ফের গর্ত সেই একই জায়গায়। রেড রোডের ধারে মঙ্গলবার বিকেলে আবারও মিলল এক সুড়ঙ্গের সন্ধান। যেমনটি পাওয়া গিয়েছিল বছর দুয়েক আগে।
ঘটনাচক্রে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে এক জন টেলিফোন করে ওই সুড়ঙ্গ দেখতে পেয়েছেন বলে জানানোর কিছুক্ষণ আগেই মহাকরণে বোমাতঙ্ক ছড়িয়েছিল। তাই রেড রোডে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তির কাছে তৈরি ওই সুড়ঙ্গ-রহস্যের সমাধান করতে তৎপর হন পুলিশ ও গোয়েন্দারা। দু’টির মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হয়। শেষমেশ অবশ্য তেমন কোনও বিপদের আভাস না মেলায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে লালবাজার।
২০১৩-র নভেম্বরের মতো এ বারও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ হয়, এটা কেব্ল চোরেদেরই কাজ। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক রজত সান্যাল আবার বলেছেন, ‘‘সুড়ঙ্গের মুখের অন্তত কিছু ইট কম করেও একশো বছরের পুরনো।’’ সে ক্ষেত্রে, ইংরেজ আমলেই এই সুড়ঙ্গটি প্রথম খোঁড়া হয়েছিল, এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সুড়ঙ্গ মেলার খবর পেয়েই পুলিশের সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসেন সেনা এবং পূর্ত দফতরের কর্তারা। পুলিশ সুড়ঙ্গটির মুখ মাটি ও গাছের ডালপালা দিয়ে বুজিয়ে দেয়। জায়গাটি ঘিরে দেওয়া হয়। সুড়ঙ্গের মুখ ভাল করে পরীক্ষা করে পূর্ত দফতরের তরফে জানানো হয়, বুধবার সকালে সুড়ঙ্গটির মুখ বন্ধের কাজ শুরু হবে।
পুলিশ জানায়, সুড়ঙ্গের প্রবেশপথটি ছিল সাড়ে ছ’ফুট লম্বা। তার নীচের রাস্তাটি বারো ফুটের মতো চওড়া ছিল বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সুড়ঙ্গটি মাটির নীচে থাকা কতগুলো পুরনো কেব্ল-এর জটের সামনে গিয়ে শেষ হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনাস্থলের কয়েক গজ দূরেই সেনাবাহিনীর কার্যালয় ফোর্ট উইলিয়াম। ময়দান সেনাবাহিনীর আওতায় হলেও এই এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। নজরদারি থাকে সেনাবাহিনীরও। তাই শহরের এই রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রীতিমতো পেশাদারি কায়দায় সুড়ঙ্গ তৈরির বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
তদন্তকারীদের অনুমান, সুড়ঙ্গটি এক দিনে কাটা হয়নি। বেশ কয়েক দিন ধরে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে কাটা হয়েছে। ময়দান এলাকায় সারা দিন অনেক মাদকাসক্তের ভিড় থাকে। নেশার পয়সা জোগাড়ের জন্য তাঁরাও এই কাজ করতে পারেন বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।
এই ঘটনার পরে এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সুড়ঙ্গের সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়। তবে এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।