রকমারি
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ‘তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়ে এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছিলেন,’ মনে করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রণববাবুকে নিয়ে এবং জলঘড়ি পত্রিকার (সংখ্যা সম্পাদক: স্বাগতা দাস মুখোপাধ্যায় ও উৎপল ঝা) ক্রোড়পত্রে নবনীতা দেব সেন, সুকান্ত চৌধুরী, স্বপন চক্রবর্তী, অমলকুমার মুখোপাধ্যায়, প্রভাতকুমার দাশ প্রমুখের রচনা— বুদ্ধিমান, অন্তর্মুখী, পরিশ্রমী এক বাঙালির পরিচয়। ‘বাংলার মিষ্টি ও মিষ্টান্নশিল্পী’ নিয়ে অন্য ক্রোড়পত্রটিতে সুকুমার সেন, গৌতম ভদ্রের ধ্রুপদী রচনার পাশে হরিপদ ভৌমিক, উর্বী মুখোপাধ্যায়, অরুণিমা রায়চৌধুরীর লেখায় সুস্পষ্ট মিষ্টি ও বঙ্গসংস্কৃতির অচ্ছেদ্য গ্রন্থিটি। এ ছাড়াও আছে শ্রাবন্তী ভৌমিকের অনবদ্য প্রবন্ধ ‘দাদু যখন শ্রী মণীন্দ্রকুমার ঘোষ’, আর আনিসুজ্জামান, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, দেবেশ রায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে স্মরণ-নিবন্ধ।
হোটেল কালী
বার্লিনের গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রী থেরেসা স্ট্রোয়েটজেস ২০১৮-র অক্টোবরে কলকাতায় এসেছিলেন গ্যোয়টে ইনস্টিটিউটের এক প্রকল্পে। এ দেশের সুরের সঙ্গে নিজের সুর মেলানোর তাগিদে তাঁর আলাপ তিন শিল্পীর— ইলেকট্রনিক মিউজ়িক প্রডিউসার বরুণ দেশাই, শিল্পী ও গীতিকার সুযশা সেনগুপ্ত ও ডাবল বেসিস্ট দেবজিৎ মহলানবিশ। চার জনের ‘জ্যামিং সেশন’-এর ধ্বনিমন্থনে জন্ম ইন্দো-জার্মান অ্যালবাম ‘হোটেল কালী’র। দুই গোলার্ধের সুর-তালের সেতুবন্ধে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর সুরস্পর্শ। নামকরণে কালী, অন্তরে আছে ‘ইগলস’ ব্যান্ডের দুনিয়া কাঁপানো গানেরও অনুষঙ্গ। ৪ জুন গ্যোয়টে ইনস্টিটিউট-ম্যাক্সমুলার ভবনের ফেসবুক পেজে বসেছিল অ্যালবাম প্রকাশের আন্তর্জাল-আসর।
বিদায়
পড়াশোনা পটনায়। মেঘনাদ সাহার ছাত্র, পরমাণু বিজ্ঞানী শান্তিময় চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ের পর কলকাতা আসেন এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়। কিছু কাল আমেরিকাবাস, আবার এ শহরে ফেরা, কলেজে পড়ানো। অচিরেই লেখায় মন দেন, প্রেমেন্দ্র মিত্রের মনুদ্বাদশ ও পিঁপড়ে পুরাণ-এর ইংরেজি অনুবাদক এণাক্ষী লিখেছেন বহু ছোটগল্পও। খেলার আসর পত্রিকার বিজ্ঞান বিভাগ পরিচালনা, জনপ্রিয় বিজ্ঞান-সাহিত্য পরমাণু জিজ্ঞাসা রচনা, রবীন্দ্র ও বিদ্যাসাগর পুরস্কার জয়— নানা কৃতিত্ব। ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পূর্ব পশ্চিম, বিক্রম শেঠের আ সুটেবল বয় বাংলায়। বাংলা কল্পবিজ্ঞানকে আধুনিক করে তোলায় তাঁর অবদান কম নয়। ৮৬ বছর বয়সে চলে গেলেন, গত ২৫ মে।
রবিসমীপে
রবীন্দ্রনাথের সময় শান্তিনিকেতনে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির আভাস ছিল, মত ইন্দিরা গাঁধীর। বিশ্বভারতীতে পড়ার সময় দেখেছেন কবি দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথাও বলতেন। ১৯৮২-তে ইতিহাসবিদ ও রবীন্দ্র-গবেষক উমা দাশগুপ্তকে দেওয়া ইন্দিরা গাঁধীর সাক্ষাৎকারে মেলে এ তথ্য। মৈত্রেয়ী দেবী, রাণী চন্দ, শান্তিদেব ঘোষ, সত্যজিৎ রায়-সহ শান্তিনিকেতনের বহুবিশ্রুত প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন উমা। তাঁর খাতা, চিঠি, বই তিনি দিয়েছেন জীবনস্মৃতি ডিজিটাল আর্কাইভকে, তা থেকেই তৈরি হয়েছে জীবনস্মৃতির সাক্ষাৎকার পুস্তিকা সিরিজ: ১, সম্প্রতি প্রকাশ করলেন সোমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। লেখিকার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অরিন্দম সাহা সরদার।
জীবনশিল্প
আঁধারের সময়েও কি গান হবে? হবে তো, গান হবে— আঁধারসময়েরই গান। যে কথা একদা লিখে গিয়েছেন বের্টোল্ট ব্রেশট, অতিমারি আচ্ছন্ন এই সময়ে বারে বারেই তা ফিরে আসছে শিল্পের বিবিধ পরিসরে, শিল্পীর মননেও। শিল্প ভাবায়, কাঁদায়, আবার মনের আরামের পাশাপাশি হয়ে উঠতে পারে জীবনের আরোগ্য, প্রাণের সহায়। এই ভাবনা থেকেই বরেণ্য শিল্পী যোগেন চৌধুরী কৃত ও স্বাক্ষরিত একগুচ্ছ সেরিগ্রাফ (নীচের ছবিতে তারই একটি) নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ইমামি আর্ট। ছবিগুলিতে ভাস্বর শিল্পীর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য— সূক্ষ্ম রেখার বুনোটে আঁকা দেবতা বা মানবপ্রতিমা, কালো তুলির জোরালো আঁচড়ের সঙ্গে হালকা রঙের প্রায় স্বচ্ছ মসৃণ প্রলেপে ক্যালিগ্রাফিসুলভ ছন্দের স্ফূর্তি। শুধু দেখার নয়, আছে ছবি সংগ্রহের সুযোগও। বিক্রয়মূল্যের নির্দিষ্ট অংশ ব্যয়িত হবে কোভিড-ধ্বস্ত দুর্গত মানুষের পুনর্বাসনে। ‘লিরিক্যাল সেনসিবিলিটিজ়’ নামের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে গত ৬ জুন, দেখা যাবে আজ পর্যন্ত, সংস্থার ওয়েবসাইটে।