যাদবপুরের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায় (সামনে), কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজার (পিছনে) — ফাইল ছবি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। বুধবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে তলব করেছিলেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন)। স্নেহমঞ্জু লালবাজারে হাজির হলেও পদত্যাগের দাবিতে তাঁকে ঘেরাও করে রেখেছেন পড়ুয়ারা, এই কারণ দেখিয়ে তলব এড়ান রজত। এই প্রেক্ষিতে লালবাজার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টের সময় ডেকে পাঠানো হল রজতকে। রেজিস্ট্রারকে পুনরায় ডাকার কথাও ভাবছেন লালবাজারের কর্তারা। বেশ কিছু নথিও রজতের কাছে চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর।
বুধবার লালবাজার গিয়েছিলেন স্নেহমঞ্জু। সেখানে ছিলেন প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। যদিও পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ছাত্রাবাস এবং তার পরিচালন সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের কোনও জবাব দিতে পারেননি রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু। পুলিশকে তিনি জানিয়েছিলেন, ডিন অফ স্টুডেন্টস রজতই সে সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন। কিন্তু ঘেরাও হয়ে থাকায় বুধবার পুলিশের তলবে সাড়া দিতে পারেননি রজত। যাদবপুর থানায় ফোন করে রজত জানিয়েছিলেন, তাঁকে পড়ুয়ারা ঘেরাও করে রেখেছেন। তাই তিনি পুলিশের তলবে সাড়া দিয়ে লালবাজার যেতে পারছেন না। এই প্রেক্ষিতে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রমৃত্যু সংক্রান্ত যে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাওয়া দরকার সে জন্য প্রয়োজনীয় সকলকেই তলব করা হবে। সেই তালিকায় একেবারে উপরের দিকে রয়েছেন রজত। একই সঙ্গে রেজিস্ট্রারকেও আবার ডেকে পাঠানো হবে। জানা যাচ্ছে, বেশ কিছু নথিও রজতের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ডিন রজত বুধবার দুপুর থেকে ঘেরাও হয়ে আছেন। পড়ুয়াদের একটি অংশ ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার জেরে ডিনের পদত্যাগ চেয়ে ঘেরাও কর্মসূচি চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেলা বারোটায়, এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও ঘেরাও চলছে বলে জানা যাচ্ছে। বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের দাবি, যত ক্ষণ না ডিন পদত্যাগ করছেন, তাঁদের ঘেরাও কর্মসূচি চলবে। তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যথেষ্ট উত্তেজনা রয়েছে। সামগ্রিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মনে করছে একাংশের পড়ুয়া।
লালবাজারের কর্তারা মনে করছেন, ডিনের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বললে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে। প্রসঙ্গত, এর আগে দু’বার ডিনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত যে ভাবে এগোচ্ছে তাতে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হতে পারে, এমনটাই মনে করছেন পুলিশকর্তারা। কারণ, পুলিশের কাছে বহু প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। পুলিশ মূলত জানতে চাইছে, ঘটনার দিন রাতে ডিনের সঙ্গে কার কার কথোপকথন হয়েছিল। তাতে কী কথা হয়েছিল। পাশাপাশি লালবাজার নিশ্চিত হতে চায়, হস্টেলের রুম বণ্টনের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়েছিল কি? প্রাক্তনীরা কোন নিয়মের ফাঁক গলে হস্টেলে থাকছিলেন, তা-ও জানতে চায় পুলিশ। সব মিলিয়ে, পাঁচ তারা বিশ্ববিদ্যালয় যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর জেরে উত্তেজনা কমার লক্ষণ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy