উজ্জ্বল কাঞ্জিলাল
অমরনাথ দর্শন করে ফেরার পথে ছোট একটি দুর্ঘটনা। আর তার পরে রাতের অন্ধকারে নিজেদের বেস ক্যাম্প খুঁজে না-পেয়েই পুলিশের খাতায় ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছিলেন বালির বাসিন্দা উজ্জ্বল কাঞ্জিলাল। চার দিন নিখোঁজ থাকার পরে সোমবার রাতে আচমকাই তিনি ফিরে এলেন একাই।
সঙ্গে তো আরও পাঁচ জন ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন কী ভাবে?
মঙ্গলবার বাড়িতে বসে উজ্জ্বলবাবু জানান, ৯ জুলাই দুপুরে অমরনাথ দর্শন করে তাঁরা বালতাল বেস ক্যাম্পে ফিরছিলেন। আধ কিলোমিটার নেমে আসার পরে দলের তিন জন ঘোড়ায় চড়ে ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা দেন। অন্য দু’জন এবং তিনি হেঁটেই ফিরছিলেন। চলতে চলতে দুই সঙ্গীর থেকে তিনি কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিলেন বলে জানান উজ্বলবাবু। বললেন, ‘‘খাড়াই পথে সাবধানে পা ফেলে নীচে নামতে হয়। সাবধান হতে গিয়ে একটু পিছিয়ে পড়েছিলাম। তাতেই বিপত্তি। রাস্তায় বরফের আস্তরণ ভেঙে তৈরি গর্তে জলের মধ্যে আটকে গেল পা।’’
বরফের গর্ত থেকে ওঠার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন বছর ৫৮-র ওই পর্যটক। তিনি জানান, এগিয়ে যাওয়া সঙ্গীদের কয়েক বার ডাকলেও তাঁরা মানুষের ভিড়ে শুনতে না-পেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যান। কিছু পরে হাতে ধরা লাঠিতে ভর দিয়ে কোনও মতে উঠে দাঁড়ান উজ্জ্বলবাবু। মেডিক্যাল ক্যাম্পে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে ফের তিনি বাসতাল রওনা দেন। রাত ১২টা নাগাদ সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সাহায্যে পৌঁছে যান বালতালে।
কিন্তু অন্ধকারে হন্যে হয়ে খুঁজেও নিজেদের ক্যাম্পের হদিস পাননি উজ্জ্বলবাবু। শেষে অন্য একটি ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। তিনি বলেন, ‘‘জম্মু থেকে যে-দিন বালতালের ক্যাম্পে এসেছিলাম, তখনও রাত ছিল। আবার ভোরে যখন অমরনাথ যাত্রা করলাম, তখনও ছিল অন্ধকার। তাই অন্ধকারে ক্যাম্পটি ভাল করে দেখা হয়নি। সেই জন্যই ক্যাম্প খুঁজে পাচ্ছিলাম না।’’ উজ্জ্বলবাবু জানান, ১০ জুলাই ভোরে বৃষ্টি শুরু হয়। তারই মধ্যে খোঁজাখুঁজি করেও সঙ্গীদের পাননি। সেনাবাহিনীর কথাও ঠিকমতো বুঝতে পারেননি। ‘‘ক্যাম্পে ব্যাগপত্র সব ছিল। সেখানেই মোবাইলটি বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল। তাই কারও সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছিলাম না। কী করব, বুঝতে পারছিলাম না,’’ বললেন পর্যটক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy