Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ছটে রবীন্দ্র সরোবরের সুরক্ষায় পুলিশ, রইল প্রশ্ন

পরিবেশ আদালতের নির্দেশে গত বছরেও সরোবরে ছট পুজোয় নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেই মতো বিভিন্ন গেটে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা রাখা হয়েছিল। পুলিশও মোতায়েন ছিল।

গত বছরের ছটপুজোর পর এই হাল ছিল সরোবরের।—ফাইল চিত্র।

গত বছরের ছটপুজোর পর এই হাল ছিল সরোবরের।—ফাইল চিত্র।

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০৯
Share: Save:

গত বছরের ছটপুজো থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার রবীন্দ্র সরোবরের বিভিন্ন গেটের নিরাপত্তা বাড়াতে কঠোর হচ্ছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। তবে ওই নিরাপত্তা আদৌ কতখানি নিশ্ছিদ্র, তা নিয়ে এ বারেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

পরিবেশ আদালতের নির্দেশে গত বছরেও সরোবরে ছট পুজোয় নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেই মতো বিভিন্ন গেটে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা রাখা হয়েছিল। পুলিশও মোতায়েন ছিল। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও গেট বন্ধ না থাকায় কিছু পুণ্যার্থী এবং বহিরাগত ঢুকে পড়েছিলেন। এ বারে তাই সব গেট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য আগেই জানিয়েছেন, পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনেই রবীন্দ্র সরোবরের মতো জাতীয় সরোবরে ছট পুজো বন্ধ রাখা হবে। সেই কারণে ওই সময়ে গেট বন্ধ থাকবে। পুলিশকে তা দেখভাল করতে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও থাকবেন কেএমডিএ নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীরা।

কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবরে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৮টি গেট রয়েছে। মূল গেটগুলিতে নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন ঠিকই, তবে কয়েকটি ছোট গেটে রক্ষী থাকেন না। কর্তৃপক্ষের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য কয়েকটি গেট খুলে রাখতে তাঁরা বাধ্য হন। ফলে সেখান দিয়েও অবাধে লোক প্রবেশ করতে পারেন। গত বছর ঠিক তেমনই হয়েছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে রবীন্দ্র সরোবরে গিয়ে দেখা গেল, রেললাইনের ধারে গোবিন্দপুর সংলগ্ন মূল গেট বন্ধ। তবে পাশের গেট দিয়ে চলছে অবাধ যাতায়াত। সেখানে নিরাপত্তারক্ষীও নেই। বৌদ্ধমন্দির সংলগ্ন একটি ক্লাবের কাছেও রয়েছে অরক্ষিত দু’টি ছোট গেট। কেএমডিএ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবরের প্রতি গেটে দিনভর তিনটি শিফটে লোক রাখতে মাসে প্রায় ৩০,০০০ টাকা খরচ হবে। অর্থাৎ প্রতিটি গেটে নিরাপত্তাকর্মী রাখতে কর্তৃপক্ষকে বিপুল টাকা খরচ করতে হবে। দু’ একটি এমন গেটও রয়েছে, যেখান দিয়ে এক জনের বেশি লোক চলাচল করতে পারেন না। ওই গেটগুলিতে সাধারণত নিরাপত্তারক্ষী থাকেন না। তবে সেগুলি রেললাইনের পাশে না থাকায় বিপদের আশঙ্কাও কম। গত বছর ছট পুজোর সময়ে বেশ কিছু বহিরাগত ওই গেট টপকে ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন বলেও কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান।

সংস্থার এক আধিকারিক জানান, গোবিন্দপুর সংলগ্ন যে গেট রয়েছে, সেখানে আগে রেলের ‘লেভেল ক্রসিং’ ছিল। ৯০-এর দশকে শিয়ালদহ-বজবজ লাইনে একটি দুর্ঘটনার পরে ওই ‘লেভেল ক্রসিং’ বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার জন্য ওই গেট দিয়ে সরোবরে যাতে কেউ ঢুকতে না পারেন, সে জন্য বড় গেট বন্ধ করা হয়। অভিযোগ, সেই সময়ে সরোবরে প্রবেশের জন্য ওই গেটের পাশের দেওয়াল ভেঙে অনেকেই ভিতরে ঢোকায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। এর পরেই এলাকাবাসীর অনুরোধে বড় গেটের পাশে একটি ছোট গেট তৈরি করেন কর্তৃপক্ষ। পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানান, এখানে কোনও ‘লেভেল ক্রসিং’ নেই। রেললাইনের উপর দিয়ে যাতায়াত করা বেআইনি। সরোবরের নিরাপত্তার জন্য এলাকায় জনমত গড়ে তুলতে বাসিন্দাদের একাংশের কাছেও কেএমডিএ আবেদন করতে পারে বলে জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE