Advertisement
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Fire Workers

গঙ্গার হাওয়া বুঝে কেন যুদ্ধে নামল না দমকল? প্রশ্ন স্থানীয়দের

সকাল ১০টা নাগাদ শরাফ ভবনের চারতলায় আগুন দেখতে পান স্থানীয়েরা। প্রথমে ভবনের পশ্চিমে গঙ্গামুখী অংশ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। ওই আগুন দ্রুত ভবনের বাকি অংশে ছড়িয়ে যায়।

An image of Fire

ভবনের পশ্চিমে গঙ্গামুখী অংশ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৩ ০৬:৪০
Share: Save:

বছর দুই আগে গঙ্গার ধারে রেলের ভবনে অগ্নিকাণ্ডে উঠেছিল হাওয়া প্রসঙ্গ। আগুনের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পিছনে ঝোড়ো হাওয়াকে ‘দায়ী’ করেছিলেন দমকলকর্মীদের একাংশ। বছর দুই পরে, বুধবার, রেলের ভবন থেকে কয়েকশো মিটার দূরে শরাফ ভবনের আগুন ছড়িয়ে পড়ার পিছনেও উঠে এল সেই হাওয়ার প্রসঙ্গ। প্রশ্ন উঠেছে, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে দমকল কেন উল্টো দিক থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করল না?

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ শরাফ ভবনের চারতলায় আগুন দেখতে পান স্থানীয়েরা। প্রথমে ভবনের পশ্চিমে গঙ্গামুখী অংশ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। ওই আগুন দ্রুত ভবনের বাকি অংশে ছড়িয়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছে আগুন লাগা পশ্চিমমুখী অংশ থেকে তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করে। পাশের রাস্তায় দমকলের গাড়ি দাঁড় করিয়ে শুরু হয় জল দেওয়ার কাজ।কিন্তু, আগুন দ্রুত পূর্ব দিকের অংশে এগিয়ে যেতে থাকে। এরও প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে উল্টো দিক থেকে আগুন নেভানো শুরু হয়। তার পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছিল না।

তখন হাইড্রলিক মই নিয়ে আসা হয়। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভবনের কর্মী ও স্থানীয়েরা। তাঁদের বক্তব্য, গঙ্গার হাওয়ার জন্য যেখানে দ্রুত আগুন ছড়াতে থাকল, তখন কেন উল্টো দিক থেকে জল দিয়ে আগুন নেভানো বা আটকানোর চেষ্টা করা হল না? কেন প্রথমেই আনা হল না হাইড্রলিক মই?

ওই বাণিজ্যিক ভবনের এক কর্মী পঙ্কজ ভুতোরিয়া বলেন, ‘‘আগুন আটকে রাখার কাজটা করতেই তো অনেকটা সময় কেটে গেল। আগে মই এনে উল্টো দিক থেকে আগুন আটকানোর চেষ্টা করা হলে কখনওই আগুন ছড়িয়ে পড়ত না। অনেক আগেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হত। এত ক্ষয়ক্ষতিও হত না।’’

যদিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত দমকলকর্মীদের দাবি, হাওয়ার জেরে আগুন যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য প্রথমে উল্টো দিক থেকে ভবনে ওঠার চেষ্টা করা হয়েছিল। মই লাগিয়েও আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, সমস্যা হচ্ছিল। পরে তাই হাইড্রলিক মই এনে কাজ করা হয়।

জানা গিয়েছে, প্রথমে বহুতলের পাশের ভবনে উঠে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন দমকলকর্মীরা। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকায় প্রায় ঘণ্টা দুই পরে ঘটনাস্থলে হাইড্রলিক মই আসে। রেড ক্রস প্লেসে সেই মই রেখে শুরু হয় আগুন নেভানো। ভবনের এক কর্মী রোশন কুমারের কথায়, ‘‘গঙ্গার ধারের এই চত্বরে সারা বছরই কম-বেশি হাওয়া থাকে। তাই এই সব এলাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কয়লাঘাটার ভবনেও তা-ই হয়েছিল। এ বারেও হাওয়ার জন্য দ্রুত আগুন ছড়াল। অথচ, সেই মতো ব্যবস্থাই করল না দমকল।’’

এই অভিযোগ মানতে চাননি দমকলের ডিজি রণবীর কুমার। তিনি বলেন, ‘‘আগুন লাগলে কখন হাইড্রলিক মই নিয়ে যাওয়া হবে, তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত দমকলের বিশেষজ্ঞ কর্মীরাই ঠিক করেন। এ ক্ষেত্রেও তা-ই করা হয়েছে। সব কিছুর জন্যই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকে। সব আগুনে হাইড্রলিক মই নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE