Advertisement
E-Paper

‘ছেলেকে মেরে আত্মঘাতী’ শিক্ষক বাবা

পুলিশের ধারণা, ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন গিয়াসউদ্দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৭
মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

স্বামী আর ছেলেকে রেখে সকালে স্কুলে গিয়েছিলেন কাশ্মীরা খাতুন। তাঁর মতো স্বামী মহম্মদ গিয়াসউদ্দিনও একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। বুধবার তাঁর স্কুলে পিকনিক ছিল। ওই দম্পতির সাত বছরের ছেলে আমনেরও বাবার সঙ্গে স্কুলের পিকনিকে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দু’জনকেই মৃত অবস্থায় পেলেন কাশ্মীরা। বারাসত বনমালীপুরের ভাড়া বাড়ির একটি ঘরে মেলে গিয়াসউদ্দিনের (৪২) ঝুলন্ত দেহ। অন্য ঘরে পড়ে ছিল আমনের দেহ।

পুলিশের ধারণা, ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন গিয়াসউদ্দিন। ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি তিনি। মানসিক চাপেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে লিখেছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ আপাতত এটুকুই জানতে পেরেছে।

সপ্তাহখানেক আগে শিক্ষকতার নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন কাশ্মীরা। এই ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি। সম্পত্তি নিয়ে গোলমালের জেরেই গিয়াসউদ্দিন আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন কাশ্মীরা। যদিও পুলিশ এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছচ্ছে না। বারাসত থানার পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সব দিকই খোলা রয়েছে। দেহ দু’টির ময়না-তদন্ত হলে খুনের কারণ পরিষ্কার হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গিয়াসউদ্দিন শাসন থানার গোলাবাড়ির বহিরার বাসিন্দা। তিনি আমডাঙা মাদ্রাসার শিক্ষক। বারাসতের বনমালীপুর মুসলিম পাড়ায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা। স্ত্রী কাশ্মীরা সপ্তাহখানেক আগে হাবড়ার একটি স্কুলে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। নতুন চাকরি বলে তাঁকে তাড়াতাড়ি বেরোতে হত।

কাশ্মীরা জানান, এ দিন সকাল আটটা নাগাদ তিনি স্কুলের জন্য বেরিয়ে যান। পরিচারিকাকে সব কাজ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। গিয়াসউদ্দিনের স্কুলে পিকনিক ছিল বলে তাঁর সঙ্গেই যাওয়ার কথা ছিল আমনের। গিয়াসউদ্দিন অন্তত তেমনই জানিয়েছিলেন। কাশ্মীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দুপুর একটা নাগাদ স্বামীকে ফোন করে তিনি জানতে পারেন, গিয়াসউদ্দিন স্কুলেই যাননি।

কেন জাননি, জানতে চাওয়ায় গিয়াসউদ্দিন তাঁকে জানান, শরীর ভাল নেই বলে তিনি যেতে পারেননি। কাশ্মীরা তখন আমনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান, সে বাইরে খেলতে গিয়েছে। কেন দুপুরে তাঁকে বাইরে খেলতে পাঠিয়েছেন? কাশ্মীরা এ কথা জানতে চাইলেও গিয়াসউদ্দিন তাঁকে সদুত্তর দিতে পারেননি। সন্ধ্যা ছ’টার পরে বাড়ি ফেরেন কাশ্মীরা। পুলিশকে তিনি জানান, বাড়ি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল না। দরজা ভেজানো ছিল। ভিতরে আলো জ্বলছিল। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই থমকে যান তিনি। দেখেন, ঘরের সিলিং থেকে ঝুলছে গিয়াসউদ্দিনের দেহ। ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে ভিতরের ঘরে গিয়ে দেখেন, সেখানে পড়ে মৃত আমন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশ্মীরার কান্না শুনে পড়শিরা ছুটে এসে ঘটনার কথা জানতে পারেন। খবর দেওয়া হয় বারাসত থানায়। পুলিশ এসে দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে, আমনের দেহটি শক্ত হয়ে গিয়েছিল। তাদের ধারণা, আমনের অনেক পরে গিয়াসউদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ মৃতদের আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করছে।

Murder Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy