Advertisement
E-Paper

ধ্বংসস্তূপে মিলল আরও একটি দেহ

বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ এনডিআরএফ জানায়, তারা ভাঙা সেতুর নীচে আরও একটি দেহের সন্ধান পেয়েছে। পরে দেহটি দেখে শনাক্ত করেন তোতন। যদিও তাঁর মা এখনও জানেন না যে স্বামী আর নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩৬
উদ্ধার: ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে বের করে আনা হচ্ছে মৃতদেহ। বৃহস্পতিবার, মাঝেরহাটে। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার: ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে বের করে আনা হচ্ছে মৃতদেহ। বৃহস্পতিবার, মাঝেরহাটে। নিজস্ব চিত্র

মাঝেরহাট সেতুর ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে বৃহস্পতিবার সকালে আরও এক জনের দেহ উদ্ধার করল ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ)।

পুলিশ জানিয়েছে, এই নিয়ে মোট তিন জনের দেহ উদ্ধার করা হল। তৃতীয় এই ব্যক্তি মুর্শিদাবাদের তেঁতুলিয়ার বাসিন্দা। মৃতের নাম গৌতম মণ্ডল (৪৫)। একটি ঠিকাদার সংস্থার হয়ে তিনি মেট্রো প্রকল্পে কাজ করছিলেন। প্রকল্পে কাজ করা প্রায় ৭০ জন লোকের রান্না করতেন ওই ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গেই কাজ করতেন ছেলে তোতন মণ্ডলও। ঘটনার দিনে তোতন অন্যত্র থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন। তোতনের কথায়, ‘‘রান্না বসাবেন বলে বাবা আনাজ কাটছিলেন। আমি একটু দূরে কাজ করতে করতে দেখি হঠাৎ করে ব্রিজটা ভেঙে পড়ছে।’’ চোখের সামনেই ঘটনাটা ঘটল। কিন্তু তবুও তোতনের বিশ্বাস ছিল, তাঁর বাবা বেঁচে রয়েছেন। সেই বিশ্বাসকে আঁকড়েই থেকে গিয়েছিলেন দুর্ঘটনাস্থলে।

বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ এনডিআরএফ জানায়, তারা ভাঙা সেতুর নীচে আরও একটি দেহের সন্ধান পেয়েছে। পরে দেহটি দেখে শনাক্ত করেন তোতন। যদিও তাঁর মা এখনও জানেন না যে স্বামী আর নেই। তাঁকে শুধু জানানো হয়েছে দুর্ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সেতু ভাঙার পরেই গ্রামের প্রতিবেশীদের ফোন করে ডাকিয়ে আনেন তোতন। এ দিকে সকাল ৬টা নাগাদ গৌতম মণ্ডলের দেহ উদ্ধার হয়। সাড়ে ৬টায় এনডিআরএফ জানিয়ে দেয় উদ্ধারের কাজ শেষ। এনডিআরএফ-এর ডেপুটি কমান্ড্যান্ট স্বয়ংম্বর সিংহ ক্ষেত্রী জানান, আর কোনও দেহ ধ্বংসস্তূপের নীচে নেই। এর পরেই ঘটনাস্থল ছাড়ে এনডিআরএফ।

এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএমে যান। প্রথমে জরুরি বিভাগে, তার পরে আইটিইউ-তে ভর্তি থাকা রোগীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁদের শারীরিক অবস্থার কথাও জানতে চান। মিনিট ছয়েক সেখানেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: রেলিং থেকে পথ, জরাজীর্ণ সবই

অন্য দিকে, সেতুর ধ্বংসাবশেষ সরানো শুরু করেছে পূর্ত দফতর। ভেঙে পড়া অংশ ড্রিলিং মেশিন দিয়ে কেটে সরাচ্ছেন দফতরের কর্মীরা। জঞ্জাল তোলার দু’টি বিশাল আকৃতি যন্ত্র দিয়ে বৃহস্পতিবারই প্রায় ৩০ শতাংশ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা পূর্ত দফতরের কর্মীদের কথায়, আর চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই জায়গাটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। চেষ্টা করা হচ্ছে রবিবারের মধ্যে সব শেষ করার।

এরই মাঝে নমুনা সংগ্রহের জন্যে বৃহস্পতিবার দু’দফায় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থলে ঘুরে গিয়েছিলেন। নমুনা পরীক্ষা করে তাঁরা জানিয়েছেন, ভেঙে পড়া অংশ পরীক্ষা করে একটা ফাটল পাওয়া গিয়েছে। তার উপর দিয়েই বেশ কয়েক বার পিচের আস্তরণও পড়েছিল। ফলে সেতুর অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল মেট্রোর একাধিক স্তম্ভ তৈরির কাজের কাঁপুনি। এ-ও জানিয়েছেন, সেতুর বাকি অংশ ভেঙে নতুন সেতু তৈরির সুপারিশ করবেন তাঁরা।

সেতু ভেঙে যাওয়ার কারণে মেট্রোর কাজ বন্ধ। তার ফলে বিপাকে পড়েছেন নির্মাণকর্মীরা। রাঁধুনি মারা গিয়েছেন, হাতে টাকাও নেই। পাশে দাঁড়িয়েছেন পাশেরই এক লঙ্গরখানা পরিচালন সমিতির লোকজন। তাতেই কোনও ক্রমে খাবার পাচ্ছেন তাঁরা।

(শহরের প্রতি মুহূর্তের সেরা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)

Death Majerhat Kolkata Flyover Collapse মাঝেরহাট Dead Body
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy