হাওড়া সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি ছোট পণ্যবাহী গাড়ি। এক পুলিশকর্মী সেই গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। চালকের মুখ দেখা না গেলেও দেখা যাচ্ছে, তাঁর হাতে রয়েছে কিছু টাকা। সামনে দাঁড়িয়ে আর এক পুলিশকর্মী।গাড়ির ভিতরে থাকা চালককে মুখে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আমি পালাচ্ছি না স্যর! দশ টাকা কম আছে। উনি এরকম করছেন। আমার কাছে নেই তো আমি কী করব?’’ ওই কথার মাঝেই চালকের হাতের টাকানিয়ে নিলেন ওই পুলিশকর্মী। তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে যে পুলিশকর্মী, তিনিই হেঁটে গাড়ির দিকে আসছিলেন। তাঁকেই চালক ওই কথাগুলি বলছিলেন। সম্প্রতি এমনই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে (যার সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি )।
পুলিশের টাকা নেওয়ার এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে বির্তক তৈরি হতেই অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করল লালবাজার। ওই দু’জন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, উত্তর বন্দর থানায় কর্মরত ওই দু’জনেরমধ্যে এক জন এএসআই, অন্য জন কনস্টবেল।
পুলিশেরই একাংশ জানিয়েছে, হাওড়া সেতুতে গাড়ি দাঁড় করিয়ে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কিছু দিন আগে এক পুলিশকর্তা নিজে হাওড়া সেতু পরিদর্শনে গিয়ে বেআইনি কাজের অভিযোগে দুই পুলিশকর্মীকে ধরেছিলেন। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণও করা হয়।
লালবাজারের একটি অংশ জানিয়েছে, শনিবারের ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই খোঁজখবর নিতে শুরু করেন পুলিশকর্তারা। প্রাথমিক ভাবে অনুসন্ধান করে ভিডিয়োর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা জানান, পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগ কড়া ভাবেই দেখা হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই রাস্তায় বিতর্কিত কাজের জন্য ভাইরাল হয়ে যাচ্ছেন পুলিশকর্মীদের অনেকে। এর আগে বাঁশদ্রোণীতে এক পুলিশকর্মীর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই সময়েও কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান ওই কর্তা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)