বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নাম করে কলকাতার এক বাসিন্দার থেকে এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতারকদের বিরুদ্ধে। ভুয়ো ইমেল আইডি তৈরি করে প্রতারকেরা যোগাযোগ করেছিলেন কলকাতার ওই বাসিন্দার সঙ্গে। হোয়াট্সঅ্যাপেও ব্রিটেনের নম্বর থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। হু-র পাশাপাশি এক বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম করেও যোগাযোগ করা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। ঘটনার তদন্তে দিল্লি থেকে তিন নাইজেরিয়ানকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।
গত মে মাসে কলকাতা পুলিশের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগকারী জানান, হু এবং এক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাঁর বিশ্বাস অর্জন করতে বিভিন্ন ভুয়ো নথিপত্রও দেখানো হয়। অভিযোগ, এই সব করে তাঁর থেকে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারকেরা। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে ব্রিটেনের কিছু হোয়াটস্অ্যাপ নম্বরের সন্ধান পান পুলিশের সাইবার থানার আধিকারিকেরা। যে মোবাইল থেকে ওই হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরগুলি ব্যবহার করা হচ্ছিল, তার আইপি অ্যাড্রেস ছিল নাইজেরিয়ার।
পরবর্তী সময়ে তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এ-ও জানা যায়, ওই হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্টগুলি প্রায় একই সময়ে দিল্লিতেও সচল ছিল। একটি ভারতীয় নম্বর ব্যবহার করে সেগুলি চালানো হচ্ছিল। পুলিশের অনুমান, নিজেদের ডেরা গোপন রাখতে ভিপিএন ব্যবহার করতেন প্রতারকেরা। সেই সূত্র ধরে দিল্লিতে হানা দেয় কলকাতা পুলিশের একটি দল। ওই অভিযানেই ধরা পড়েন এক মহিলা-সহ তিন জন। ধৃতেদের নাম পিটার মারসি ওলাউমি ওরফে সোফিয়া, কিমেকু কাইলিংস এবং আলেকজ়েন্ডার ডিভাইন। তাঁরা প্রত্যেকেই নাইজেরিয়ার নাগরিক বলে সন্দেহ পুলিশের। দিল্লির ঠিকানার পাশাপাশি তাঁদের নাইজেরিয়াতেও ঠিকানার সন্ধান মিলেছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ, বিদেশি নম্বর এবং আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে এই সাইবার প্রতারকেরা সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলেন। ধৃতদের থেকে ১২টি স্মার্টফোন, তিনটি কিপ্যাড ফোন, একটি রাউটার এবং একটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং এক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার লোগো, সিল নকল করতে এই ল্যাপটপ ব্যবহার করা হত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।