Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি-যুদ্ধের অস্ত্র এ বার পোস্টার

রাজ্যের সংক্রামক রোগের চিকিৎসার অন্যতম হাসপাতাল বেলেঘাটা আইডি। দীর্ঘ দিন ধরেই চিকিৎসক ও কর্মীর অভাবে ধুঁকছে এই প্রতিষ্ঠান।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৮

কখনও বহির্বিভাগে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে ছ’ঘণ্টার অপেক্ষা করতে হয়, আবার কখনও শয্যা না থাকায় দীর্ঘ অপেক্ষার পরে ফিরে যেতে হয়। এমনকী ডেঙ্গির মরসুমে চিকিৎসার অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে রোগীমৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু তার পরেও কি হুঁশ ফিরেছে?

রাজ্যের সংক্রামক রোগের চিকিৎসার অন্যতম হাসপাতাল বেলেঘাটা আইডি। দীর্ঘ দিন ধরেই চিকিৎসক ও কর্মীর অভাবে ধুঁকছে এই প্রতিষ্ঠান। ডেঙ্গির মরসুমে রোগীর চাপ বা়ড়লে হিমশিম খান চিকিৎসক থেকে প্যাথোলজির কর্মীরা। স্বাস্থ্য দফতরেও বারবার কর্মীর অভাবের কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেনি। ফলে এ বারও ডেঙ্গির মরসুমে রোগীদের চরম ভোগান্তি হবে বলেই আশঙ্কা করছেন হাসপাতালের একাংশ।

বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে সৌরবিদ্যুতের পরিকাঠামো বসেছে হাসপাতাল জুড়ে। ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং হচ্ছে। ‘উন্নতি’র তালিকা থেকে শুধু বাদ প়ড়ছে রোগী পরিষেবা। হাসপাতালের এক কর্তা জানান, ৭৮০ শয্যার হাসপাতালে ১০ জন মেডিক্যাল অফিসার এবং ৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ চিকিৎসক ঘাটতি রয়েছে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘চিকিৎসকের আসন ৭৫ শতাংশ ফাঁকা থাকলেও সরকারের হুঁশ নেই। এমসিআই-য়ের নিয়ম অনুযায়ী, ১৫ শতাংশের বেশি চিকিৎসক আসন ফাঁকা রেখে হাসপাতাল চালানো যায় না।’’

রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, অপর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকায় বহির্বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া কঠিন হয়। ভর্তির সময়েও নানা সমস্যা তৈরি হয়। এমনকী রোগীর চাপ বা়ড়লে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পেতেও অনেক দেরি হয়। এই সব সমস্যার কারণ হিসাবে বারবার উঠে আসে পর্যাপ্ত কর্মী ও চিকিৎসকের অভাবের প্রসঙ্গ।

ডেঙ্গি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক পরিকল্পনা করছে। বিগত বছরের ‘ভুল’ শুধরে নিয়ে ডেঙ্গির সমস্যা কমাতে প্রশাসনের উদ্যোগী হওয়ার কথা বারবার শোনা যাচ্ছে নবান্ন থেকে স্বাস্থ্য ভবন, বিভিন্ন মহলের কর্তাদের মুখে। তা হলে গত বছরে চিকিৎসার অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে রোগী মারা যাওয়ার মতো ঘটনার পরেও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের রোগী পরিষেবার পরিকাঠামো উন্নতিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি কেন?

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিকিৎসক ঘাটতি ব্যতিক্রম নয়। এ সমস্যা রাজ্য জুড়ে। জেলা থেকে শহর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের একাধিক বিভাগে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। দ্রুত সেই ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়। ডেঙ্গির মরসুমে আতঙ্কিত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য চাপ দেন। তার জেরেই সমস্যা বাড়ে। সেই চাপ এড়াতে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের দাওয়াই অবশ্য ‘পোস্টার’। ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়লে রোগী ভর্তির চাপ এড়াতে হাসপাতাল জুড়ে পোস্টার দেওয়া হবে। সেখানে উল্লেখ করা থাকবে, রক্তপাত শুরু হলে, প্লেটলেট দ্রুত কমতে শুরু করলে, কিংবা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে তবেই ভর্তি করা হবে। কিন্তু ফি-বছর ডেঙ্গির উপসর্গ বদলে যাচ্ছে, জীবাণুর চরিত্র বদল হচ্ছে। ফলে এই পোস্টার রোগীদের আতঙ্ক কতটা কাটাতে সাহায্য করবে সেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

ডেঙ্গি মোকাবিলা প্রসঙ্গে অবশ্য বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের প্রিন্সিপাল উচ্ছল ভদ্র বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি।’’

Mosquito Dengue Campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy