Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বহিরাগত রুখতে পর্যবেক্ষকদের বিশেষ বৈঠক

ভোটের আগে ভিন্ রাজ্য এবং অন্য জেলা থেকে বহিরাগতেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে কলকাতায় ঢুকতে পারে, গোয়েন্দাদের এমন সতর্কবার্তা মাথায় রেখে তল্লাশি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছিল।

কড়াকড়ি: ভোটের আগে পুলিশি সক্রিয়তা। গড়িয়াহাট অঞ্চলের একটি হোটেলে পুলিশ আধিকারিকেরা। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

কড়াকড়ি: ভোটের আগে পুলিশি সক্রিয়তা। গড়িয়াহাট অঞ্চলের একটি হোটেলে পুলিশ আধিকারিকেরা। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৯ ০২:১৬
Share: Save:

ভোটের আগে বহিরাগতেরা ঢুকছে কি না, তা দেখতে শহরের বিভিন্ন হোটেল, ধর্মশালায় ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। বাড়ানো হয়েছে নজরদারিও। এ বিষয়ে আরও কড়া হতে শুক্রবার দুপুরে আলিপুরে কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজেশ কুমারের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে এবং বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক। এ দিনের বৈঠকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, রাস্তায় কড়া নাকা তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেন বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা। একই সঙ্গে হোটেল গেস্ট হাউসের উপরেও নজরদারি আরও বাড়াতে বলেন তাঁরা।

লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি, অমিত শাহের রোড শোয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে বহিরাগতেরা এসেছিল। সেই দলই মঙ্গলবার বিদ্যাসাগর কলেজে হাঙ্গামা চালিয়েছিল। ভোটের আগে ভিন্ রাজ্য এবং অন্য জেলা থেকে বহিরাগতেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে কলকাতায় ঢুকতে পারে, গোয়েন্দাদের এমন সতর্কবার্তা মাথায় রেখে তল্লাশি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছিল।

যদিও তল্লাশিতে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও বহিরাগতের সন্ধান মেলেনি বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, বহিরাগত সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে তল্লাশি চালাতে গিয়েই বড়বাজার থেকে প্রায় এক কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। চলতি ভোটে কলকাতা থেকেই হিসেব বহির্ভূত ছয় লক্ষ টাকার বেশি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে।

বাবুঘাটে তল্লাশি।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, শহরের সব থানাকে নিজেদের এলাকার হোটেল ও ধর্মশালায় নজরদারি ও তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছে। যে যে এলাকায় বেশি হোটেল, গেস্ট হাউস ও ধর্মশালা রয়েছে, সেখানে স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে। শুক্রবার থেকে সেই কাজে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে লাগানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা, হোটেল, গেস্ট হাউস মালিকদের বলা হয়েছে, এলাকায় কোনও অচেনা মুখ দেখলে বা কোনও অতিথিকে সন্দেহজনক মনে হলে থানায় খবর দিন।

পুলিশের দাবি, ভোটের সময়ে নিয়মমাফিক এই তল্লাশি হয়। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই ভোটের আগের দিন বহিরাগতেরা ঢোকে। কিন্তু বহু মানুষই কাজের খাতিরে শহরের হোটেল বা ধর্মশালায় ওঠেন। সে ক্ষেত্রে বহিরাগত সন্দেহে কি তাঁরাও পড়তে পারেন? পুলিশ জানিয়েছে, যাঁরা হোটেল বা ধর্মশালায় উঠেছেন, তাঁদের আসার কারণ জানতে তথ্য নেওয়া হয়েছে। যথার্থ কারণ থাকলে কোনও সমস্যা নেই।

লালবাজার সূত্রের খবর, নিউ মার্কেট, শিয়ালদহ, বড়বাজার, পোস্তা, জোড়াবাগান, গিরিশ পার্ক, ভবানীপুর, শ্যামপুকুরের মতো কিছু এলাকাকে বহিরাগতদের আশ্রয়স্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই এলাকার হোটেল, গেস্ট হাউসে বিশেষ নজর থাকছে। যদিও পুলিশের একাংশের মতে, যারা বাইরে থেকে ভোটে হাঙ্গামা করতে আসতে পারে, তারা হয়তো অনেকেই আত্মীয় বা পরিচিতের বাড়িতে ঠাঁই নেবে। লালবাজার সূত্রের দাবি, বাড়িতে তল্লাশি করতে পুলিশ ‘অপারগ’। সুতরাং তল্লাশির সাফল্য নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

ক’দিন আগেই বহিরাগত নিয়ে বিভ্রান্তি হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার এক হোটেলে। স্থানীয় কিছু বাসিন্দার মাধ্যমে কয়েক জন অতিথিকে ‘সন্দেহজনক’ বলে পুলিশের কাছে খবর এসেছিল। তল্লাশি করে দেখা যায়, অতিথিরা ভিন্ রাজ্যের পুলিশকর্মী। প্রচারে আসা এক ‘ভিআইপি’ নেতার নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে তাঁরা শহরে এসেছিলেন। এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ‘‘এখন তো আর প্রচার নেই। তাই এমন বিভ্রান্তির আশঙ্কাও কম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE