E-Paper

‘থিমের খবর’ নিতে শুরু করল পুলিশ, নির্দেশিকা সব মানা হবে তো?

পুজো কমিটিগুলিকে বলা হচ্ছে, মণ্ডপে ঢোকার থেকে বেরোনোর পথ বেশি প্রশস্ত রাখতে হবে। কোনও পথের সামনেই হকার বসানো চলবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৫:৪০
কলকাতা পুলিশ।

কলকাতা পুলিশ। —ফাইল চিত্র।

কলকাতার দুর্গাপুজোর ‘খবর’ নেওয়া শুরু করল পুলিশ। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের সমন্বয় বৈঠকে পুলিশকে বলেছিলেন, পুজো কমিটিগুলির থেকে থিম জেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে। এর পরেই কলকাতা পুলিশের তরফে বিভিন্ন ডিভিশনের পুজো কমিটিগুলির কর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কী থিম হচ্ছে, মণ্ডপের আয়তন কত, কী ধরনের আলো ও শব্দের ব্যবহার হচ্ছে— এই সব তথ্য দ্রুত জানাতে বলা হয়েছে তাঁদের। এর পরে পুলিশ ভিড় নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করবে। সেই মতো কাজ হয়েছে কিনা, তা জানিয়ে মুচলেকা দিতে হবে থানায়। সেই সঙ্গেই শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো অনুদানের টাকা পেতে গত বছরের ‘ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট’ (কোন খাতে কত খরচ হয়েছে, সেই শংসাপত্র) জমা দেওয়ার তোড়জোড়।

এরই মধ্যে আবার গত বছর ‘রামমন্দির’ বানিয়ে ভিড়ের নিরিখে শোরগোল ফেলে দেওয়া মধ্য কলকাতার দুর্গাপুজো সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের তরফে পক্ষপাতমূলক পদক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে। ওই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তথা বিজেপির পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষের দাবি, ‘‘মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলার আগে গত ১৮ তারিখেই মুচিপাড়া থানা চিঠি দিয়ে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছিল। থিমও জানাতে বলা হয়েছিল। এমন চিঠি অন্য কোনও পুজো কমিটি পেয়েছে বলে জানি না। আসলে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ যদিও এ বিষয়ে সেন্ট্রাল ডিভিশনের ডিসি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট দিনে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের খুঁটিপুজো ছিল। তাই তার আগে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’ লালবাজারের দাবি, শহরের সমস্ত পুজো কমিটির সঙ্গেই কথা বলা হচ্ছে। যে সমস্ত পুজোয় গত বছর ভিড় সামলাতে সমস্যা হয়েছিল, তাদেরই আগাম চিঠি দিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শ্রীভূমির পুজো বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার মধ্যে হলেও ওই পুজোর জন্য ভিআইপি রোডে যান চলাচলে সমস্যা হয়। তাই মুখ্যমন্ত্রী অতীতে কলকাতা পুলিশকেই বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফলে লালবাজারের তরফে চিঠি পাঠানো হচ্ছে শ্রীভূমির পুজোকর্তাদেরও।

পুজো কমিটিগুলিকে বলা হচ্ছে, মণ্ডপে ঢোকার থেকে বেরোনোর পথ বেশি প্রশস্ত রাখতে হবে। কোনও পথের সামনেই হকার বসানো চলবে না। সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়াতে হবে গত বছরের থেকে। পুজো চত্বরে ঢোকা থেকে মণ্ডপের মধ্যে প্রতিমা দর্শন পর্যন্ত পথ প্রশস্ত করে তার মধ্যেই পুলিশের জন্য মঞ্চ তৈরি করতে হবে। যাতে সেখান থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে পুলিশ। এর পাশাপাশি, পুজোর দিনগুলিতে ব্যস্ত সময়ে অন্তত ২৫০ জন এবং অন্য সময়ে অন্তত ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রাখতে বলা হচ্ছে। লেজ়ার-সহ সমস্ত রকম আলো ও বিশেষ শব্দের ব্যবহার করতে হলে পুলিশের আগাম অনুমতি নিতে হবে। কোনও ভাবেই মণ্ডপের আলো নেভানো চলবে না। এমনটা করতে হলে পুলিশের অনুমতি বাধ্যতামূলক।

কিন্তু এর পরেও প্রশ্ন, পুজো কমিটিগুলি এই সমস্ত নির্দেশিকা মানবে তো? না কি নেতা-দাদাদের অধীনেই শহরের সমস্ত বড় পুজো হয় বলে তাঁদের কল্যাণে সবই খাতায়-কলমে থেকে যাবে? ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসুর দাবি, ‘‘সমস্ত পুজো কমিটিই পুলিশের নির্দেশ মেনে চলবে। যারা চলবে না, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তারাই দায়িত্ব নেবে!’’ সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের অভিযোগ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পক্ষপাতের কোনও ব্যাপার নেই। যাঁরা গত বছর গন্ডগোল পাকিয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কড়া হচ্ছে পুলিশ।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja Theme Durga Puja

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy