Advertisement
E-Paper

ভাড়াটের তথ্য পেতে কোমর বাঁধছে পুলিশ

যে কেউ নিজের ঘর ভাড়া দিতেই পারেন যে কাউকে। কিন্তু সেই ভাড়াটের পরিচয় সম্পর্কে সবিস্তার জানতে এ বার আদাজল খেয়ে নামছে কলকাতা পুলিশ।

শিবাজী দে সরকার ও সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০০:৪২

যে কেউ নিজের ঘর ভাড়া দিতেই পারেন যে কাউকে। কিন্তু সেই ভাড়াটের পরিচয় সম্পর্কে সবিস্তার জানতে এ বার আদাজল খেয়ে নামছে কলকাতা পুলিশ। ভাড়া দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাড়াটে সম্পর্কে তথ্য বাড়ির মালিকই উপযাচক হয়ে স্থানীয় থানায় দেবেন বলে লালবাজার আশা করছে। আর না দিলে? সে ক্ষেত্রে পুলিশ এ বার আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। যে সব বাড়িওয়ালা এর অন্যথা করবেন, তাঁদের হাজতবাস বা জরিমানা হতে পারে।

নির্দেশ জারি হয়েছিল ২০০৮ সালে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার তাঁর এগ্‌জিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাবলে ওই নির্দেশ দেন। আট বছর পরে এখন হঠাৎ তা কার্যকর করতে এমন উদ্যোগ কেন?

লালবাজার সূত্রেরই খবর, আসলে গরজ, থুড়ি সন্ত্রাস বড় বালাই। কলকাতার পাশের ঘরেই জঙ্গি হামলা হয়েছে। অল্প দিনের ব্যবধানে পরপর দু’বার। বাংলাদেশের গুলশন ও কিশোরগঞ্জে জঙ্গি হামলার চক্রীদের একাংশ এ রাজ্যেই আছে বলে গোয়েন্দাদের একাংশ সন্দেহ করছেন। আবার ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গি সন্দেহে ধৃত, বীরভূমের লাভপুরের যুবক মুসা গ্রেফতার হওয়ার পর তার কাছ থেকে এ রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে একাধিক জঙ্গি চাঁইয়ের নিয়মিত আনাগোনার কথা জানা গিয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় চিকিৎসার জন্য আসেন। তাঁদের একটা বড় অংশ ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন মাসের পর মাস, রোগীর সঙ্গে আসা আত্মীয়েরাও থাকেন সেখানে। ই এম বাইপাস লাগোয়া পূর্ব যাদবপুর ও পঞ্চসায়র থানা এলাকার বিস্তীর্ণ তল্লাটে বাংলাদেশ থেকে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের ঘর ভাড়া দিয়ে মোটা রোজগার করেন অনেকেই।

কিন্তু কখনও সত্যিকার রোগী হিসেবে, কখনও রোগীর ভেক ধরে আবার কখনও রোগীর আত্মীয় হিসেবে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র কয়েক জন সদস্য সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতায় ঘর ভাড়া নিয়ে ছিল বলে গোয়েন্দারা জেনেছেন। তবে অনেক পরে। ততক্ষণে তারা আর সেখানে নেই। আবার যে ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি-র শিকড়ের অস্তিত্ব জানা গিয়েছিল, সেই খাগড়াগড় বিস্ফোরণে নিহত জঙ্গি চাঁই শাকিল গাজি মেটিয়াবুরুজে বেশ কিছু দিন ভাড়াটে হিসেবে ছিল।

বিপদ তাই দরজায় কড়া নাড়ছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। লালবাজার সূত্রে খবর, বাংলাদেশের নাগরিকেরা ভাড়াটে হিসেবে কিছু দিনের জন্য শহরের যে সব তল্লাটে ওঠেন, সে সব জায়গায় ঘন ঘন ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ শুরু করেছে পুলিশ। গুলশনে হামলার পরেই। যার জোরে এটা হচ্ছে, ২০০৮-এ কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সেই নির্দেশে জানানো হয়, কলকাতা কমিশনারেট এলাকায় কেউ নিজের বাড়িতে ভাড়াটে বা পরিচারিকা রাখলে স্থানীয় থানাকে তার বিবরণ দিতে হবে। থানা, পুলিশ কিয়স্ক ও টহলদার গাড়িতে একটি ফর্ম পাওয়া যায়। সেই ফর্মে বাড়ির মালিককে নিজের এবং ভাড়াটেদের বিবরণ দিতে হয়। এই বিধি অমান্য করা হলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারা অনুযায়ী বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশ পদক্ষেপ করবে বলেও জানানো হয়েছিল নির্দেশে।

তবে এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘বাড়ির মালিক ভাড়াটের তথ্য দেওয়ার পরেও কিছু খামতি থেকে য়ায়। ওই ভাড়াটের ঘরে কোনও আত্মীয় এলে সেই তথ্য বাড়ির মালিক পুলিশকে জানাতেও বাধ্য নন। তা ছাড়া, তিনি অত খুঁটিনাটির খোঁজ রাখবেনই বা কী ভাবে?’’ সে জন্যই বাড়ি বাড়ি গিয়ে আচমকা তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Kolkata police tenant
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy