Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪

রোগীদের যন্ত্রণা কমেনি, বসল নয়া অগ্নিনির্বাপক

বুধবারের সেই ভোগান্তি রোগীদের সঙ্গী ছিল বৃহস্পতিবারও। বুধবার রাত থেকে এমসিএইচ ভবনের দোতলা এবং তিনতলার মেডিসিন, কার্ডিওলজি এবং হেমাটোলজি বিভাগে একে একে রোগীদের ফিরিয়ে আনা হয়।

আগুন লাগার সময় বের করে আনা হচ্ছে এক রোগীকে। —ফাইল চিত্র

আগুন লাগার সময় বের করে আনা হচ্ছে এক রোগীকে। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

২৪ ঘণ্টা পরেও রোগী-ভোগান্তি কাটল না কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। অগ্নিনির্বাপণের জন্য একতলার যে দু’টি ঘরের মেঝেতে গর্ত করা হয়েছিল, সেগুলি বাদ দিয়ে রোগী পরিষেবা চালু হল। তবু পুরোপুরি ছন্দে ফেরেনি হাসপাতাল। পর্যাপ্ত ওষুধের অভাবও কিছুটা চোখে পড়েছে। এর মধ্যেই হাসপাতালের সব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নতুন করে বসাল পূর্ত দফতর।

বুধবার সকালে হাসপাতালের মূল ওষুধের ভাণ্ডারে আগুন লাগে। কোলে করে, কাপড়ে মুড়ে একের পর এক রোগীকে এমসিএইচ ভবন থেকে নীচে নামিয়ে আনা হয়। ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েক জন।

বুধবারের সেই ভোগান্তি রোগীদের সঙ্গী ছিল বৃহস্পতিবারও। বুধবার রাত থেকে এমসিএইচ ভবনের দোতলা এবং তিনতলার মেডিসিন, কার্ডিওলজি এবং হেমাটোলজি বিভাগে একে একে রোগীদের ফিরিয়ে আনা হয়। পূর্ত দফতর ছাড়পত্র দেওয়ার পরে দুপুরে একতলার বাকি ঘরগুলিতে রোগীদের নিয়ে যাওয়া হলেও দু’টি ঘর ব্যবহার করা হচ্ছে না। এক ভবন থেকে অন্য ভবনে নিয়ে যাওয়ার মুখে এ দিনও সমস্যায় পড়েন রোগীরা। ট্রলিতে নিয়ে যাওয়ার মুখে মুর্শিদাবাদের মহম্মদ আফতাবুদ্দিনকে আর্তনাদ করতে দেখা যায়। চার দিন আগেই তাঁর কিডনিতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ভাই আব্বাসুদ্দিন বললেন, ‘‘কাল আগুনের ভয়ে সদ্য অস্ত্রোপচার হওয়া দাদাকে কোনও রকমে নামিয়ে এনেছি। আজ ফের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এই টানাটানিতেই তো মরে যাওয়ার অবস্থা!’’ এমসিএইচ ব্লকে সিঁড়িতে ওঠার মুখেই আবার হাতজোড় করে কাঁদতে শুরু করলেন দমদমের পার্বতী হাজরা। গত সপ্তাহেই পিঠে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ফের অস্ত্রোপচার হবে আগামী সপ্তাহে। বললেন, ‘‘যেখানে ছিলাম ওখানেই তো ভাল। আর পারছি না। আমাকে ছেড়ে দিন।’’

চিকিৎসকেরা লিখে দিলেও ওষুধ না পেয়ে উদ‌্ভ্রান্তের মতো ছুটে বেড়াতে দেখা যায় কয়েক জন রোগীর আত্মীয়কে। হাসপাতালের তরফে বহির্বিভাগের তিনতলায় অবশ্য ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। সেখানে সকাল থেকে প্রবল লাইন। ইন্দ্রনীলবাবু বলেন, ‘‘কয়েক দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমরা যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে সব দিক ঠিক করার চেষ্টায় রয়েছি।’’ তারই অঙ্গ হিসেবে এ দিনই পূর্ত দফতরকে দিয়ে গোটা মেডিক্যাল কলেজে নতুন অগ্নিনির্বাপক বসানো হয়েছে। মেডিক্যাল পড়ুয়াদের দাবি মেনে তাঁদের হস্টেলেও চটজলদি বসেছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। এমসিএইচ ভবনের সব ক’টি তলায় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে।

তবে অগ্নিকাণ্ডের আগে অগ্নিবিধি নিয়ে কেন সচেতন হওয়া গেল না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সুপার শুধু বলছেন, ‘‘দমকলের কাছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দেখে যাওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। তার আগেই তো বিপদ ঘটে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Medical College Fire Patient Service
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE