Advertisement
E-Paper

অর্ধেকের বেশি কমিটি নিতেই এল না অনুদান

কেউ পায় না, কেউ আবার পেয়েও নেয় না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দিতে গত বছর পুজোর আগে ১০ হাজার টাকার ১৭৮টি চেক তৈরি হয়েছিল। মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত পুজো কমিটিগুলিকে দেওয়ার কথা সেগুলি। বছর ঘুরতে চলল, এর মধ্যে ৯৩টি চেক এখনও পড়েই রয়েছে। কেউ নিতেই আসেনি।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫২

কেউ পায় না, কেউ আবার পেয়েও নেয় না।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দিতে গত বছর পুজোর আগে ১০ হাজার টাকার ১৭৮টি চেক তৈরি হয়েছিল। মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত পুজো কমিটিগুলিকে দেওয়ার কথা সেগুলি। বছর ঘুরতে চলল, এর মধ্যে ৯৩টি চেক এখনও পড়েই রয়েছে। কেউ নিতেই আসেনি।

পুরসভা সূত্রের খবর, সম্প্রতি ওই সব চেক বাতিল করতে হয়েছে পুর অর্থ দফতরকে। আজ, মঙ্গলবার ২০১৬ সালের জন্য শহরের পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে এখন পুরসভার অন্দরমহলে একটাই প্রশ্ন, কেন ওই সব চেক নিতে এলেন না কেউ? তা হলে কি ওই সব পুজো কমিটি খবরই পায়নি? নাকি কমিটিগুলির অস্তিত্বই নেই? মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘বাঁচা গিয়েছে। পুরসভার বেশ কিছু টাকা বেঁচে গেল!’’

মহিলা-পরিচালিত পুজো কমিটিগুলিকে উৎসাহিত করতে গত বছর তাদের আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরসভা সূত্রের খবর, তার আগেই ২০১৪ সালে গোটা চারেক পুজো আর্থিক অনুদান পেয়েছিল। ২০১৫-এ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে শহর জুড়ে মহিলা-পরিচালিত পুজো কমিটির লম্বা তালিকা জমা পড়ে পুরসভায়। পুরসভার এক অফিসার জানান, গত বছর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ওই অনুদানের নির্দেশ দেন পুর প্রশাসনকে। এর পরেই পুলিশের তরফে পুজো কমিটি খোঁজার হিড়িক পড়ে যায়। তাতে সঙ্গ দেন বিভিন্ন পুর এলাকার বরো চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে সাংসদ, বিধায়ক ও মন্ত্রীরাও। এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘এমনও হয়েছে যে, পুজো কমিটিতে একাধিক মহিলা আছেন, সেই সংস্থারও নাম পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর পুলিশও সে সব যাচাই করে দেখেনি।’’ জন-প্রতিনিধিদের পাঠানো বিভিন্ন সংস্থার নামও ঢুকে পড়েছে পুলিশের ওই তালিকায়। শেষমেশ ১৭৮টি পুজো কমিটির নামের তালিকা জমা দেওয়া হয় পুর প্রশাসনের কাছে। চেক নিতে আসে অর্ধেকেরও কম, মাত্র ৮৫টি পুজো কমিটি।

পুরসভার এক আমলা জানান, মহিলা পুজো সংগঠনগুলির নামের তালিকা পুলিশই দিয়েছে। কারণ, পুজোর অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা ছিল পুলিশেরই। সেই ভরসাতেই ১৭৮টি কমিটির জন্য চেক তৈরি করা হয়েছিল ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে। মোট পরিমাণ ১৭ লক্ষ ৮০ হাজার। যা দেওয়ার ব্যবস্থা হয় পুর ভাণ্ডার থেকেই। পুর নথি অনুসারে, একটি কমিটির ক্লাবের নাম ‘মহিলা মজলিশ’। গত বছর ১২ অক্টোবর ওই কমিটির নামে ১০ হাজার টাকার চেক কাটা হয়েছিল। চেকের নম্বর ১২১৪৫১৮৪। আর একটি সংগঠনের নাম ‘যুব সঙ্ঘ’। ১৬ অক্টোবর সেই কমিটির নামে কাটা চেকের নম্বর ১২১৪৫৩১৩। চেক না তোলার তালিকায় রয়েছে ‘নবজাগরণ’, ‘অগ্রদূত ক্লাব’, ‘বড়িশা মিত্র সঙ্ঘ’, ‘প্রশান্ত দিশা’, ‘সমাজসেবী সঙ্ঘ’, ‘বন্ধুদল ক্লাব’-সহ আরও অনেক।

নাম তালিকায় থাকলেও কেন টাকা নিতে এলেন না সংগঠকেরা?

পুরসভার এক অফিসার বলেন, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে অনেক। আদৌ ওই নামে কোনও কমিটি আছে কি না, তা নিয়েই সংশয় রয়েছে। হয়তো একটা নাম দিয়েছে, কিন্তু কমিটির নামে হয়তো কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টিই নেই। তা ছাড়া, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও যে সে সব কমিটি মহিলা পরিচালিত, তা-ই বা কে জানে! হয়তো টাকা পাওয়ার জন্য, কিছু যাচাই না করেই নাম পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, চেক নিতে এসে অযথা কোনও অপ্রিয় পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে, এই ভয়েই হয়তো অনেক কমিটি আর আসার সাহস করেনি। চেকের মেয়াদ থাকে তিন মাস। গত জানুয়ারিতেই তার সমসয়সীমা পার হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও চেকগুলি রাখা ছিল। কেউ যদি আসে, তা হলে ফের তারিখ এগিয়ে ইস্যু করা হবে। কিন্তু অগস্ট মাস পর্যন্ত কেউ না আসায় পুরসভার অর্থ দফতর সেই চেক বাতিল করে দেয়।

আজ, মঙ্গলবার পুজো কমিটির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে বিষয়টি এলে কী হবে, চিন্তিত সব পক্ষই।

durga puja government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy