মশার আঁতুড় কোথায়, জঞ্জাল কোথায় রয়েছে, তা অনেকে জানেন না। অনেকে বার বলা সত্ত্বেও মশার উৎস ধ্বংসের ক্ষেত্রে উদ্যোগী হননি।
এ বছর তাই প্রথম থেকেই কাউন্সিলরেরা যাতে সচেতনতার প্রচারে এবং এলাকা পরিদর্শনে সক্রিয় হন সে নির্দেশ দিয়েছিল পুর
স্বাস্থ্য দফতর। নবান্ন থেকেও একই নির্দেশ আসে। কিন্তু কাউন্সিলরদের অনীহায় সেই নির্দেশ কার্যত খাতায়-কলমেই থেকে গিয়েছে। কারণ, কাউন্সিলরদের অনেকেই এখনও সার্বিক ভাবে প্রচারে নামেননি।
কাউন্সিলর, এমনকী মেয়র পারিষদদের একাংশও স্বীকার করে নিয়েছেন নানা ব্যস্ততার কারণে তাঁরা ডেঙ্গি-প্রচার তেমন ভাবে শুরু করতে পারেননি। ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মার্চ মাসে প্রচার করিনি ঠিকই। তবে এপ্রিল শেষ হলে বর্ষার আগে পুরোদমে শুরু করব। আমার ওয়ার্ড এমনিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।’’ ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অর্চনা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় এ মাসে এখনও প্রচার শুরু করতে পারিনি। কিন্তু শীঘ্রই শুরু করব।’’ ৭৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা একশো দিনের প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ রাম পিয়ারি রাম বলেন, ‘‘ট্রেড ইউনিয়ন কনফারেন্সে ব্যস্ত থাকায় এ মাসে বেরোতে পারিনি। কিন্তু আবার শুরু করব।’’ ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেহানা খাতুন বলেন, ‘‘মার্চ মাসে দু’দিন করেছিলাম। কিন্তু তার পর বাইরে চলে যাই। তাই করতে পারিনি। আবার শুরু করব।’’
কাউন্সিলরেরা যতই স্বীকার করুন না কেন, পুর স্বাস্থ্য দফতর দাবি করছে, সব কাউন্সিলরই রাস্তায় নেমেছেন! অতীনবাবু বলেন, ‘‘সব কাউন্সিলরই আস্তে আস্তে ডেঙ্গি প্রচারে নামছেন। তবে তাঁরা প্রচারের ছবি পাঠাচ্ছেন কিনা, এগুলো তো অভ্যন্তরীণ বিষয়। এগুলো আমরা বলব কেন?’’
পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, প্রচারে অনীহা রয়েছে, বারবার এ কথা বলে কাউন্সিলরদের কাছে বিরাগভাজন হতে চাইছে না স্বাস্থ্য দফতর। তাই বিতর্কটি তারা এড়িয়ে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy