Advertisement
E-Paper

গঙ্গার জলে আগুন নেভানোর মরিয়া চেষ্টা চলছে এখনও

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ গঙ্গার ধারে মল্লিকঘাট ফুলবাজার সংলগ্ন আর্মেনিয়ান ঘাট এলাকায় ওই বিধ্বংসী আগুন লাগে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৭
লেলিহান: জ্বলছে আর্মেনিয়ান ঘাট এলাকার গুদাম। মঙ্গলবার রাতে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

লেলিহান: জ্বলছে আর্মেনিয়ান ঘাট এলাকার গুদাম। মঙ্গলবার রাতে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

আগুন প্রথমে লাগে রঙের একটি গুদামে। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে পাশের আর একটি গুদামে, যেখানে লঞ্চের জ্বালানি তেল মজুত ছিল। কিছু ক্ষণের মধ্যেই লেলিহান শিখা আর লালচে ধোঁয়ায় ভরে যায় আকাশ। খবর পেয়েই ছুটতে থাকে দমকলের একের পর এক ইঞ্জিন। পৌঁছে যান কলকাতার মেয়র থেকে পুলিশ কমিশনার-সহ প্রশাসনের বড় কর্তারা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ গঙ্গার ধারে মল্লিকঘাট ফুলবাজার সংলগ্ন আর্মেনিয়ান ঘাট এলাকায় ওই বিধ্বংসী আগুন লাগে। সংলগ্ন স্ট্র্যান্ড রোডে যানজট হয়। কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা।

গুদামের অতিদাহ্য বস্তুর সঙ্গে গঙ্গার হাওয়া যুক্ত হয়ে বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। পরপর বিস্ফোরণও হতে থাকে গুদামগুলিতে। দমকলের ২৪টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ চালাতে থাকে।

পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর বন্দর থানা এলাকার ওই ঘাট থেকে লঞ্চ চলাচল করে। পোর্ট ট্রাস্টের এলাকায় ‘হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি লিমিটেড’-এর গুদামেই রাখা ছিল লঞ্চের জ্বালানি তেল। তবে, ঘটনাস্থলের কাছে ঘনবসতি না থাকায় প্রাণহানির মতো অঘটন এড়ানো গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গুদামে সে সময়ে কোনও কর্মী ছিলেন না।

দমকলকর্মীরা জানান, এক দিক থেকে জল দেওয়া সত্ত্বেও আগুন না নেভায় তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, জ্বলন্ত গুদামের দু’পাশ দিয়েই জল দেওয়া হবে। কিন্তু চক্ররেলের লাইন থাকায় গঙ্গার দিক থেকে জল দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। কারণ, সেখানে দমকলের গাড়ি পৌঁছতে পারেনি। পরে বিশেষ পাম্প লাগিয়ে গঙ্গা থেকে জল তুলে আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। আগুনের তীব্রতা খুব বেশি হওয়ায় প্রথমে ঘটনাস্থলের ধারেকাছে যেতেই পারছিলেন না দমকলকর্মীরা। কিছুটা দূর থেকেই কাজ চালাতে হয় তাঁদের। যার জেরে আগুন নিয়ন্ত্রণ আরও কঠিন হয়ে ওঠে।

এক বন্দরকর্তা জানান, বন্দরের এক নিরাপত্তারক্ষী গুদামের আগুন দেখে দমকলে খবর দেন। বন্দরের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীকেও জানানো হয়। দমকলের কাজ চলাকালীন বন্দরের অধিকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেয়র তথা দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। শোভনবাবুর কথায়, ‘‘পোর্ট ট্রাস্ট রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ঠিক মতো করলে এই অবস্থা হত না। এখানে জনবসতি থাকলে তো বড় অঘটন ঘটে যেত। তার দায় কে নিত? ঘটনার ফরেন্সিক তদন্ত করাব। তার পরে এফআইআর করা হবে।’’ হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির সম্পাদক অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘লঞ্চের সমস্ত জ্বালানি ওই গুদামে ছিল। অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। এই লোকসান কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে, জানি না।’’

অগ্নিকাণ্ডের জেরে স্ট্র্যান্ড রোডে যানজট তৈরি হয়। বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চ চলাচলও। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। হাওড়ায় ট্রেন ধরতে যাওয়া যাত্রীরাও সমস্যায় পড়েন। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশি রাতের দিকে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

Fire Armenian ghat আগুন আর্মেনিয়ান ঘাট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy