Advertisement
E-Paper

চটজলদি খবর পেতে নয়া অ্যাপ কলকাতা পুলিশের

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোনও থানা এলাকায় কিছু ঘটলে ডিউটিতে থাকা বা না থাকা ওই থানার সব পুলিশকর্মীই জানতে পারবেন এলাকার পরিস্থিতি।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০২:০৭

খিদিরপুরে রাস্তার উপরে ছিলেন এক পুলিশকর্মী। তাঁর চোখের সামনেই দ্রুত গতির একটি মোটরবাইক‌ নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে মাটিতে আছড়ে পড়ল। ছিটকে পড়লেন দুই আরোহী। দুর্ঘটনার পরেই এলাকায় জমে গেল ভিড়। অবস্থা খারাপ হতে পারে এটা বুঝে নিজের স্মার্ট ফোনের একটি নির্দিষ্ট অ্যাপে গিয়ে তা জানিয়ে দিলেন ওই কর্মী। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেল পুলিশের একটি দল। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আগেই ঘটনাস্থলের দখল নিয়ে নিল ওই বাহিনী।

ঘটনাটি শুক্রবার রাতের। আর ওই পুলিশ কর্মী যে বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে বাহিনীকে ওই ঘটনাটি জানালেন, তার নাম ‘টিএমএস’ বা ‘টাস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’। আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে এটি ব্যবহার করছেন ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশকর্মীরা। আগামী সপ্তাহ থেকে তা বন্দর বিভাগের সব থানার অফিসারদের ব্যবহার করতে দেওয়া হবে। ওই অ্যাপ বন্দর বিভাগে সফল হলে তা কলকাতা পুলিশের সব বিভাগে ব্যবহার করা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। শুক্রবার রাতে ওই অ্যাপ ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার দুর্ঘটনার সময়ে কাজে আসায় সন্তুষ্ট লালবাজার।

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোনও থানা এলাকায় কিছু ঘটলে ডিউটিতে থাকা বা না থাকা ওই থানার সব পুলিশকর্মীই জানতে পারবেন এলাকার পরিস্থিতি। নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন দ্রুত। পরিস্থিতি খারাপ হলে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে পারবেন। ছুটি ছেড়ে যোগ দিতে পারবেন ডিউটিতে। কর্তাদের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।’’

আরও পড়ুন: যাদবপুরে ভর্তিতে অনিয়ম, অভিযোগ

শুধু সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ অফিসারেরাই যে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত হবেন তাই নয়, বড় কর্তারা খুব সহজেই এলাকার পরিস্থিতি জেনে নিতে পারবেন। তার ফলে দ্রুত নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে পারবেন। লালবাজারের ওই কর্তা বলেন, শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনা ঘটার কয়েক মিনিটের মধ্যে ডিভিশনাল ডিসি-সহ লালবাজারের অন্য কর্তারা তা জেনে গিয়েছিলেন।

‘টিএমএস’ আসলে কী?

মাস ছয়েক আগে ওই অ্যাপ চালু করা হয়েছিল রাজ্য পুলিশে। মূলত রাজ্য পুলিশের অধীন সিভিক ভলান্টিয়ারদের গতিবিধি জানার জন্যই তা চালু করা হয়েছিল। ওই অ্যাপে সিভিক ভলান্টিয়াররা অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারতেন থানায়। থানার ওসি, আইসি থেকে শুরু করে এসপি, ডিআইজি এবং ডিজি পর্যন্ত পুলিশের বড়কর্তারা ওই তথ্য দেখতে পেতেন। ফলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাজিরার পাশাপাশি তাঁরা কী কাজ করছেন, তা নথিভুক্ত থাকত ওই অ্যাপে। পুলিশের একাংশের দাবি, রাজ্য পুলিশের জন্য ওই অ্যাপটি তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন তৎকালীন সিআইডির সুপার ওয়াকার রেজা। বর্তমানে তিনি কলকাতা পুলিশের বন্দর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার।

লালবাজার জানাচ্ছে, কলকাতা পুলিশে যোগ দিয়ে ওই আইপিএস অফিসারই রাজ্য পুলিশের ওই অ্যাপটি পরিমার্জন করে কলকাতা পুলিশের উপযোগী করে তোলেন। কলকাতা পুলিশের ‘টিএমএস’ অ্যাপে সিভিক ভলান্টিয়াররা শুধু নয়, সংশ্লিষ্ট থানার হোমগার্ড, কনস্টেবল, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর, সাব ইনস্পেক্টর থেকে শুরু করে ওসি এবং কলকাতা পুলিশের বড়কর্তাদের যুক্ত করা হবে।

ওয়াটগঞ্জ থানার প্রায় ৯০ জন কর্মী এবং অফিসার বর্তমানে ওই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত। হাজিরার তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি কর্মীর বায়োডেটা পর্যন্ত থাকছে তাতে। ফলে কোন পুলিশকর্মী কোন কাজে দক্ষ, তা লালবাজারে বসে খুব সহজেই জেনে নিতে পারবেন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। লালবাজারের এক কর্তার দাবি, নিচু তলার কর্মীদের পাশাপাশি বড় কর্তারাও নিজেদের কাজ সম্পর্কে দায়বদ্ধ থাকবেন। পরবর্তী কালে কোনও বিভাগীয় তদন্তেও অ্যাপের তথ্য কাজে লাগতে পারে বলে লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন।

Lalbazar surveillance Mobile App Task Management System কলকাতা পুলিশ Kolkata police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy