পুরনো ভূমিকায়: পুর ভবনে নিজের ঘরে মালা রায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
সাংসদ হিসেবে লোকসভায় নিজের নাম নথিভুক্ত করে মঙ্গলবার কলকাতায় ফিরেছেন মালা রায়। আর বুধবারেই তিনি চলে আসেন পুর ভবনে। কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে সদ্য নির্বাচিত সাংসদ মালাদেবী কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সনও। বললেন, ‘‘পুরসভারও কিছু কাজ আছে। সেগুলো তো করতে হবে। তাই সময় নষ্ট না করে চলে এসেছি।’’ এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ পুর ভবনে নিজের ঘরে আসেন তিনি। তার পর থেকেই চেয়ারপার্সনের ঘরে পুরকর্মী ও অফিসারদের ভিড়। সকলেই এসেছেন শুভেচ্ছা জানাতে।
সাংসদ হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে গত সোমবার দিল্লি গিয়েছিলেন মালাদেবী। প্রথম দিন কেমন লাগল? বললেন, ‘‘১৯৯৫ থেকে কলকাতা পুরসভার জনপ্রতিনিধি হিসেবে আছি। এ বার দেশের গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ পীঠস্থানে আমাকে পাঠিয়েছেন দলনেত্রী আর দক্ষিণ কলকাতার ভোটারেরা। সেই মর্যাদা রেখে কাজ করব।’’ ২০১০ থেকে ২০১৫, এই পাঁচ বছর তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডে কংগ্রেসের কাউন্সিলর হিসেবে পুর অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন মালাদেবী। তৃণমূলে যোগদানের পরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ্যতার নিরিখে তাঁকে কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন করেন। কাউন্সিলরদের একাংশ জানিয়েছেন, ভাল ব্যবহার এবং স্বচ্ছ রাজনীতির মানুষ হিসেবে মালাদেবী অনেকের কাছেই খুব প্রিয়। ভোটের ফলাফলেও দেখা গিয়েছে, একমাত্র তাঁর কেন্দ্রেই পোস্টাল ব্যালটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল।
সংসদে কী ভূমিকা নেবেন? মালাদেবী বলেন, ‘‘অপশাসনের প্রতিবাদ করে আমরা বাংলায় ক্ষমতায় এসেছি। প্রতিবাদ তৃণমূলের রক্তে। সেই ধারা বহন করে চলব। কলকাতা তথা বাংলাকে উপেক্ষা, অবহেলা করা হলে প্রতিবাদ জানাব।’’ এর পরেই বলতে থাকেন, ‘‘কেউ কেউ সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলছে আমাদের দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু দক্ষিণেশ্বর, তারাপীঠ, কঙ্কালীতলা, তারকেশ্বরের পাশাপাশি নাখোদা মসজিদ, পাথরচাপুড়ির উন্নয়ন কখনওই তা প্রমাণ করে না। এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মানুষ এ সব অপপ্রচার চালাচ্ছে।’’ এ সব বেশি দিন চলবে না বলেই তাঁর বিশ্বাস।
সাংসদ হয়ে কতটা খুশি? প্রশ্নটা শুনে আর কান্না চাপতে পারলেন না মালাদেবী। বললেন, ‘‘জানেন, ভোটে জেতার খবরটা ওকে জানাতে পারিনি। আমার ছোট বোন টুটুল। মাত্র কয়েক দিনের অসুস্থতায় কোমায় চলে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভোটের ফল যখন বেরোচ্ছে, তখন বোন ভেন্টিলেশনে। শনিবার মারা যায়। ভোটে দাঁড়ানোর পরে বলেছিল, দিদি তুই জিতবি।’’ কয়েক মিনিট একদৃষ্টিতে বোনের ছবির দিকে তাকিয়ে কেঁদে গেলেন। তার পরে বললেন, ‘‘একটাই আফশোস, ভোটে জেতার খবরটা টুটুল জানতে পারল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy