পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
ফোনে ‘জরুরি’ বার্তা পেয়ে আর দেরি করেননি কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক। তড়িঘড়ি ছুটেছিলেন দফতরের উদ্দেশে। গিয়ে দেখলেন, সেখানে হাজির খোদ সিপি!
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ টালিগঞ্জ পুলিশ লাইনে কলকাতা পুলিশের তিনটি ডিভিশনের অফিসে আচমকাই পরিদর্শনে যান পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। পুলিশ সূত্রের দাবি, তিন জন ডিসি সে সময়ে উপস্থিত থাকলেও অন্য কর্মীদের সংখ্যা ছিল কম। এই দেরিতে হাজিরার বিষয়টি ডিসিদের দেখতে বলেন সিপি।
এই খবরে রীতিমতো উদ্বেগে ভুগছেন পুলিশেরই অনেকে। তাঁরা বলছেন, দায়িত্ব নিয়েই নয়া পুলিশ কমিশনার বিভিন্ন থানায় বা দফতরে আকস্মিক পরিদর্শন শুরু করেছেন। সে দিন যদি কোনও কারণে অফিসে পৌঁছতে দেরি হয়, তা হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। এ দিন অবশ্য সিপি মৃদু বকুনি দিলেও কেউ শাস্তির মুখে পড়েননি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
লালবাজারের খবর, রাজীব কুমার সিপি পদে থাকার সময়ে এমন আচমকা পরিদর্শন সাধারণত করতেন না। পরিদর্শনের আগে তিনি জানিয়ে দিতেন। অন্য আধিকারিকেরা নিজেদের কাজ ঠিক মতো উতরে দিলেই সিপি সন্তুষ্ট থাকতেন।
পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা বলছেন, অনুজ সিপি পদে যোগ দেওয়ার পরে কাজের পদ্ধতি কিছুটা বদলেছেন। থানাগুলিতে ওসি বা অতিরিক্ত ওসি-র মধ্যে কোনও এক জনকে রাতেও থাকতে বলেছেন তিনি। কোনও ঘটনা ঘটলে সেখানে হাজির হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হওয়া পর্যন্ত পদস্থ কর্তাদের
ফিরতে বারণ করেছেন। পথেঘাটে পুলিশের উপস্থিতি যাতে নাগরিকেরা টের পান, সেই নির্দেশও দিয়েছেন অনুজ। বাড়াতে বলেছেন জনসংযোগও। বিভিন্ন এলাকায় টহলদারি বাড়াতে বলেছেন সিপি। এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ‘‘প্রযুক্তির পাশাপাশি প্রথাগত পুলিশি কাজকর্মের উপরেও জোর দিচ্ছেন নয়া সিপি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, গোড়া থেকেই অধস্তনদের সঙ্গে বৈঠকে দুর্ঘটনা কমানো এবং পুলিশের উপরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন পুলিশ কমিশনার। পুলিশের একাংশ বলছে, গত কয়েক বছরে পুলিশকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রেই তেমন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ দিনের পরিদর্শনের পরে অবশ্য পুলিশকর্মীদের কেউ কেউ বলছেন, বেশ কিছু অফিসেই আধিকারিকেরা সময়মতো আসেন না। সে দিকে কড়াকড়ি করতেই এই আকস্মিক পরিদর্শন শুরু করেছেন সিপি। যদিও পুলিশের একাংশের এ-ও বক্তব্য, প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে অদলবদল হলে এমন নানা পদ্ধতি চালু হয়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, কয়েক দিন পরে স্থিতাবস্থা ফিরে এসেছে।
প্রশ্ন উঠেছে, এ বারও কি ক’দিন পরে আগের ‘স্থিতাবস্থা’ ফিরে আসবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy