বরাহনগরের সেই বাড়িতে পুলিশ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
নিজের শিশুকন্যাকে নলি কেটে খুন করে বরাহনগরের সোমা ভৌমিক আত্মঘাতী হয়েছেন কি না, তার উত্তর ২৪ ঘণ্টা পরেও মিলল না। সোমা নিজে এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে, কেন তিনি এমন করেছেন, সে ব্যাপারেও অন্ধকারে পুলিশ।
সোমার স্বামী শুভজিৎ (সুজন) ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদের পরে বুধবার ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও তাঁকে এলাকা ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে সোমার মেয়ে অদিতির নলি কাটা হয়েছিল, সেটি এখনও মেলেনি। ব্যারাকপুরের ডিসি (জোন ২) আনন্দ রায় বলেন, ‘‘সোমার স্বামীর ভূমিকা সন্দেহজনক নয় বলেই মনে হয়েছে। স্ত্রী-মেয়েকে হারিয়ে তাঁর মানসিক অবস্থাও ভাল নয়।’’
এই মুহূর্তে পুলিশ ময়না-তদন্তের রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে। তবে বরাহনগরের আর এন চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, কী এমন ঘটল যে মেয়েকে মেরে আত্মঘাতী হতে হল সোমাকে? কারণ, সোমা-সুজনের গোলমাল প্রায়ই ঘটত। মঙ্গলবার বড় গোলমাল হলে নিশ্চয় সুজন অফিসে যেতেন না। তদন্তকারীরা জানান, সোমার মানসিক সমস্যা ছিল বলে সুজন জানিয়েছেন। আগেও তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। ডিসি বলছেন, ‘‘এই তথ্যের কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। মানসিক সমস্যা থাকলে কোথায় তাঁর চিকিৎসা হচ্ছিল, কী চিকিৎসা হচ্ছিল, সে সব খতিয়ে দেখতে হবে।’’
মঙ্গলবার অফিস থেকে সোমাকে ফোনে না পেয়ে বিকেলে সুজন বাড়ি ফেরেন। সাড়া না পেয়ে তালা ভেঙে ঢোকেন। পড়শিরা জানান, স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ এবং নলি কাটা অবস্থায় মেয়েকে দেখে হতবাক হলেও তাকে নিয়ে হাসপাতালে যান সুজন। সেখানে মেয়েকে মৃত ঘোষণা করা হলে তিনি বাড়ি ফেরেন। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে সেই তথ্য যাচাই করেছে।
এরই মধ্যে প্রতিবেশীরাই খবর দেন পুলিশে। হাসপাতাল থেকে ফিরে প্রতিবেশীদের ডেকে সোমার দেহ নামান সুজন। প্রশ্ন উঠছে, কেন পুলিশ ডাকতে দেরি করলেন সুজন? মেয়ের নলি কেটেই কেন খুন করতে গেলেন সোমা? তদন্তকারীরা বলছেন, সাধারণত প্রতিহিংসা থাকলে এ ভাবে খুন করা হয়। একরত্তি মেয়েকে খুন করতে এই রাস্তা কেন নিতে হল? খুনিরা ব্যবহৃত অস্ত্র লুকিয়ে ফেলে। সোমা যদি আত্মঘাতীই হবেন, তবে তাঁকে অস্ত্র লুকোতে হল কেন? আদৌ কি তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন?
তদন্তকারীদের মতে, ময়না-তদন্তের রিপোর্টের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করছে। সোমা-অদিতির মৃত্যুর সময় জানা গেলে রহস্যের জট ছাড়ানো সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy