Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩

শিশুকন্যাকে ধর্ষণে যুবকের যাবজ্জীবন

তদন্তের ফাঁক গলে আর একটু হলেই পার পেয়ে যাচ্ছিল দু’বছর সাত মাসের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত জনৈক বাসের খালাসি। শিশুটির তুতো দাদা ১১ বছরের এক বালকের সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই অপরাধ ফাঁস হয়ে গেল। শেখ সফি ওরফে মুন্না নামের সেই খালাসিকে সোমবার যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন শিয়ালদহে পকসো বিশেষ আদালতের বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০৭
Share: Save:

তদন্তের ফাঁক গলে আর একটু হলেই পার পেয়ে যাচ্ছিল দু’বছর সাত মাসের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত জনৈক বাসের খালাসি। শিশুটির তুতো দাদা ১১ বছরের এক বালকের সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই অপরাধ ফাঁস হয়ে গেল। শেখ সফি ওরফে মুন্না নামের সেই খালাসিকে সোমবার যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন শিয়ালদহে পকসো বিশেষ আদালতের বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস। সেই সঙ্গে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত, গত ৫ মার্চ। মানিকতলা এলাকায় সে দিনই একটি খালি বাসের মধ্যে একরত্তি শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়ে। মেয়েটির মা একাই সন্তানকে বড় করছেন।

তিনি পেশায় পরিচারিকা। এ দিনের রায়ে বিচারকের মন্তব্য, অপরাধীর দোষ প্রমাণ করতে শিশুটির তুতো দাদা সাক্ষ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সে কুকাজটা দেখে ভাবে, তার বোনকে খুনের চেষ্টা চলছে। সঙ্গেসঙ্গে নিজের মাকে সব কিছু জানায় ওই বালক। কোর্টেও একই কথা সে বলেছে। ধর্ষণের শিকার দু’বছরের শিশুটিও আদালতে কাঁদতে কাঁদতে তার উপরে নির্যাতনের কথা জানিয়েছে। অভিযুক্তকে চিনিয়েও দিয়েছে। ধর্ষণের সময়ে গুরুতর জখম হয়েছিল সে।

তবে মামলার মূল তদন্তকারী অফিসার সাব-ইনস্পেক্টর কুমারিকা মজুমদারের ভূমিকা গোলমেলে বলে স্পষ্ট বলেছেন বিচারক। তাঁর রায়ে লেখা হয়েছে, ‘‘নিমরাজি ঘোড়ার মতো গোড়া থেকেই নিষ্ক্রিয় ছিলেন তদন্তকারী অফিসার। এমনকি তাঁর জোগাড় করা সাক্ষীও মামলাটা ভেস্তে দিচ্ছিলেন। অন্য এক অফিসার রবসন চৌধুরী তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেন। মানিকতলা থানার ওসি দেবজিৎ ভট্টাচার্য তদন্তকারী অফিসারের হাত থেকে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। তিনিই ধর্ষিতা শিশুটির বয়ান নিতে তাকে আদালতে নিয়ে আসেন।’’ সেই সঙ্গে বিচারকের পর্যবেক্ষণ, তদন্তে গাফিলতিই সুবিচারের পথে শেষ কথা নয়। সব দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়াই কোর্টের দায়বদ্ধতা। তদন্তকারী অফিসার কুমারিকাকে বিচারকের রায় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রায়ের কপি দেখিনি। বিচারক আমার ভূমিকা নিয়ে কী বলেছেন, তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’’

Advertisement

পুলিশের একাংশ বলছে, ৩১ বছরের অভিযুক্ত বাসের খালাসি রাজনৈতিক ভাবে রীতিমতো প্রভাবশালী। পকসো মামলায় ফেঁসেও সে ভেবেছিল কেউ তার কেশাগ্র ছুঁতে পারবে না। তদন্তের পরবর্তী পর্যায়ে মানিকতলার ওসি-র তৎপরতায় অবশ্য অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে আদালত সূত্রের খবর। পরে শিশুটি ও তার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে থানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.