অস্বাভাবিক মৃত্যু বা খুনের ঘটনায় দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে প্রথম যে পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে যাবেন, তিনি কী করবেন— সে ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছে লালবাজার। — প্রতীকী চিত্র।
আর জি কর-কাণ্ডে অভিযোগ উঠেছিল, চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে টালা থানায় এফআইআর দায়ের করেছিল পুলিশ। এমনকি, ঠিক সময়ে জেনারেল ডায়েরিও করা হয়নি। সব কিছুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। এমতাবস্থায় অস্বাভাবিক মৃত্যু বা খুনের ঘটনায় দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে প্রথম যে পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে যাবেন, তিনি কী করবেন— সে ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছে লালবাজার। সূত্রের খবর, গত মাসে ২৭ দফা সেই নির্দেশিকা কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানায় পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশের একাধিক থানার আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এই নিয়ম মেনে চলতে পুলিশকর্মী থেকে বড় আধিকারিক, সকলকেই বলা হয়েছে। দেহ উদ্ধারের খবর পেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নির্দেশিকা মেনেই কাজ করা হচ্ছে এখন।
সূত্রের দাবি, ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যু, খুন বা দেহ উদ্ধারের খবর পেলে থানায় থাকা পুলিশ অফিসারকে প্রাপ্ত তথ্য জিডি-তে রেকর্ড করতে হবে। কী ভাবে তথ্য জানতে পেরেছেন, কে তথ্য দিয়েছেন বা তথ্যের বিবরণ— সব জিডি-তে লিখে তার পরে ঘটনাস্থলে যেতে বলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতের পরিবার থাকলে তাদের থেকে লিখিত অভিযোগ নিতে হবে। পরিবার না থাকলে সেখানে উপস্থিত কোনও ইচ্ছুক ব্যক্তির থেকে লিখিত অভিযোগ নিতে হবে। এর পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আধিকারিকের অনুমোদন করিয়ে তা নিয়ে থানায় গিয়ে এফআইআর করতে হবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে। পুলিশ অফিসারেরা জানান, পরিবারের কেউ না থাকলে ঘটনাস্থলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির থেকে অভিযোগ নিতে বলা হয়েছে। পরে তা নিয়ে থানায় গিয়ে এফআইআর লিখে সেই নম্বর নিয়ে ঘটনাস্থলে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই গোয়েন্দা বিভাগ, ওসি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় সেই খবর জানাতে হবে। ঘটনাস্থলে যেতে সঙ্গে নিতে হবে আর এক জন পুলিশ অফিসারকে। এর পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমেই পিও কর্ডনিং টেপ দিয়ে জায়গাটি ঘিরে ফেলতে হবে। ক্যামেরায় সেখানকার ছবি তুলতে হবে। এই ধরনের টেপ না থাকলে দড়ি, গার্ডরেল ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। এর সঙ্গেই পুলিশকর্মীদের পাহারায় রাখতে হবে, যাতে বাইরের কেউ সেখানে প্রবেশ করতে না পারে। ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষী ছাড়া বাকিদের সরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে মৃতের (যদি পাওয়া যায়) বিস্তারিত ছবি ও ভিডিয়ো তুলবেন। এ ছাড়া, মৃতদেহ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সে দিকে তাঁকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম মেনে ঘটনাস্থল থেকে সব কিছু বাজেয়াপ্ত করতে হবে, যা ভিডিয়ো করে রাখতে হবে। এমনকি, ওই সব জিনিস ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো না গেলে তা থানার মালখানায় নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে রাখতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।
ময়না তদন্তের জন্য যে সব জায়গায় অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন, তা-ও নিতে বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। নির্ধারিত সময়ের পরে (বিকেল ৪টের পরে) ময়না তদন্ত করতে প্রয়োজনীয় অনুরোধপত্র পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট বিভাগে এবং উপ-নগরপালের কাছ থেকেও অনুমতি নিতে হবে। উল্লেখ্য, আর জি কর-কাণ্ডে মৃতার দেহের ময়না তদন্ত নির্ধারিত সময়ের পরে করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
একাধিক থানা সূত্রের খবর, বিতর্ক এড়াতে সব অফিসারকে ওই নির্দেশিকা মানতে বলা হয়েছে। ওই নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা দেখতে বলা হয়েছে থানার ওসিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy