Advertisement
E-Paper

তরুণীর রহস্য-মৃত্যুতে সিট গড়ল পুলিশ

গত ১৭ এপ্রিল গড়িয়া স্টেশনের কাছে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল এক তরুণীর দেহ। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে কি না, নিশ্চিত হতে অবশেষে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে পুলিশ।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০২:২৯

গোড়ায় নিছকই দুর্ঘটনা বলে কার্যত ধরে নিয়েছিল পুলিশ। এখন নানা মহলে প্রশ্ন ওঠায় কিছু যে ঘটে থাকতে পারে, সেটা অন্তত মেনেই নিচ্ছে তারা।

গত ১৭ এপ্রিল গড়িয়া স্টেশনের কাছে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল এক তরুণীর দেহ। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে কি না, নিশ্চিত হতে অবশেষে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে পুলিশ। বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহের কথায়, ‘‘তদন্তে কোনও ফাঁক রাখতে চাই না। কিছু কিছু রহস্যের জট খুলতেই সিট গড়া হয়েছে।’’ বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (জোনাল) সৈকত ঘোষ সিট-এর কাজ তদারকি করছেন। জেলার ডিএসপি (ক্রাইম), ওসি (স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ), সোনারপুর থানার আইসি ও সাব-ইনস্পেক্টর পর্যায়ের এক জন অফিসারকে দলে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি ধর্ষণের পরে প্রমাণ লোপাট করতে খুন, শুধু খুন, না কি দুর্ঘটনা তা নিয়ে নিশ্চিত হতে চায় পুলিশ।

সোনারপুর থানা গোড়ায় দুর্ঘটনার তত্ত্বেই জোর দিচ্ছিল। ওই মহিলা লরি জাতীয় কোনও গাড়ির নীচে পিষ্ট হয়েছিলেন। তাঁর কোমরের আশপাশের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সম্পূর্ণ পিষে গিয়েছিল। রাজাবাজারে কারখানায় কাজ সেরে, রাত ১২টার পরে শেষ ট্রেনে বাড়ি ফেরা ওই তরুণীকে শেষবারের মত দেখেছিল তাঁর ছেলে। মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে মিষ্টির দোকানের দাওয়ায় বসিয়ে ঠাকুরমাকে ডাকতে গিয়েছিল সে। প্রশ্ন উঠেছে, এর পরে কী ভাবে, কখন উল্টো দিকের রাস্তায় গাড়ির নীচে পিষে গেলেন ওই তরুণী? এই উত্তরগুলির খোঁজে ময়না-তদন্তের চিকিৎসকের কাছে কয়েকটি সংশয় দূর করার অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘অনেক সময়ে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে ডাক্তার লিখে দেন, পারিপার্শ্বিক প্রমাণের মাধ্যমে যাচাই করতে হবে ঘটনাটি খুন কি না। এই জায়গাটি গড়িয়ার ঘটনার রিপোর্টে স্পষ্ট নয়।’’

অতএব পুলিশের প্রশ্ন, কী ভাবে মৃত্যু হয়েছিল মহিলার? যৌন নিগ্রহের কোনও প্রমাণ কি মিলেছে? ওই মহিলার শাশুড়ির বিশ্বাস, তাঁর বৌমাকে ধর্ষণই করা হয়েছিল। দেহটি কী ভাবে পোশাকহীন হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তিনি। তবে দুর্ঘটনার সময়ে দেহটি কী অবস্থায় ছিল, তা নিয়ে পুলিশকর্তারা নিশ্চিত নন। পুলিশের একাংশের দাবি, লেপ্টে যাওয়া দেহাংশ কোদালে চেঁছে উদ্ধার করতে হয়। তাতে পোশাকের অংশও লেগে ছিল। তাই দুর্ঘটনার আগেই পোশাক খুলে নেওয়া হয়েছিল কি না, নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। কোনও কোনও মহলের অবশ্য অভিযোগ, মৃতার পোশাক ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়নি।

পুলিশের দাবি, তদন্তে ফাঁক রাখা হচ্ছে না। দুর্ঘটনাস্থল ঘিরে ওই রাতে মোবাইলে কী কথা হয়েছিল, তা জানতে বিভিন্ন সার্ভিস প্রোভাইডারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। ঘটনাটি নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল কয়েকটি গণ সংগঠন। তেমনই একটি সংগঠনের তরফে আলতাফ আহমেদ, জগদীশ সর্দারদের অভিযোগ, ‘‘এ নিয়ে মুখ খুললেই হুমকি দিচ্ছে। মামলা হতে পারে বলেই পুলি‌শ নড়ে বসেছে।’’

Police SIT teenage girl death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy