প্রতীকী ছবি।
লাইসেন্স বিভাগের এক কর্মীকে গত ৪ মে-র বিকেলে দীর্ঘ ক্ষণ পরে দেখে এক আধিকারিক বললেন, ‘‘কী রে! সকাল থেকে অপেক্ষা করছি। তোর দেখা নেই কেন?’’ কাঁচুমাচু মুখে ওই কর্মী বললেন, ‘‘এখন খুব বেশি এ ঘর-ও ঘর করা যাচ্ছে না। ক্যামেরা চলছে!’’
এই ‘ক্যামেরা চলছে’র ভয়েই আপাতত তটস্থ দমদম পুরসভার কর্মীরা। সম্প্রতি পুরসভার বিভিন্ন তলায় সাতটি সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছেন পুরপ্রধান হরীন্দ্র সিংহ। নিজের ঘর থেকে পুর অলিন্দের কোথায় কী হচ্ছে, তা নজরে রাখছেন তিনি।
কর সংগ্রহ, জল, বিদ্যুৎ, লাইসেন্স, অ্যাসেসমেন্ট, জঞ্জাল অপসারণ, জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র আদায় বিভাগের সামনে বেচাল দেখলেই সংশ্লিষ্ট দফতরের ইন্টারকমে চলে আসছে পুরপ্রধানের ফোন। সম্প্রতি টানা ছুটি কাটিয়ে কাজে যোগ দিয়েই কর্মীরা দেখেন ক্যামেরার ঘেরাটোপে পুরভবনের অন্দর।
পুরসভা সূত্রের খবর, একতলায় জঞ্জাল অপসারণ, জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র আদায়ের দফতর ছাড়াও পুরপ্রধান এবং কাউন্সিলরদের ঘর রয়েছে। সেখানে তিনটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
দোতলায় ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্টের ঘর ছাড়াও এগজিকিউটিভ অফিসার এবং লাইসেন্স বিভাগের দফতর। সেখানের বারান্দায় লাগানো হয়েছে একটি সিসি ক্যামেরা। এ ছাড়া অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ, কর সংগ্রহ ও জলের বিভাগ এবং বোর্ডরুমের বাইরে একটি করে মোট তিনটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, একতলায় জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র বিভাগের সামনে এক মহিলা দাঁড়িয়েছিলেন। আচমকা নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে মহিলা কেন দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করছেন, তা জানতে চান পুরপ্রধান। তৎক্ষণাৎ পুরকর্মীদের মধ্যে তৎপরতা বেড়ে যায়।
গ্রিন সিটি প্রকল্পে দমদম পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৯৬টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। আরও পাঁচটি এলাকায় ক্যামেরা
লাগানোর প্রস্তাব রয়েছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপরে নজরদারি রাখতেই এই ব্যবস্থা। তা বলে পুর ভবনে হঠাৎ সিসি ক্যামেরা কেন?
পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন বিভাগে পুর পরিষেবা সংক্রান্ত কাজে এসে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছিল। পুর ভবনে এসে সাধারণ মানুষ যাতে ভোগান্তির শিকার না হন, সে জন্য এই ব্যবস্থা।
স্বয়ং পুরপ্রধানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুর এলাকা জুড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। ভাবলাম, পুর ভবনের অন্দরে কী চলছে তা-ও দেখা উচিত। তাই এই ব্যবস্থা!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy