Advertisement
০৮ মে ২০২৪

রক্তের সঙ্কট মোকাবিলায় আজ বৈঠক

কোথাও নেগেটিভ গ্রুপের কোনও রক্তই নেই! কোথাও আবার প্রয়োজনের তুলনায় জোগান কম। রক্তদান শিবির করা হলেও রক্তদাতার সংখ্যা আশানুরূপ নয়। এই পরিস্থিতিতে ভোট চলাকালীন রক্তের জোগান বাড়াতে রাজ্যের সব ক’টি ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আজ, বুধবার বৈঠক করবে স্বাস্থ্য ভবন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

কোথাও নেগেটিভ গ্রুপের কোনও রক্তই নেই! কোথাও আবার প্রয়োজনের তুলনায় জোগান কম। রক্তদান শিবির করা হলেও রক্তদাতার সংখ্যা আশানুরূপ নয়। এই পরিস্থিতিতে ভোট চলাকালীন রক্তের জোগান বাড়াতে রাজ্যের সব ক’টি ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আজ, বুধবার বৈঠক করবে স্বাস্থ্য ভবন।

গরমের মরসুমে রক্তের জোগানে ঘাটতি নতুন কিছু নয়। কিন্তু এ বছর লোকসভা ভোটের জন্য সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর। ভোট সংক্রান্ত ব্যস্ততার মধ্যে রক্তদান শিবির করার সময় নেই পাড়ার দাদাদের। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারি ও বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের রিকুইজিশন স্লিপ হাতে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছেন রোগীর পরিজনেরা। স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ভোট ও গরমের জোড়া ফলায় রক্তের আকাল যাতে না দেখা দেয়, তা নিশ্চিত করতে ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসারদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’

এই সঙ্কট যে কতখানি তীব্র, তা সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়াতেই স্পষ্ট। বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আমার হাসপাতালে কোনও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত নেই। শিবিরও পাচ্ছি না।’’ এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ভবনের ‘পরামর্শের’ অপেক্ষায় রয়েছেন বিধাননগর মহকুমা

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এসএসকেএম হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক, চিকিৎসক প্রতীক দে বলেন, ‘‘শিবির পেলেও তা আশানুরূপ নয়। রোগীর পরিজনেরা এখনও পর্যন্ত একেবারে রক্ত পাচ্ছেন না, এমন হয়নি। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে শিবিরের সংখ্যা বাড়াতে হবে।’’ সম্ভবত সেই কারণেই কাল, বৃহস্পতিবার রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, ওই শিবিরে হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মী মিলিয়ে প্রায় ৭০০ রক্তদাতার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

শিবির বাড়াতে ব্লাড ব্যাঙ্কের পুরনো নথি ঘাঁটছেন সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অধিকর্তা স্বপন সোরেন বলেন, ‘‘আগে যে সমস্ত অফিস বা অন্য কোনও সংস্থা রক্তদান শিবির করেছে, পুরনো নথি দেখে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সমস্যার কথা বুঝিয়ে শিবির করার অনুরোধ করছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেও আর্জি জানিয়েছি শিবির করার জন্য। যাঁরা রক্ত নিতে আসছেন, তাঁদেরও রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হচ্ছে।’’

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য মনে করছেন, তাঁদের প্রস্তুতি তুলনায় ভাল। তাই সমস্যা অতিক্রম করা যাবে। সেখানকার অধিকর্তা মলয় ঘোষের কথায়, ‘‘দু’ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। পরীক্ষার আগে রাত জেগে পড়াশোনা। আর একটা পরীক্ষার অনেক দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া। আমি দ্বিতীয় পদ্ধতিতে বিশ্বাসী।’’

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা মধুসূদন মণ্ডল বলেন, ‘‘সঙ্কট মেটাতে মানুষের উৎসাহী হয়ে এগিয়ে আসা উচিত।’’

উৎসাহ কেন প্রয়োজন, তা বোঝাতে গিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের প্রধান, শিক্ষক-চিকিৎসক প্রসূন ভট্টাচার্য জানান, ভোটের জন্য রক্তদান শিবির অনেক জায়গাতেই হচ্ছে না। ৫০ জন রক্তদাতার আসার কথা থাকলে হয়তো দেখা গেল, জনা ১২ এসেছেন। এমন নজিরও রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ হলেও রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ হ্রাস পাবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। প্রসূনবাবুর কথায়, ‘‘সুরাতের বন্ধুদের কাছে শুনলাম, ওখানে ভোটদানের পরে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। দারুণ ভাবনা। এ রাজ্যেও এ রকম কিছু করা গেলে আমরা সঙ্গে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Bank Health Medical
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE