প্রতীকী ছবি।
দুর্যোগের আশঙ্কার মধ্যেও দীপাবলির রাতে বন্ধ হল না উৎসবের নামে রাস্তায় নেমে মত্ত চালকদের দাপাদাপি। সারল না উৎসবের রাতে বিধি ভাঙার পুরনো রোগও। বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম থাকলেও ট্র্যাফিক-বিধি ভাঙা তাতে বন্ধ হয়নি। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তাদের একাংশ যদিও পরিসংখ্যান দেখিয়ে দাবি করছেন, ‘‘গত কয়েক দিনের মধ্যে সোমবার রাতেই মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে সব থেকে কম মামলা দায়ের হয়েছে।’’
সোমবার রাতে বিধিভঙ্গের সংখ্যা খানিকটা কম হলেও গত চার দিনে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে বিধি ভাঙার হিসাব দেখলে চোখ কপালে উঠবে! কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চার দিনে শহরের রাস্তায় শুধুমাত্র মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগেই মামলা দায়ের হয়েছে সাড়ে তিনশোর বেশি। এর মধ্যে সোমবার, কালীপুজোর রাতে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে ৭৬টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে দায়ের হয়েছিল ১২৮টি মামলা।
এর পাশাপাশি, সোমবার দিনভর ট্র্যাফিক-বিধি ভাঙার অভিযোগে দু’চাকার যানের বিরুদ্ধে ৫১৯টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে বিনা হেলমেটে গাড়ি চালানোর দায়ে মামলা হয়েছে ৯৪টি। সোমবার বিধি ভাঙার সংখ্যা কম থাকার কারণ, রাস্তায় অন্যান্য দিনের তুলনায় গাড়িও ছিল কম। সন্ধ্যার পরে বৃষ্টির দাপটে কার্যত ফাঁকা হয়ে যায় রাস্তা।
গাড়ির সংখ্যা কম থাকলেও উৎসবের নামে রাস্তায় বেরিয়ে বিধি ভাঙার প্রবণতা তাতে কমেনি। এই সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। এমনকি, বৃষ্টির মধ্যেও বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগ উঠেছে দেদার। কোথাও পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে ছোটানো হয়েছে বাইক। কোথাও বা মত্ত অবস্থায় বেসামাল হাতে চালানো হয়েছে গাড়ি। আবার বৃষ্টির কারণে পুলিশি নজরদারি কিছুটা আলগা হতেই সেই সুযোগ নিয়েছেন অনেকে। ই এম বাইপাস, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, উল্টোডাঙা-সহ শহরের একাধিক এলাকায় ফাঁকা রাস্তা পেয়েই গতির তুফান তোলার অভিযোগ উঠেছে অনেকের বিরুদ্ধে। চিংড়িঘাটা মোড়ে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে যে ধরপাকড় করব, বৃষ্টিতে তা সম্ভব হচ্ছিল না। ছাতা মাথায় যতটা সম্ভব করা হয়েছে।’’
উৎসবের নামে রাস্তায় নেমে বিধি ভাঙার এই রোগ অবশ্য নতুন নয়। প্রতিটি উৎসবেই বিধি ভাঙার এমন চিত্র মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের সচেতন নাগরিকদের একাংশ। কসবার বাসিন্দা অরুণাংশু পাত্র বললেন, ‘‘উৎসব মানেই পথ-বিধি ভাঙার লাইসেন্স পেয়ে যাওয়া, এটা তো হতে পারে না। এই প্রবণতা বন্ধ করতে পুলিশকে কঠোর মনোভাব নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।’’ যদিও কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দুর্যোগের মধ্যেও রাস্তায় পুলিশ ছিল। ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিশেষ পুলিশি নজরদারিরও। একাধিক কঠোর পদক্ষেপও করা হয়েছে রাতভর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy