Advertisement
E-Paper

মাছ বাজারে খুন করে দেহ ফ্রিজে, ধৃত এক

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ছোটন ও সুরেন্দ্রর মধ্যে গ্রামের সম্পত্তি নিয়ে পুরনো বিবাদ ছিল। অভিযোগ, সেই আক্রোশ থেকেই আরও কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে ছোটনকে খুন করে সুরেন্দ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৫৮
ঘটনার পরে মাছের বাজারে ভিড়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার পরে মাছের বাজারে ভিড়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

খুন করার পরে মৃতদেহটি প্লাস্টিকে মুড়ে ফ্রিজের ভিতরে রেখে দিয়েছিল খুনি। পুলিশ সেই খবর জানতে পেরে ফ্রিজ খুলতেই বেরিয়ে এল নিহত যুবকের দেহ। তাঁর মাথায় ছিল গভীর ক্ষত। যেখান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়েছিল ফ্রিজের মধ্যে।

সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার বঙ্কিম সেতু লাগোয়া হাওড়া মাছ বাজারের একটি দোকানে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম ছোটন রাই (৩৫)। বাড়ি বিহারে। তিনি মাছ বাজারের ৩১ নম্বর দোকানে শ্রমিকের কাজ করতেন। খুনের অভিযোগে পুলিশ ওই দোকানেরই আর এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম সুরেন্দ্র রাই। তার ও ছোটনের বাড়ি বিহারের একই গ্রামে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ছোটন ও সুরেন্দ্রর মধ্যে গ্রামের সম্পত্তি নিয়ে পুরনো বিবাদ ছিল। অভিযোগ, সেই আক্রোশ থেকেই আরও কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে ছোটনকে খুন করে সুরেন্দ্র। খুনের পরে সঙ্গীদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে দেহটি মাছ রাখার বড় ফ্রিজে রেখে দেয় সে। ঠিক করে, সময় ও সুযোগ বুঝে দেহটি কোথাও ফেলে আসবে। পুলিশ জানায়, প্রথমে বিষয়টি কাউকে না জানালেও অপরাধবোধে আতঙ্কিত সুরেন্দ্র ঘটনাটি এক সহকর্মীকে বলে ফেলে। এ ব্যাপারে কাউকে কিছু না বলার আশ্বাস দিলেও নিজ‌েকে বাঁচাতে ওই কর্মী দোকানের মালিক সতীন্দ্র সিংহকে ঘটনাটি জানান। দোকানের মালিক বিষয়টি সোজা গিয়ে জানান গোলাবাড়ি থানায়। এর পরে এ দিন সকালেই মাছ বাজারে হানা দিয়ে পুলিশ ফ্রিজ থেকে ছোটনের দেহ উদ্ধার করে। তার পরে সুরেন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়। ফ্রিজটি বাজেয়াপ্ত করে পাঠানো হয় ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য।

হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) ওয়াই রঘুবংশী জানান, অভিযুক্ত যুবককে সোমবার সকালে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেলে সে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয়। পুলিশের দাবি, জেরায় সুরেন্দ্র জানিয়েছে, তারা কয়েক জন মিলে ছোটনকে বেধড়ক মারধর করায় সে মারা যায়। এর পরে মৃতদেহ গায়েব করতে সেটি ফ্রিজের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ডিসি (উত্তর) বলেন, ‘‘ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য ফ্রিজটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি সঙ্গীদের খোঁজ চলছে।’’

মাছের আড়তের যে দোকানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেটির মালিক সতীন্দ্র সিংহ জানান, সুরেন্দ্র দু’-তিন বছর আগে কাজে যোগ দিয়েছিল। মৃত ছোটন তারও আগে থেকে ছিলেন। গ্রামের সম্পত্তি নিয়ে যে দু’জনের গোলমাল ছিল, তা তিনি জানতেন না বলেই দাবি সতীন্দ্রর। তিনি বলেন, ‘‘গত শনিবার ফ্রিজ পরিষ্কার করা হয়েছিল। তাই ফাঁকা ছিল। মনে হচ্ছে, ওই দিনের পরেই কোনও এক সময়ে খুন করে ফিজের মধ্যে ছোটনের দেহ পুরে দেয় ওরা।’’

ঠিক কবে ছোটনকে খুন করা হয়, তা পরিষ্কার করে জানাতে চায়নি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহের ময়না-তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে। তবে ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ওই যুবককে মাথায় ভারী কিছু দিয়ে বারবার আঘাত করে খুন করার পরে মাছ গাঁথার হুক দেহে ঢুকিয়ে ফ্রিজের কাছে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই আঘাতের চিহ্নও মিলেছে।

Crime Murder Howrah Fish Market Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy