Advertisement
E-Paper

গুন্ডা দমনের নির্দেশ, পুলিশ তবু ‘গা-ছাড়া’

কমিশন শেষ বেলায় কড়া দাওয়াইয়ের নির্দেশ দিলেও এ বার কলকাতার ভোট শান্তিপূর্ণ হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে খোদ পুলিশেরই একাংশের। সাধারণত, নির্বাচন ঘোষণার পর দাগি দুষ্কৃতীদের ধরপাকড় করাই দস্তুর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০১:৫৫
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

আগামী রবিবার ভোটের দিন কলকাতাকে গোলমাল-মুক্ত রাখতে লালবাজারকে আরও কড়া হতে বলল নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনের খবর, সোমবার উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজেশ কুমার-সহ শীর্ষ কর্তাদের। সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধরা দাগি দুষ্কৃতীদের শায়েস্তা করতে লালবাজার কী করছে তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি, নতুন তালিকাও তৈরি করতে বলা হয়েছে। দু’-এক দিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে ফের বৈঠক হতে পারে বলে সূত্রের খবর। দাগি দুষ্কৃতীদের নজরবন্দি করার নির্দেশও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কমিশন শেষ বেলায় কড়া দাওয়াইয়ের নির্দেশ দিলেও এ বার কলকাতার ভোট শান্তিপূর্ণ হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে খোদ পুলিশেরই একাংশের। সাধারণত, নির্বাচন ঘোষণার পর দাগি দুষ্কৃতীদের ধরপাকড় করাই দস্তুর। এ বছরও লালবাজার ধরপাকড় করেছে। কিন্তু লালবাজারেরই একাংশ বলছে, বেলেঘাটা, নারকেলডাঙা, বন্দর এবং দক্ষিণ শহরতলির বহু দাগি দুষ্কৃতীই অধরা। তাদের ধরতে উপরতলা থেকে যে তেমন ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে না, এমন কথাও কার্যত স্বীকার করছেন নিচুতলার অফিসারেরা।

সম্প্রতি লালবাজার থেকেই জানানো হয়েছে, এখনও ৮৮ জন ‘দাগি’ অপরাধী নাগালের বাইরে। শুধু তাই নয়, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বেশ কয়েক জন গুন্ডাও দিব্যি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের সময় শহর জুড়ে পুলিশি দাপট দেখা গিয়েছিল। ভোটের আগে থেকেই সক্রিয় হয়েছিল লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখাও।

লালবাজারের খবর, এ বারও গুন্ডাদমন শাখা কাজ করলেও তাদের তৎপরতা ততটা দেখা যাচ্ছে না। তার ফলেই বেলেঘাটার দু’টি দুষ্কৃতী দল, হরিদেবপুর বেহালার চারটি দুষ্কৃতী দলের লোকজন এলাকা দাপাচ্ছে বলে খবর। এমনকি, জেলবন্দি এক মাফিয়া ডনের এক আত্মীয় তার হয়ে রাজত্ব সামলাচ্ছে। ওই ডনেরই আর এক শাগরেদ মধ্য কলকাতায় নিজের দাপট দেখাচ্ছে। পুলিশের খাতায় আর এক দাগি টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জের মতো এলাকায় দিব্যি রাজত্ব করছে বলে খবর। এমনকি, পুলিশের একাংশের সঙ্গেও তার যোগাযোগ লালবাজারের অন্দরে সুবিদিত।

যদিও লালবাজারের দাবি, ধরপাকড় হয়েছে। তার সঙ্গে ভোটের দিন হাঙ্গামা পাকাতে পারে, এমন দুষ্কৃতীদের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। তাদের সতর্ক করা হয়েছে এবং হাঙ্গামা না-পাকানোর কথা নিয়ে মুচলেকাও লেখানো হয়েছে। যে ৮৮ জন নাগালের বাইরে রয়েছে, তারা শহরের বাইরে। তাদের উপরে নজরদারিও রয়েছে। প্রায় সাড়ে চারশো গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা হয়েছে। বেআইনি অস্ত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

তবুও লালবাজারের একাংশ বলছেন, নিচুতলার অনেকেই এ বার কিছুটা ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব নিয়ে চলছেন। তাঁরা বলছেন, ২০১৬ সালের ভোট-পরবর্তী ‘অভিজ্ঞতা’ পুলিশের একাংশের পক্ষে সুখকর হয়নি। নির্বাচনের সময় গুন্ডাদমনে যাঁরা সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের প্রায় সবাইকেই ‘বিশেষ কারণে’ প্রত্যন্ত জেলায় বদলি করা হয়েছিল।

তবে এ কথা সরাসরি মানতে না চেয়ে পুলিশের আর একটি অংশের যুক্তি, ২০১৪ সালে উত্তর কলকাতায় গোলমাল হয়েছিল। ২০১৫ সালে পুর ভোটে দুষ্কৃতীদের গুলিতে আহত হয়েছিলেন এক পুলিশ অফিসার। কিন্তু ২০১৬ সালের ভোটে সে ভাবে গোলমাল হয়নি। ফলে বিগত পুর ভোটে দক্ষিণ শহরতলিতে গোলমাল পাকানো নান্টি, বাবুসোনা, মুন্না পাণ্ডের মতো অনেককেই আর ‘দাগি’ বলে মানতে নারাজ পুলিশের ওই অংশ। তাঁদেরই এক জনের যুক্তি, ‘‘ওরা ২০১৬ সালের ভোটে গোলমাল করেনি। ফলে ওদের গা থেকে দাগ মুছে গিয়েছে।’’ ঠিক একই ভাবে ছাড় পাচ্ছেন কাশীপুরের দুই ‘দাদা’ও, এমনই খবর।

Lok Sabha Election 2019 Election Commission Lalbazar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy