Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Illegal drugs

Drugs: ৭৫-এ লক্ষ্যমাত্রা ৭৫ হাজার কিলোগ্রাম মাদক উদ্ধার! চলছে অভিযান

কলকাতা বিমানবন্দর থেকেও এক বিদেশি নাগরিককে এনসিবি আটক করেছে বলে খবর। আপাতত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে।

স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২২ ০৬:২৮
Share: Save:

কখনও পুতুলের পেটে। কখনও জুতোর হিলে। কখনও আবার ঘড়ির ব্যাটারির নীচের অংশে বা মেক-আপের পাউডার ফেলে সেই বাক্সেই গুঁড়ো পাউডার হিসেবে! বাদ যায়নি ডিজে-র হেডফোনও। গত কয়েক বছরে শহরের নানা জায়গায় উৎসবের রাতের পার্টিতে হানা দিয়ে এমন ভাবেই লুকিয়ে রাখা মাদক ধরেছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, বাদ যাবে না স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানও। গোপন সূত্রে খবর নিয়ে ইতিমধ্যেই পার্টি-প্রবণ এলাকায় নজরদারি শুরু করেছেন তাঁরা। আজ, রবিবার স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে বলে খবর।

‘নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরো অব ইন্ডিয়া’র (এনসিবি) এক আধিকারিক বলেন, ‘‘স্বাধীনতার ৭৫ বছরে ৭৫ হাজার কিলোগ্রাম মাদক উদ্ধারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আমাদের। মাদক যে হারে বাজেয়াপ্ত হচ্ছে, তাতে স্বাধীনতা দিবসের আগেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে গিয়েছে। ১৫ তারিখ রাতের পরে হয়তো দেখা যাবে, উদ্ধার হওয়া মাদকের পরিমাণ এক লক্ষ কিলোগ্রাম ছাড়িয়েছে।’’ কলকাতা বিমানবন্দর থেকেও এক বিদেশি নাগরিককে এনসিবি আটক করেছে বলে খবর। আপাতত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মাদকের পাশাপাশি কলকাতার বেশ কিছু এলাকায় মাদকের খোঁজ বিদেশি ওই নাগরিকের সূত্রে পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

কলকাতা পুলিশের মাদক দমন শাখার এক আধিকারিক আবার জানাচ্ছেন, শহরের হোটেল, পানশালা এবং নাইট ক্লাবের পার্টিতে গাঁজা, ক্রিস্টাল মেথ, এলএসডি, হাসিস, কোকেন, হেরোইনের পাশাপাশি নাইট্রোসাম, স্প্যাজ়মোপ্রক্সিভন, সেকোবারবিটাল, ফেনমেট্রাজিন, মিথাকুইনোন, অ্যালপ্রাজ়োলাম, অ্যাটিভান এবং ক্যাম্পোসের মতো বহু অপ্রচলিত মাদকও বিক্রি হয়। এ রাজ্যে হেরোইন সাধারণত ঢোকে বনগাঁ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশ থেকে। অসম, মণিপুর ও নাগাল্যান্ড থেকে মূলত আসে গাঁজার জোগান। নেপাল থেকে আসে হেরোইন, গাঁজা এবং চরস। হিমাচলপ্রদেশ থেকেও চরসের জোগান আসে।

তবে অপ্রচলিত মাদক এই মুহূর্তে বিদেশ থেকে নানা কুরিয়র সংস্থার মাধ্যমে শহরে ঢুকছে বলে তাঁর দাবি। তাই পার্টি এলাকায় ‘সোর্স’ যুক্ত করার পাশাপাশি গত কয়েক মাস ধরে ব্যাপক নজরদারি চালানো হয়েছে কুরিয়র সংস্থার কাজকর্মেও। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘মাদক যে রয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত না-হয়ে কুরিয়রের পার্সেল খুলে দেখতে চাওয়া যায় না। তবে যে বাড়িতে সন্দেহজনক কুরিয়র যাচ্ছে, নজরদারি চালিয়ে সেখানে পৌঁছনো যায়। এর পরে তথ্যের ভিত্তিতে হানা দিলেই মাদক কারবারিকে ধরা যায়।’’

এই স্বাধীনতা দিবসেও মাদক দমন অভিযানে গোয়েন্দাদের গলার কাঁটা ‘ডার্ক ওয়েব’-এর ব্যবহার। সাইবার গবেষকেরা জানাচ্ছেন, অনলাইন ব্যবহারকারীদের বড় অংশ গুগল বা অন্য সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমেই কোনও কিছুর সন্ধান করেন। এটিকে বলা হয় ইন্টারনেটের সাদা অংশ। এতে ব্যবহারকারীর ‘সার্চ হিস্ট্রি’ এবং ‘আইপি অ্যাড্রেস’ সংরক্ষিত থাকে।

অনলাইনের অন্য অংশ ‘ডিপ ওয়েব’। এরই একটি ‘ডার্ক ওয়েব’, যেখানে ‘টর’ নামে একটি প্রক্সি সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ঢোকা যায়। এতে যে হেতু ‘সার্চ হিস্ট্রি’ এবং ‘আইপি অ্যাড্রেস’ সংরক্ষিত থাকে না, তাই ব্যবহারকারীর হদিস পাওয়া মুশকিল। এই পথেই হাতে আসে শিশু পর্নোগ্রাফি, মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, ব্যাঙ্ক বা সোশ্যাল মিডিয়ার হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্টের তথ্য। লেনদেন চলে বিটকয়েনে (ক্রিপ্টো কারেন্সি)।

এই রহস্য কাটবে কবে? লালবাজারের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘ডার্ক ওয়েব রহস্য প্রায় সমাধান হওয়ার পথে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal drugs Drugs Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE