এই বাড়ি থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন শুভজিৎ।
আবাসনের পাঁচ তলার ছাদ থেকে পড়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের (এনআরএস) দ্বিতীয় বর্ষের এক পড়ুয়ার। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, পড়াশোনা নিয়ে হতাশা থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন মেধাবী ছাত্র শুভজিৎ মাজি (২৩)। যদিও ওই ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, কলেজে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে উঠেছিল ওই ছাত্র। মৃত ছাত্রের পরিবার তাঁর ত্বক চিকিৎসার গবেষণার জন্য দান করার কথা জানিয়েছেন এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে।
বুধবার রাত পৌনে ন’টা নাগাদ হঠাৎ উপর থেকে ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ পান সিআইটি রোডের একটি আবাসনের বাসিন্দারা। বাইরে বেরিয়ে এসে তাঁরা দেখেন, মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন চার তলার ফ্ল্যাটের বাসিন্দা শুভজিৎ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা শুভজিতের ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন তালাবন্ধ। খবর দেওয়া হয় শুভজিতের মা-দাদাকে।
শুভজিৎ ওই ফ্ল্যাটে মা এবং দাদা-বৌদির সঙ্গে থাকতেন। আবাসনের বাসিন্দারাই তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে যান এনআরএসে। সেখানে রাত ১১.৫৫ মিনিট নাগাদ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। খবর দেওয়া হয় বেলেঘাটা থানায়।
আরও পড়ুন, ইউটিউব দেখে ছক, পকেটমানির জন্য স্কুল-কলেজের ছাত্ররা শামিল বাইক চুরির গ্যাংয়ে!
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় শুভজিতের মা এবং বৌদি বাজারে গিয়েছিলেন। বাড়িতে একাই ছিলেন শুভজিৎ। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শুভজিৎ ছাদে চলে যান। সেখান থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশের অনুমান।
আরও পড়ুন, টাকা নিমেষে কাগজ, অযথাই জেল
শুভজিতের দাদা অভিজিৎ একটি নামী তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। গত ডিসেম্বর মাসে তাঁর বিয়ে হয়। অভিজিতের স্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেন, “বিয়ের পর এ বাড়িতে এসে আমি শুনেছি, প্রায় ছ’মাস ধরে অবসাদে ভুগছিল শুভজিৎ। কলেজে যেতে চাইত না। পড়াশোনাতেও অনীহা তৈরি হচ্ছিল।” তিনি অভিযোগ করেন, “পরিবারের বাকিদের কাছ থেকে শুনেছি প্রথম বর্ষে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সিনিয়র ছাত্রদের হাতে র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিল শুভজিৎ। সেই ঘটনার পর থেকেই কলেজ সম্পর্কে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল ওর মধ্যে। আমাদের ধারণা, ওই ঘটনা থেকেই অবসাদ।” পরিবারের দাবি, তাঁরা বিষয়টি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করেননি। ফলে আতঙ্কটা আরও বেশি করে ঢুকে গিয়েছিল শুভজিতের মনে। যদিও এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনও অভিযোগ আমার কাছে কখনও আসেনি।’’
(শহরের সেরা খবর, শহরের ব্রেকিং নিউজ জানতে এবং নিজেদের আপডেটেড রাখতে আমাদের কলকাতা বিভাগ পড়ুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy