E-Paper

সাইবার প্রতারণা বাড়ছে পুজোর মুখে, সতর্কতার বার্তা পুলিশের

পুজোর মুখে কখনও কেনাকাটায় কুপন জেতার সুযোগ, আবারকখনও হোটেল বুকিংয়ে ‘বিশেষ ছাড়’-এর মোড়কের আড়ালে সক্রিয় হচ্ছে সাইবার জালিয়াতেরা।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৪০
লাল বাজার।

লাল বাজার। ফাইল চিত্র।

পরিবারের সঙ্গে ছুটিতে বেড়াতে যেতে ইন্টারনেটে হোটেলের খোঁজ শুরু করেছিলেন এক প্রৌঢ়। সেখান থেকেই কয়েকটি নম্বর জোগাড় করেন তিনি। এর পরে বেশি ছাড়ে হোটেল বুকিং করতে সেই নম্বরেযোগাযোগ করতেই সাইবার প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে যান। ঘর বুকিং তো দূর, প্রায় ৭০ হাজার টাকা খোয়াতে হয়েছে প্রৌঢ়কে। বন্দর এলাকার বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় পুলিশে অভিযোগও জানিয়েছেন।

পুজোর মুখে কখনও কেনাকাটায় কুপন জেতার সুযোগ, আবারকখনও হোটেল বুকিংয়ে ‘বিশেষ ছাড়’-এর মোড়কের আড়ালে সক্রিয় হচ্ছে সাইবার জালিয়াতেরা।একাধিক সাইবার প্রতারণার ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ। তাই, অনলাইনে যাঁরা কেনাকাটা করেন, পুজোর মুখে তাঁদের সতর্ক করছেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা। অতিরিক্ত বা অস্বাভাবিক ছাড়ের কোনও বিজ্ঞাপন, অজানা কোনও নম্বর থেকে আসা লিঙ্ক বা ফোননিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

পুজোয় বিভিন্ন জায়গায় হোটেলের চাহিদা বৃদ্ধি পায় কয়েক গুণ।লাফিয়ে বাড়ে কেনাকাটাও। অনেকেই সহজে হোটেল বুক করতে বা ভিড় এড়িয়ে কেনাকাটা করতে অনলাইন মাধ্যম বেছে নেন। ক্রেতা টানতে অনলাইনে বিভিন্ন সংস্থার তরফে বিপুল ছাড় দেওয়া হয়। থাকে বিশেষ ছাড়ে কুপন জেতার সুযোগও। অভিযোগ,এরই সুযোগ নিচ্ছে সাইবার প্রতারকেরা। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করে নামী সংস্থার নামেভুয়ো বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রতারকেরা। সেখানে বড় ছাড়ের বিজ্ঞাপনী ‘টোপ’ দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। প্রতারকদেরপাতা সেই ফাঁদে পা দিলেই সর্বস্ব খোয়াতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এইধরনের একাধিক অভিযোগ সম্প্রতি জমা পড়েছে। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, নামী সংস্থারলোগো ব্যবহার করে হুবহু নকল ওয়েবসাইট বানিয়ে প্রতারণা করছে দুষ্কৃতীরা। ইতিমধ্যেই লালবাজারের নজরে আসা এমনএকাধিক ওয়েবসাইট চিহ্নিত করা হয়েছে।

লালবাজারের সাইবার বিভাগ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে,শুধু কেনাকাটা বা হোটেল বুকিংয়ের ফাঁদই নয়, গাড়ির কাগজপত্রেরমেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার নাম করেও মেসেজ পাঠিয়ে একাধিক সাইবার প্রতারণার অভিযোগ আসছে। কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখায় কর্মরত এক পুলিশকর্মীজানাচ্ছেন, কখনও বলা হচ্ছে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কাগজেরমেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কখনও কারসাজি করে জরিমানার মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। ঘরে বসে সমস্যা মেটাতে ‘লিঙ্ক’-ও দেওয়াহচ্ছে। তাতে ক্লিক করলেই ব্যবহারকারীর অজানতে তাঁর মোবাইলের নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে প্রতারকদেরদখলে।

'ইন্ডিয়ান স্কুল অব অ্যান্টি হ্যাকিং’-এর অধিকর্তা তথা সাইবারগবেষক সন্দীপ সেনগুপ্ত যদিও বিষয়টিকে নতুন কৌশলের মোড়কে পুরনো অপরাধ হিসেবেইদেখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সমাজমাধ্যমে বার বার যে ব্যানারগুলি আমরা দেখি, খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, তার অধিকাংশের পিছনেসাইবার প্রতারকদের কারসাজি রয়েছে। ফলে ব্যানারগুলিতে ক্লিক করলেই জালিয়াতদেরখপ্পরে পড়তে হবে। একই ভাবে অনলাইনে হোটেলের বিজ্ঞাপনের আড়ালেও পাতা রয়েছে ফাঁদ।বিভিন্ন ভাবে সাইবার প্রতারকেরা আমার, আপনার তথ্য হাতে পাচ্ছে। তাই এখন নিজেদের সতর্কহতেই হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lal Bazar Cyber Crime

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy