Advertisement
২১ মে ২০২৪

আয়কর কর্মী পরিচয় দিয়ে ‘অপহরণ’, লুঠ

ব্যাগ ভর্তি সোনা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন একটি গয়না তৈরির কারখানার এক কর্মী। হঠাৎই তাঁর সামনে এসে দাঁড়ালেন দুই ব্যক্তি। নিজেদের আয়কর দফতরের কর্মী পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলেন ব্যাগে কী আছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পোস্তা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

ব্যাগ ভর্তি সোনা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন একটি গয়না তৈরির কারখানার এক কর্মী। হঠাৎই তাঁর সামনে এসে দাঁড়ালেন দুই ব্যক্তি। নিজেদের আয়কর দফতরের কর্মী পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলেন ব্যাগে কী আছে। সোনা আছে জানার পরেই তাঁরা ওই কর্মীকে একটি গাড়িতে উঠতে বললেন। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই দুই ব্যক্তি তাঁকে ঠেলে তুলে দিল একটি গাড়িতে। দ্রুত গতিতে ছুটল গাড়ি। মাঝপথে ওই কর্মীকে অচৈতন্য করে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় ওই ব্যক্তিরা। জ্ঞান ফেরার পরে ওই কর্মী দেখেন, তিনি পড়ে আছেন মাঝরাস্তায়। ব্যাগ ভর্তি গয়না উধাও। খোঁজ নেই আয়কর দফতরের কর্মী পরিচয় দেওয়া ওই দু’টি লোকেরও।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে পোস্তা থানার রবীন্দ্র সরণিতে। তবে ওই কারিগরের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হলেও রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তদন্তকারীদের অবশ্য দাবি, অভিযোগকারীর বয়ানে প্রচুর অসঙ্গতি আছে। সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ওই কারিগরের সঙ্গীদেরও।

কী অভিযোগ করা হয়েছিল? পুলিশ জানায়, অভিযোগকারী পরিমল দে পোস্তা এলাকার একটি সোনার কারখানার কারিগর। গয়না তৈরি করে ওই এলাকারই একটি বড় সোনার দোকানে পৌঁছে দেওয়া তাঁর কাজ। পুলিশের কাছে পরিমল অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার তিনি প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার সোনা এবং হিরের গয়না নিয়ে কারখানায় ফিরছিলেন। মাঝরাস্তায় দুই ব্যক্তি তাঁর পথ আটকায়। এক জনের গায়ের রং ছিল কালো। পরিমল জানিয়েছেন, দু’জনে আয়কর দফতরের কর্মী পরিচয় দিয়ে জানতে চায়, ব্যাগে কী আছে। পরিমলবাবু গয়না আছে বলায় ওই দু’জন তাঁকে গাড়িতে উঠতে বলে।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, প্রথমে পরিমল বুঝতে পারছিলেন না কোন গাড়িতে তাঁকে উঠতে বলা হচ্ছে। তাই তিনি রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। অভিযোগ, হঠাৎই একটি গাড়ি সামনে এসে দাঁড়ালে তাঁকে জোর করে গাড়িতে তুলে দেয় ওই দুই ব্যক্তি। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে পরিমল দাবি করেছেন, গাড়িতে তুলে প্রথমেই তাঁর মুখ ঢেকে দেয় দুষ্কৃতীরা। পরে তাঁকে জল খেতে বাধ্য করে। পরিমলের অভিযোগ, জল খাওয়ার পরেই তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফিরলে দেখেন, হাওড়ার সলপের কাছে একটি সেতুর পাশে পড়ে আছেন। কিন্তু গয়না ভর্তি ব্যাগ বা ওই দুই ব্যক্তি, কাউকেই তিনি দেখতে পাননি। পরিমল পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, এর পরে তিনি দোকান মালিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন।

প্রাথমিক তদন্তে লালবাজারের গোয়েন্দারা দাবি করেছেন, পরিমলের কথায় অসঙ্গতি রয়েছে। কারণ হিসেবে তাঁরা জানিয়েছেন, সলপের কাছে যেখানে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ফেলে গিয়েছে বলে পরিমল অভিযোগ করেছেন, রবিবার রাত পর্যন্ত তেমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। এমনকী, পরিমল কোন নম্বরে ফোন করে দোকান মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, সেটিও বলতে পারেননি। পাশাপাশি, রবীন্দ্র সরণির মতো জনবহুল এলাকায় দুপুরে ওই ঘটনা ঘটলেও কোনও প্রতক্ষ্যদর্শী মেলেনি বলে লালবাজার সূত্রের দাবি। এক পুলিশকর্তা জানান, শনিবারই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। রবিবারও পরিমলকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Income Tax Officer Disguise Loot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE