ভবিষ্যতের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর পরিকাঠামো উন্নত করার উপরে বিশেষ ভাবে জোর দিচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ভবিষ্যতে এই শাখায় ট্রেনের ব্যবধান অন্তত তিন মিনিট বা তারও কমে নামিয়ে আনতে রেডিয়ো সঙ্কেত-নির্ভর ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করতে চান তাঁরা। তারই প্রাথমিক ধাপ হিসেবে মেট্রোয় ইস্পাতের থার্ড রেল বদলে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে দু’দফায় টালিগঞ্জ থেকে দমদম পর্যন্ত অংশের সুড়ঙ্গপথে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
এ বার সেই একই কাজ হবে টালিগঞ্জ থেকে নিউ গড়িয়া এবং দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত অংশে মেট্রোর উড়ালপথে, অর্থাৎ মাটির উপরের অংশে। ইতিমধ্যেই এই কাজের জন্য কলকাতা মেট্রোর তরফে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে আগামী ১০ ডিসেম্বর। পুরো কাজের আনুমানিক ব্যয় ধার্য হয়েছে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, কলকাতায় পরের দিকে সম্প্রসারিত বিভিন্ন মেট্রোপথে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল ব্যবহার করা হলেও চার দশকের পুরনো উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোপথে প্রথম থেকেই রয়েছে ইস্পাতের থার্ড রেল। উন্নত তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা, কম তাপ উৎপন্ন হওয়া-সহ বিভিন্ন কারণে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল অনেক বেশি কার্যকর। ২০১২ সাল থেকে দেশে নির্মীয়মাণ এবং অনুমোদিত বিভিন্ন মেট্রো প্রকল্পে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেলের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে রেল মন্ত্রক। সেই মতো কলকাতার অন্যান্য মেট্রোপথে তা ব্যবহার হলেও উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় পুরনো ব্যবস্থাই বজায় ছিল। এমনকি, পরে সম্প্রসারিত নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর পথেও ইস্পাতের থার্ড রেলই ব্যবহার করা হয়েছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় ইস্পাতের তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা ছ’ভাগের এক ভাগ। ফলে, ইস্পাতের থার্ড রেলযুক্ত পথে ওই লাইন অত্যধিক গরম হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি ছাড়াও ট্রেন চলার সময়ে আগুনের ফুলকি তৈরি হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া, ইস্পাতের থার্ড রেল অত্যধিক গরম হওয়ায় পরিবাহিত বিদ্যুতের পরিমাণও হ্রাস পায়। সব দিক বিবেচনা করেই তৃতীয় পর্যায়ে মেট্রোর উড়ালপথে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল বসানোর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)