Advertisement
E-Paper

ফেলো কড়ি তোলো জল

জলের দরের হিসেব কষছে কলকাতা বন্দর।কলকাতা পুরসভার কাছে তাদের দাবি, প্রতি হাজার গ্যালন জলের জন্য এ বার থেকে আড়াই টাকা করে দিতে হবে। তার পরেই গঙ্গা থেকে জল নিতে পারবে পুরসভা।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৯

জলের দরের হিসেব কষছে কলকাতা বন্দর।

কলকাতা পুরসভার কাছে তাদের দাবি, প্রতি হাজার গ্যালন জলের জন্য এ বার থেকে আড়াই টাকা করে দিতে হবে। তার পরেই গঙ্গা থেকে জল নিতে পারবে পুরসভা। যার অর্থ, গঙ্গা থেকে যে জল তুলে শোধন করে পরিস্রুত পানীয় জল প্রস্তুত করে পুরসভা, সেই জল ব্যবহারের জন্য পুরসভাকে দাম দিতে হবে। সম্প্রতি কলকাতা পুর প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এমনই দাবি করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আর বন্দর-কর্তাদের ওই দাবি মেটাতে হলে কত টাকা দিতে হবে পুরসভাকে? বন্দরের পাঠানো চিঠিতে যা লেখা হয়েছে তাতে গার্ডেনরিচে নতুন ছোট একটি জলপ্রকল্পের জন্যই বছরে ১১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা দিতে হবে। আর মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দেওয়া হিসেবে, কলকাতায় ৫০ লক্ষ মানুষকে পানীয় জল দিতে প্রতিদিন ৫০ কোটি গ্যালন অপরিশোধিত জল তুলতে হয়। ১০০০ গ্যালনের জন্য আড়াই টাকা করে দিতে হলে কলকাতা শহরের বাজেটের পুরো টাকা এ বার থেকে জল কিনতেই চলে যাবে।

মঙ্গলবার কলকাতা পুরভবনে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ বাবুর বৈঠক হয়। সেখানেই গঙ্গার জল ব্যবহার করতে গেলে বন্দরকে কলকাতা পুরসভার পয়সা দেওয়ার বিষয়টি ওঠে। বন্দরের চেয়ারম্যানকে শোভনবাবু জানিয়ে দেন, গঙ্গা থেকে জল তুলে তা শোধন করে পানযোগ্য করে বিনা পয়সায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় পুরসভা। এমন একটা মহান কাজে জলের দাম চেয়ে চিঠি দেওয়ার কারণ কী?

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ কোটি টাকারও বেশি বকেয়া কর চেয়ে বছরখানেক ধরে বন্দর কর্তৃপক্ষকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে পুর প্রশাসন। শহরে জমির লিজগ্রহীতাদের কাছ থেকে পুর কর আদায় করেও তা পুরসভায় জমা না দেওয়ার জন্য ওই টাকা বকেয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এর উপরে দিন কয়েক আগে বন্দরের এলাকায় বেশ কয়েকটি রাস্তার হাল খারাপ হওয়ায় পুরসভা তা সারিয়ে দিতে অনুরোধ করেছিল বন্দরকে। কিন্তু তাঁরা তা না সারানোয় পুরসভা নিজেরাই তা সংস্কারের কাজ হাতে নেয়।

এ বিষয়ে প্রকাশ্যেই মেয়র শোভনবাবু জানিয়ে দেন, বার বার বন্দর কতৃর্পক্ষকে বলা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। এ বার রাস্তা সারানোর কাজ পুরসভাই করবে। এবং সেই খরচের টাকা না মেটালে ওই রাস্তার কর্তৃত্ব ভবিষ্যতে বন্দর পাবে না এমন হুমকিও দিয়েছিলেন মেয়র।

পুরসভা সূত্রের খবর, দু’পক্ষে সংঘাত বাড়ে তার পর থেকেই। এ বার পুরসভার কাছে গঙ্গার জল ব্যবহারের জন্য পয়সা চেয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ পাল্টা চাপ দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। এর পিছনে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের রাজনীতির লড়াই রয়েছে বলে পুরসভার অন্দরমহলের ধারণা। এ বার পাল্টা আঘাত হিসেবে গঙ্গার জলকেই বেছে নিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। আসলে এই সংঘাতের পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক খেলা।

কী বলছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ?

কলকাতা পুরসভাকে জলের দাম চেয়ে চিঠি দেওয়ার ঘটনা স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান কৃষ্ণ বাবু। তিনি বলেন, ‘‘বন্দরের আইনে এ রকম কথা বলা রয়েছে। তবে যে হেতু ওই জল শহরবাসীর প্রয়োজনে ব্যবহার হচ্ছে, তাই বিষয়টি বন্দরের বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার জন্য তোলা হবে।’’

জলের দাম নিয়ে জল আরও ঘোলা হতে পারে, এমনই আশঙ্কা করছেন পুর আধিকারিকেরা।

Port of Kolkata Kolkata Municipal Corporation Water The Ganges
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy