Advertisement
E-Paper

ছাদ থেকে ‘ঝাঁপ’, মৃত্যু মেডিক্যাল পড়ুয়ার

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন শুভজিৎ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই অনুমান পুলিশের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ০০:৪৩
মর্মান্তিক: ছাদের এই জায়গা থেকেই শুভজিৎ ঝাঁপ দেন বলে অনুমান পুলিশের। বৃহস্পতিবার, সিআইটি রোডের সেই আবাসনে। নিজস্ব চিত্র

মর্মান্তিক: ছাদের এই জায়গা থেকেই শুভজিৎ ঝাঁপ দেন বলে অনুমান পুলিশের। বৃহস্পতিবার, সিআইটি রোডের সেই আবাসনে। নিজস্ব চিত্র

পাঁচতলা আবাসনের ছাদ থেকে পড়ে বুধবার রাতে মৃত্যু হল বছর তেইশের এক ডাক্তারি পড়ুয়ার। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের নাম শুভজিৎ মাজি।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন শুভজিৎ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই অনুমান পুলিশের। মৃতের পড়ার ঘরের বিছানা থেকে একটি খাতা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাতে লেখা, ‘তোমরা ভাল থেকো, আমি চললাম’।

এ দিন ওই ঘটনার পরে শুভজিতের ত্বক ও চোখ দান করার কথা জানান তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃতের ত্বক সংরক্ষণ করা গেলেও নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ায় চোখটি অবশ্য সংগ্রহ করা যায়নি।

পুলিশ জানায়, বছরখানেক ধরে বেলেঘাটার সিআইটি রোডের পি-৩৪ আবাসনের পাঁচতলায় একটি ফ্ল্যাটে দাদা-বৌদি ও মায়ের সঙ্গে থাকছিলেন শুভজিৎ। অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও তিনি ডাক্তারির ক্লাস করতে গিয়েছিলেন। পরের দিন, বৃহস্পতিবার ফার্মাকোলজির একটি পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় বাড়িতেই ছিলেন শুভজিৎ। রাত আটটা নাগাদ মা ও বৌদিকে বাজারে পাঠিয়ে দেন তিনি। কিন্তু নিজে যাননি। এর পরে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আবাসনের সামনের ফুটপাতে শুভজিৎকে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন।

পুলিশের অনুমান, পাঁচতলা আবাসনের ছাদে গিয়ে সেখান থেকেই নীচে ঝাঁপ দেন শুভজিৎ। জখম অবস্থায় ওই যুবককে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর দেওয়া হয় সল্টলেকের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত দাদা অভিজিৎকে। তাঁর কাছ থেকেই খবর পান শুভজিতের মা এবং বৌদি। খবর পেয়ে রাতেই বর্ধমান থেকে ছুটে আসেন বাবা সুধেন্দুবিকাশ মাজি।

রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ এনআরএসের আইসিসিইউ-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুভজিৎ মারা যান। দেহ পাঠানো হয় ময়না-তদন্তে। তাঁর শরীরের একাধিক হাড় ভেঙে গিয়েছিল। বুকের পাঁজরে গুরুতর আঘাত ছিল। বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করছিল না। প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে বছরখানেক এনআরএসের হস্টেলে ছিলেন শুভজিৎ। সেখানে নানা কারণে মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন তিনি। সে জন্য তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। দীর্ঘদিন ওষুধও খেতে হয়েছে তাঁকে। শারীরিক অসুস্থতা-সহ নানা কারণে ডাক্তারির পড়ায় এক বছর নষ্ট হয় তাঁর। সাম্প্রতিক সিমেস্টারের পরীক্ষাগুলিতেও আশানুরূপ ফল হয়নি।

তবে পরিবার জানিয়েছে, বরাবরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন শুভজিৎ। শুরুর দিকে মেডিক্যাল কলেজে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কিছু সমস্যা হচ্ছিল বলেও জানিয়েছেন বৌদি তৃষ্ণা মাজি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘তখন বাজারে গিয়েছিলাম। ফোনে ঘটনার কথা জানতে পারি। কেন এমন হল, বুঝতে পারছি না।’’ শুভজিতের মেসোমশাই জগদ্বন্ধু চৌধুরী বলেন, ‘‘পড়াশোনায় বরাবরই ভাল ছিল শুভজিৎ। এই মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন।’’

NRS Medical College Medical Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy